সমস্যা: ডোপ কেলেঙ্কারি থেকে এখনও পুরোপুরি মুক্ত নন। ফাইল চিত্র
পাঁচ মাসের নির্বাসনে ইউসুফ পাঠান ছাড় পেয়ে গেলেও বিশ্ব ডোপিং-বিরোধি সংস্থা ওয়াডা তাঁকে শেষ পর্যন্ত ছাড় দেবে কি না, এই প্রশ্নই এখন উঠতে শুরু করে দিয়েছে। বরোদার তারকা অলরাউন্ডারের শরীরে গত বছর মার্চে ডোপ পরীক্ষায় নিষিদ্ধ ‘টার্বুটালিন’ পাওয়া যায়।
নিজের অজান্তে ও ভুলবশত এই নিষিদ্ধ রাসায়নিক শরীরে প্রবেশ করেছিল, ইউসুফ ভারতীয় বোর্ডকে এমনই জানানোর পরে বোর্ড তাঁকে পাঁচ মাসের নির্বাসন দিয়ে ছেড়ে দেয়। তাও আবার যে নির্বাসনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে পাঁচ দিন পরেই।
বোর্ডের এই সিদ্ধান্তের পরে কেউ কেউ বলতে শুরু করেছেন, সামনেই মুস্তাক আলি ট্রফির মূল পর্ব ও তার পরেই আইপিএলের নিলাম। ইউসুফ যাতে এতে অংশ নিতে পারেন, সেজন্যই তাঁর নির্বাসনের মেয়াদের শুরুটা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। ১৫ জানুয়ারি থেকেই ফের মাঠে নামতে পারবেন ইউসুফ।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপের জন্য তৈরি দল: দ্রাবিড়
বোর্ড তাঁকে মাত্র পাঁচ মাসের নির্বাসন দিয়ে ছেড়ে দিলেও ওয়াডা কিন্তু জানিয়ে দিয়েছে ইউসুফকে এই সিদ্ধান্তে তাদের কোনও সায় নেই। ইউসুফের ‘কেস’ বোর্ড বন্ধ করে দিলেও ওয়াডায় কিন্তু এখনও তা বন্ধ হয়নি। ওয়াডা আইনে প্রথমবার ডোপিংয়ে কেউ ধরা পড়লে তাঁকে চার বছর নির্বাসনে পাঠানো হয়।
দু’বছর আগে রিও অলিম্পিক্সের আগে কুস্তিগীর নরসিংহ যাদবের নমুনায় নিষিদ্ধ রাসায়নিক পাওয়া গিয়েছিল। জাতীয় ডোপিং বিরোধি সংস্থা নাডা তাঁকে বেকসুর খালাস করে দিলেও ওয়াডা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ‘ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব আর্বিট্রেশন’-এ আবেদন করে তাঁর অলিম্পিক্সে অংশগ্রহণ আটকানোর পাশাপাশি তাঁকে চার বছরের নির্বাসনও দেয়।
ইউসুফের ক্ষেত্রেও এমনই হবে কি না, এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে ক্রিকেট মহলে। ওয়াডার মিডিয়া রিলেশনস বিভাগের ম্যানেজার ম্যাগি ডুরান্ড সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, ‘‘যেহেতু বিষয়টার এখনও নিষ্পত্তি হয়নি, তাই এই ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করার জায়গায় নেই আমরা।’’
ইউসুফ পাঠান নাকি নির্দ্বিধায় অভিযোগ স্বীকার করে নিয়ে তাঁর স্বপক্ষে যুক্তি দিয়েছেন। কী ভাবে ভুলবশত সর্দি-কাশির ওষুধের সঙ্গে ‘টার্বুটালিন’ তাঁর শরীরে প্রবেশ করে, তার ব্যাখ্যাও নাকি তিনি দিয়েছেন। বোর্ড তাদের প্রেস রিলিজে এ কথা জানিয়ে ইউসুফের এই ব্যাখ্যাকে ‘সন্তোষজনক’ মন্তব্য করেছে। আর সে জন্যই তাঁর নির্বাসনের মেয়াদ যথাসম্ভব দ্রুত শেষ করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু কী ভাবে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করেছেন এই কেকেআর তারকা, তা জানানো হয়নি। কেনই বা নির্বাসনের একেবারে শেষ দিকে ইউসুফের এই ডোপিংয়ের খবর জানানো হল সংবাদমাধ্যমকে, এটাও বড় প্রশ্ন।
নরসিংহ যাদব তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের যুক্তি দিয়ে নাডায় পার পেয়ে গেলেও ওয়াডার দরবারে সেই যুক্তি ধোপে টেকেনি। ইউসুফকেও যে ভাবে কার্যত ‘বেকসুর’ ঘোষনা করে ছেড়ে দেওয়া হল, সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধেও ওয়াডা নরসিংহের রাস্তাতেই যাবে কি না, সেটাই এখন দেখার।