ইয়াশিনের দেশের অবিশ্বাস্য জয়ের নায়ক আকিনফেভ

মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে রবিবার ইগরই রুশ জনতার নয়নের মণি। টাইব্রেকারে স্পেনের কোকে আর ইয়াগো আসপাসের শট বাঁচিয়ে বত্রিশ বছরের এই রুশ ফুটবলার মনে করালেন কিংবদন্তি ইয়াশিনকেই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৮ ০৪:১৬
Share:

নায়ক: পা দিয়ে শেষ শটটি বাঁচিয়ে দলকে জেতালেন আকিনফেভ। ছবি: এপি।

লেভ ইয়াশিনের দেশে বিশ্বকাপ। আর স্পেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার অবিশ্বাস্য জয়ের নায়ক গোলরক্ষক ইগর আকিনফেভ!

Advertisement

মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে রবিবার ইগরই রুশ জনতার নয়নের মণি। টাইব্রেকারে স্পেনের কোকে আর ইয়াগো আসপাসের শট বাঁচিয়ে বত্রিশ বছরের এই রুশ ফুটবলার মনে করালেন কিংবদন্তি ইয়াশিনকেই। তাঁর মতোই পেনাল্টি বাঁচানোয় অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়ে। এবং সামনে থেকে দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে।

ক্লাব ও দেশের প্রতি তাঁর বিশ্বস্ততার পুরস্কার হিসেবেই আকিনিফেভকে এ বার জাতীয় দলের অধিনায়ক নির্বাচিত করা হয়েছে। সেই ষোলো বছর বয়স থেকে তিনি খেলছেন সিএসকে মস্কোয়। এবং তাঁর নিজের বয়স যখন মাত্র কুড়ি বছর, তখনই মস্কোর ক্লাবটি রুশ ফুটবলে ত্রিমুকুট জিতে ফেলে!

Advertisement

আজ পর্যন্ত তিনি ক্লাব বদলাননি। বলা হয় তোত্তিও রিয়াল মাদ্রিদে যেতে পারতেন, কিন্তু ইগর কোনওদিন মস্কো ছেড়ে যাবেন না। এতটাই তাঁর দেশপ্রেম। ইউরোপের অন্য অনেক ক্লাবের মতো এমনকি তিনি ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের প্রস্তাবও ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।

স্বভাবতই রুশ ফুটবল কর্তাদের কাছে তিনি খুবই প্রিয়। সেই ২০০৪ সাল থেকে টানা চোদ্দো বছর তিনি জাতীয় দলের হয়ে একশোটির বেশি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন। এমনিতেই তাঁকে নিয়ে উচ্ছ্বাসটা বেশি রুশ ফুটবল মহলে। রবিবার স্পেনের বিরুদ্ধে যে ভাবে তিনি আসপাসের শেষ শটটি আটকেছেন তাতে ফুটবল পণ্ডিতেরা মুগ্ধ। ডান দিকে শরীর ছুঁড়ে দিয়েও আকিনফেভ লক্ষ্য করেন বল তাঁর পায়ের উপর দিয়ে চলে যাচ্ছে। এবং সেকেন্ডের ভগ্নাংশের ‘রিফ্লেক্স’ দিয়ে তিনি সেই শট তাঁর পা দিয়েই আটকে দেন। বুঝিয়ে দেন কেন তিনিই রাশিয়ার অধিনায়ক। কেন তাঁর ফুটবল জীবনে সিএসকে মস্কো ছ’বার করে রুশ লিগ আর রাশিয়ান কাপ জিতেছে। সঙ্গে একবার উয়েফা কাপও। স্বভাতই রবিবারের পর থেকে তিনি জাতীয় নায়ক।

এবং অকুণ্ঠ ভালবাসায় উড়তে উড়তে তাঁর আবেগাপ্লুত প্রতিক্রিয়া, ‘‘এই বিশ্বকাপে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি। শুধু আমার নিজের দেশের ভক্তদের জন্য নয়, অন্য দেশের ফুটবলপ্রেমীরাও বুঝতে পারছেন রুশরা সত্যিই ফুটবলটা খেলতে জানে। আর ফুটবলটা খেলতেও চায়।’’ ইগরের খেলা দেখে মুগ্ধ আর এক কিংবদন্তি গোলরক্ষক অলিভার কানও। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘অনেক বছর আগে আমিই কিন্তু বলেছিলাম, এই ছেলেটা ফুটবলজীবন শেষ করবে বিশ্বের এক নম্বর গোলরক্ষক হিসেবেই।’’

আবেগে ভেসেছেন মারিয়া শারাপোভাও। রুশ টেনিস সুন্দরী তাঁর মাতৃভাষায় টুইট করে লিখেছেন, ‘‘হুররে। দারুণ জিতেছ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন