বিদেশে আবার ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল

আটলেটিকোকে ভাবতে বাধ্য করলেন রফিক

গত আইএসএল ফাইনালে তাঁর গোলেই ট্রফি ঢুকেছিল কলকাতায়। কিন্তু টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সংষ্করণে সেই মহম্মদ রফিকের দরজায় কড়া নাড়েনি কোনও টিমই। কলকাতা লিগে লাল-হলুদ জার্সি গায়ে মরসুম শুরু করে তাই বঙ্গসন্তান রফিকের লক্ষ্য ছিল একটাই— গোলের পর গোল করে মনের খেদ মিটিয়ে নিতে হবে। মুখ নয়, কথা বলবে পা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:২৪
Share:

ইস্টবেঙ্গল-৩ (র‌্যান্টি-২, রফিক)

Advertisement

ঢাকা মহামেডান-০

Advertisement

গত আইএসএল ফাইনালে তাঁর গোলেই ট্রফি ঢুকেছিল কলকাতায়। কিন্তু টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সংষ্করণে সেই মহম্মদ রফিকের দরজায় কড়া নাড়েনি কোনও টিমই।

কলকাতা লিগে লাল-হলুদ জার্সি গায়ে মরসুম শুরু করে তাই বঙ্গসন্তান রফিকের লক্ষ্য ছিল একটাই— গোলের পর গোল করে মনের খেদ মিটিয়ে নিতে হবে। মুখ নয়, কথা বলবে পা।

সোদপুরের ছেলে কলকাতা লিগে যে ছন্দে ছিলেন, বাংলাদেশে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক গোল্ড কাপেও সেই ছন্দই ধরে রেখেছেন। বুধবার চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালে কিপারকে কাটিয়ে গোল করলেন আটলেটিকো কলকাতা প্রাক্তন। নিটফল— রফিকের সঙ্গে র‌্যান্টির জোড়া গোলের সুবাদে ঢাকা মহমেডানকে ৩-০ হারিয়ে বিদেশে ফের কোনও টুর্নামেন্টের ফাইনালে গেল ইস্টবেঙ্গল।

পাশাপাশি আরও একটা বড় খবর, রফিকের ঝোড়ো ফর্ম দেখে তাঁকে দলে ফেরানোর চিন্তাভাবনা শুরু করল আটলেটিকো দে কলকাতা। চট্টগ্রাম থেকে রাতের খবর, এ দিনই লাল-হলুদের ফুটবলারের কাছে পৌঁছে গিয়েছে আটলেটিকোর প্রাথমিক প্রস্তাব।

রফিকের মতোই নিজেকে ফের চেনানোর মঞ্চ হিসেবে বাংলাদেশের টুর্নামেন্টকে বেছে নিয়েছিলেন র‌্যান্টি। এ দিন শুধু জোড়া গোলই করলেন না। হোটেলে ফিরলেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার নিয়ে। রফিকের মতোই টুর্নামেন্টে তিন গোল হয়ে গেল তাঁরও।

মরসুমে শুরুতে কলকাতা লিগ পেলেও একটা প্রশ্নটা তাড়া করে বেড়াচ্ছিল ইস্টবেঙ্গল কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যকে— র‌্যান্টি মার্টিন্স কবে পুরনো ছন্দে ফিরবেন? ম্যাচের পর টিম হোটেল চট্টগ্রাম পেনিনসুলা থেকে বিশ্বজিৎ ফোনে বললেন, ‘‘ওদের বলেছিলাম, তোদের যাঁরা সমালোচনা করছেন, তাঁদের খেলে জবাব দে। সেটা ওরা দিয়েছে। ফাইনালে ওঠার সঙ্গে সেটাও তৃপ্তি বাড়াচ্ছে বইকী।’’

শুক্রবার ফাইনালে ইস্টবেঙ্গলের প্রতিপক্ষ চট্টগ্রাম আবাহনী। যাদের গ্রুপ লিগে ২-১ হারিয়ে এই টুর্নামেন্টে অভিযান শুরু করেছিল টানা ছ’বারের কলকাতা লিগ চ্যাম্পিয়নরা। যদিও লাল-হলুদ কোচ বললেন, ‘‘ও সব মাথায় রাখছি না। ছেলেরা আজই ড্রেসিংরুমে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ট্রফি জেতার জন্য ফাইনালে নিজেদের নিংড়ে দেবে।’’ সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ, ডু ডং-কে ছাড়াই তিনি এ দিন ফাইনালে তুললেন ইস্টবেঙ্গলকে।

এ দিন ম্যাচের চোদ্দো মিনিটে ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন গোলমেশিন র‌্যান্টি। পরে ফোনে বলছিলেন, ‘‘নিজেকে ফের চেনানোর তাগিদ ছিলই। ছন্দে ফেরার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসও বাড়ছে। বাকি কথা ফাইনাল জিতলে বলব।’’ রফিক তো কোনও প্রতিক্রিয়াই দিচ্ছেন না।

এ দিন শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে ঢাকা মহমেডানকে ম্যাচে দাঁত ফোটাতে দেয়নি লাল-হলুদ ব্রিগেড। ৪-৩-৩ ছকে উইংয়ে পুরো ম্যাচ দুর্দান্ত খেললেন প্রহ্লাদ রায়। র‌্যান্টির দু’টো গোল তাঁরই ক্রস থেকে। এগারো বছর আগে নেপালে সান মিগুয়েল কাপ জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল। এক যুগ পরে বিদেশ থেকে কাপ নিয়ে ফেরা যাবে?

টিমের সিনিয়র ফুটবলার অ্যালভিটো বলছেন, ‘‘টিমমেটদের বলেছি পুজোয় না করা আনন্দটা করা যাবে এখানে ট্রফি জিতলেই। ওটাই এই বাংলায় আমাদের মোটিভেশন।’’

ইস্টবেঙ্গল: দিব্যেন্দু, অভিনব, দীপক, বেলো (বাবু), বিশ্বজিৎ, প্রহ্লাদ (জগন্নাথ), রফিক, সুবোধ (অ্যান্টনি), অবিনাশ, ওরোক, র‌্যান্টি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement