প্রথম ম্যাচেই জয়ের পর মেক্সিকো দল।
মাঠে নেমে তিনি কোচিং করান না। কী ভাবে খেলতে হবে, সেই ছকও বানান না। অথচ মেক্সিকো ফুটবলের নাটকীয় উত্থানের নেপথ্যে তিনি, ইমানল ইবারোন্দ্রো।
ফুটবলারদের মানসিক ভাবে উদ্বুদ্ধ করতে ২০১৬ সালের ২ অক্টোবর ইমানলকে ‘মেন্টাল কোচ’ হিসেবে নিয়োগ করে মেক্সিকো ফুটবল ফেডারেশন। যদিও তিনি নিজেকে পরিচয় দিতে ভালবাসেন কোচিং দলের সদস্য হিসেবেই। সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে তাঁর প্রবল অনীহা। এক মুখ সাদা দাড়ি নিয়ে জাতীয় দলের প্রস্তুতি শিবিরের চর্তুদিকে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় তাঁকে। কড়া নজর রাখেন অনুশীলন ও সাংবাদিক বৈঠকেও।
ইমানল যখন দায়িত্ব নেন, তখন মেক্সিকো ফুটবল দলের অবস্থা ভয়াবহ। কয়েক মাস আগেই কোপা আমেরিকায় ৭-০ বিধ্বস্ত করেছে চিলি। ফুটবলাররা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। ইমানল দায়িত্ব নিয়ে কয়েক মাসের মধ্যেই বদলে দিলেন ছবিটা। বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ২-১ হারালেন হাভিয়ার হার্নান্দেজ (চিচারিতো)-রা। ১৯৭২ সালের পরে প্রথম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে হারাল মেক্সিকো। এ বার রাশিয়ায় বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে দুর্ধর্ষ জার্মানিকে হারিয়ে চমকে দিল মেক্সিকো।
রূপকথার উত্থানের রহস্য কী? ইমানল বলছেন, ‘‘শুরুর দিকে আমরা কেউ কাউকে চিনতাম না। আমি প্রথমে জোর দিই সবাইকে চিনতে। তার পরে আমার লক্ষ্য ছিল, প্রত্যেকের আস্থা অর্জন করা। সবার সঙ্গে আলাদা ভাবে কথা বললাম। ধীরে ধীরে ওদের আস্থা অর্জন করতে সফল হই।’’
ইমানলের মতে, ফুটবলাররা যতই মানসিক ভাবে শক্তিশালী হন, তা কখনওই মাঠের পারফরম্যান্সের বিকল্প হতে পারে না। তিনি বলেছেন, ‘‘প্রথম কাজ হচ্ছে, ভাল অনুশীলন করতে হবে। নিজেকে শক্তিশালী করে তুলতে হবে। ভাল করে খেতে হবে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম করতে হবে। সোজা কথায়, শারীরিক ভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ থাকতে হবে। তার পরেই ফুটবলারদের মানসিক ভাবে উদ্বুদ্ধ করার কাজ শুরু করতে হবে।’’ ইমানল নিজেও ফুটবলার ছিলেন। খেলতেন স্পেনের প্রথম ডিভিশনে।
জার্মানির বিরুদ্ধে দুরন্ত জয় দিয়ে বিশ্বকাপে অভিযান শুরু করার জন্য ইমানলকেই যাবতীয় কৃতিত্ব
দিচ্ছেন চিচারিতো। প্রাক্তন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড তারকা জানিয়েছেন, ইমানল ফুটবলারদের মানসিকতাই বদলে দিয়েছেন। তাই এ বার শেষ চারে ওঠার স্বপ্ন দেখছেন মেক্সিকোর ফুটবলাররা। জার্মানির বিরুদ্ধে জয়ের পরে ইমানল বলেছেন, ‘‘মেক্সিকোর ফুটবলাররা সবাই খুব পরিণত। প্রত্যেকেই জানে কী করতে হবে।’’ তিনি যোগ করেছেন, ‘‘প্রত্যেক দিন অনুশীলনে আমরা চেষ্টা করি নিজেদের উন্নতি করার।’’