প্রস্তুতি: ক্রোয়েশিয়া ম্যাচের আগে অনুশীলনে নাইজেরিয়া। ছবি:রয়টার্স
রাশিয়া বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে আর একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে শনিবার মুখোমুখি হচ্ছে ক্রোয়েশিয়া ও নাইজেরিয়া।
ক্রোয়েশিয়া অতীতের সেমিফাইনালিস্ট। নাইজেরিয়া আফ্রিকার বড় শক্তি। কুড়ি বছর আগে ফ্রান্স বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানিকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিলেন ক্রোটসরা। এ বারের দলের বৈশিষ্ট্য আক্রমণে এক ঝাঁক প্রতিভা। পাশাপাশি নাইজিরীয়দের মধ্যে অনেকেই নিয়মিত খেলেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে। যদিও শেষ বারোটি বিশ্বকাপে তারা মাত্র একটি ম্যাচ জিতেছে।
শনিবারের এই ম্যাচ হবে রাশিয়ার অরণ্যাঞ্চল বেষ্টিত কালিনিগ্রাডে। যার প্রচুর টিকিট অবিক্রিত রয়েছে শুক্রবারও। এই ম্যাচ আবার রাশিয়ার বিশ্বকাপ সংগঠকদের কাছেও বড় পরীক্ষা। এত দিন ধরে লেখা হচ্ছে রাশিয়া বিশ্বকাপ বর্ণবিদ্বেষে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। রুশ সরকার অবশ্য সব রকম ভাবে চেষ্টা করছে নিজেদের কলঙ্কমুক্ত রাখতে। তারই একটা বড় পরীক্ষা আয়োজকদের দিতে হবে শনিবারের ম্যাচে। ফিফা ইতিমধ্যেই বলে দিয়েছে, কোনওভাবে দর্শকদের মধ্যে থেকে বর্ণবিদ্বেষমূলক আচরণ লক্ষ্য করা গেলে দরকার হলে ম্যাচও থামিয়ে দেওয়া হতে পারে। নাইজেরিয়ার ডাচ জাত ডিফেন্ডার উইল ট্রুস্ট একং বলে দিয়েছেন, তাঁদের দলের কোনও ফুটবলারের প্রতি বর্ণবিদ্বেষী আচরণ করা হলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা রেফারির কাছে গিয়ে প্রতিবাদ জানাবেন।
এমনিতে ক্রোয়েশিয়া দলে রয়েছেন বিশ্বমানের প্রতিভারা। রিয়াল মাদ্রিদের লুকা মদ্রিচ, বার্সেলোনার ইভান রাকিতিচ, জুভেন্তাসের মারিয়ো মানজুকিচ। ক্রোটসরা অবশ্য ব্রাজিলের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচে ০-২ হেরেছে। আর তার আগে সেনেগালকে অন্য একটি প্রস্তুতি ম্যাচে ২-১ হারিয়েছে। পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে হালফিলে ক্রোয়েশিয়া দারুণ কিছু খেলছে না।
পাশাপাশি নাইজেরিয়াও খুব ভাল খেলছে না। তারা দুটি প্রস্তুতি ম্যাচের একটিতে হেরেছে ইংল্যান্ডের কাছে, অন্যটি চেক প্রজাতন্ত্রে কাছে। এই দলটির জার্মান কোচ গারনট রুরের সব চেয়ে বড় চিন্তা আক্রমণ নিয়ে। দল গড়ার সময় খুব ভাল স্ট্রাইকার তিনি পাননি বলে দাবি করেছেন এই কোচ। তবে তারুণ্য তাঁর দলের শক্তি। কারণ এই বিশ্বকাপের সব চেয়ে কমবয়সীদের দল নাইজেরিয়া। সঙ্গে তারকাও আছেন। আর্সেনালের অ্যালেক্স ইয়োবি, লেস্টারের উইলফ্রেড এনডিডি, চেলসির ভেক্টর মোজেস যেমন।
নাইজেরিয়ার জার্মান কোচ এই ম্যাচের আগে বলেছেন, ‘‘আমরা শেষ দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচে জিততে পারিনি এটা ঘটনা। তার মানে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে আমার ছেলেরা কিছু করতে পারবে না ভাববেন না। ওরা নিজেদের প্রমাণ করতে চায়। কারণ বিশ্বকাপে ভাল খেলার মানে ওদের ভবিষ্যতও নিশ্চিত হওয়া। অবশ্য তার চেয়েও বড় কথা, ওদের মধ্যে বিশ্বকে এটা বুঝিয়ে দেওয়ার তাগিদ আছে, যে আফ্রিকাও বিশ্ব ফুটবলের একটা বড় শক্তি।’’
বোঝাই যাচ্ছে, নক আউটে খেলা নিশ্চিত করতে দু’দলই শনিবার জয়ের জন্য ঝাঁপাবে। কারণ এই দুই দেশকেই গ্রুপে লিয়োনেল মেসির আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে খেলতে হবে।