ওয়ার্নারদের ভরাডুবি রুখতে জেগে উঠতে হল যুবরাজকে

যেন ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি জাগল। ডেভিড ওয়ার্নার না পারলেও এ বার যুবরাজ সিংহ পারলেন। আইপিএলে তাঁকে এই মূর্তিতে দেখতে চাইছিলেন ভক্তরা। এত দিনে সেই মূর্তিতেই দেখা গেল তাঁকে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৬ ০৫:২৪
Share:

ব্যর্থ ওয়ার্নার। বুধবার কোটলায়। ছবি: বিসিসিআই

যেন ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি জাগল। ডেভিড ওয়ার্নার না পারলেও এ বার যুবরাজ সিংহ পারলেন। আইপিএলে তাঁকে এই মূর্তিতে দেখতে চাইছিলেন ভক্তরা। এত দিনে সেই মূর্তিতেই দেখা গেল তাঁকে।

Advertisement

কেকেআরের সামনে সানরাইজার্সের ১৬৩ রানের টার্গেট রাখার পিছনে যুবরাজের অবদান ৩০ বলে ৪৪। রানটা সংখ্যায় যেমন দেখতে, বুধবার তাঁর দলের কাছে এর গুরুত্ব ছিল তার চেয়েও বেশি। ১২০ রানের মধ্যে শিখর ধবন, ডেভিড ওয়ার্নার, হেনরিক, হুডারা ফিরে যাওয়ার পর যখন ভাবনা শুরু হয়েছিল কেকেআরের বিরুদ্ধে দেড়শো রানের দেওয়ালও তুলতে পারবে কি না সানরাইজার্স, তখন যুবরাজের ব্যাটিংই ওয়ার্নারদের কিছুটা হলেও স্বস্তিসূচকে এনে দিল। এই দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর নিখুঁত ডিরেক্ট থ্রোয়ে কলিন মানরোকে রান আউটও করে দেন যুবি।

যদিও ১৬২ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এমন কিছু নয়, তবে পটভূমি যেহেতু ফিরোজ শাহ কোটলা, তাই এই রানটাকেই কেউ কেউ লড়াকু বলে মনে করছিলেন। যুবরাজ নিজেই যেমন আটটা বাউন্ডারি ও একটি ওভার বাউন্ডারি মেরে উঠে বলেন, ‘‘১৭০ হলে আরও ভাল হত, তবে ১৬৩-টাও খারাপ হয়নি। এই উইকেটে বড় শট খেলাটা খুব একটা সোজা ব্যাপার নয়। এই রানটা তুলতেও বেশ খাটতে হচ্ছে ব্যাটসম্যানদের।’’

Advertisement

চলতি আইপিএল মরসুমে ফিরোজ শাহ কোটলায় সবচেয়ে বেশি রানটা তুলেছিল দিল্লি ডেয়ারডেভিলস এই কেকেআরের বিরুদ্ধেই। ১৮৬ তুলে সেই ম্যাচে নাইটদের হারিয়ে দেয় জাহির খানের দল। ১৬০-১৭০-এর ঘরে রান তুলে কোটলায় জেতার ঘটনা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু এখানে বিপক্ষের নামটা যেহেতু কলকাতা নাইট রাইডার্স, তাই তা একই রকম নাও হতে পারে।

কেকেআরের পাল্টা ব্যাটিংয়ে দ্বিতীয় ওভারে উথাপ্পা, সাত নম্বর ওভারে মানরো ও দশম ওভারে গম্ভীর আউট হয়ে যাওয়ার পর ইউসুফ পাঠান ও মণীশ পান্ডে রান তোলার দায়িত্বে। দশ ওভারে নাইটরা ৬৬-৩।

কোটলার সেই ম্যাচে কেকেআর দলে যিনি ছিলেন না, তিনি ম্যাজিক স্পিনার কুলদীপ যাদব। যিনি বুধবার ওয়ার্নার, হেনরিক ও কাটিংকে ফিরিয়ে দিয়ে যেমন বিপক্ষ ব্যাটিংয়ের মেরুদন্ডে আঘাত করেন, তেমনই একটি নিখুঁত থ্রোয়ে হুডাকে রান আউটও করে দেন। যুবরাজ সিংহ এসে পরে হাল না ধরল রানটা সত্যিই দেড়শোও পেরত কী না, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ ছিল।

আইপিএলের শুরুর দিকে চোটের জন্য খেলতে না পারা যুবরাজ চোট সারিয়ে ফেরার পর মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ২৩ বলে ৩৯ রানের ইনিংস খেলে বুঝিয়ে দেন কতটা খিদে নিয়ে মাঠে ফিরেছিলেন তিনি। সেই ম্যাচে সানরাইজার্স জেতে। দিন দশেক আগে মোহালিতে তাঁর ব্যাট ফের ঝলসে ওঠে। ২৪ বলে ৪২ করে অপরাজিত ছিলেন তিনি তিনটি ছয় ও তিনটি চার মেরে। সেই ম্যাচেও সানরাইজার্স সাত উইকেটে জেতে কিংগস ইলেভেনের বিরুদ্ধে।

তার পর এই বুধবারের ইনিংস। কুলদীপ পরপর দু’বলে হেনরিক ও ওয়ার্নারকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর যখন যুবরাজ নামেন, তখন দলের স্কোরবোর্ডে ৭১-৩। ম্যাজিক স্পিনারের তৈরি আতঙ্কের আবহের মধ্যেই ব্যাটিং শুরু করেন। একেই কুলদীপের চোখ রাঙানি, অন্য দিকে নারিনের চাপ। শুরুটা সামলানোর জন্য দু’ওভার সময় নেন যুবি। তার পর কুলদীপকেই পরপর লং অন দিয়ে চার আর সোজা বোলারের মাথার উপর দিয়ে ছয় হাঁকান। নারিনকেও সোজা সাইট স্ক্রিনে বাউন্ডারি মারেন। কুলদীপের বিরুদ্ধে ৬ বলে ১৯ রান করেন তিনি। একটা মাত্র ডট বল। ৩০ বলে সব মিলিয়ে ১৬টা ডট বল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন