সেঞ্চুরি ম্যাচে আজ সৌরাশিস

ঈশ্বরহীন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বাঁচার যুদ্ধে বাংলা

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে একশো ম্যাচ যে কোনও রঞ্জি ক্রিকেটারের কাছে মাহেন্দ্রক্ষণ হওয়া উচিত। কিন্তু প্রেক্ষাপট যদি হয় মহাচাপে টিমের মরণ-বাঁচন যুদ্ধ, তা হলে ব্যাপারটা কী দাঁড়ায়?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৪:০৮
Share:

বাঁচার লড়াইয়ে মনোজ-লক্ষ্মীই ভরসা বাংলার।

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে একশো ম্যাচ যে কোনও রঞ্জি ক্রিকেটারের কাছে মাহেন্দ্রক্ষণ হওয়া উচিত। কিন্তু প্রেক্ষাপট যদি হয় মহাচাপে টিমের মরণ-বাঁচন যুদ্ধ, তা হলে ব্যাপারটা কী দাঁড়ায়?

Advertisement

সৌরাশিস লাহিড়ী বুঝতে পারছেন, মাইলস্টোনের দিনে তাঁর কাজটা খুব সহজ হবে না। কিন্তু এটাও তাঁর মনে হচ্ছে ফুরফুরে একটা ম্যাচের চেয়ে চাপের যুদ্ধে পড়ায় ভাল হল। পারফর্ম করতে পারলে, বাংলাকে বাঁচিয়ে দিতে পারলে আজীবনের জন্য ম্যাচটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

“সাধারণত মাইলস্টোনের ম্যাচগুলোয় পারফর্ম করার জেদ, ইচ্ছে আপনাআপনি বেড়ে যায়। সেটা আমারও হচ্ছে। তবে গত ম্যাচে পাঁচ উইকেট পেয়েছি। সেটা আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে। একজন বোলারের পাঁচ উইকেট আর এক জন ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরি, দু’টো সমান। আর এক জন বোলার চায় বেশি ওভার বল করতে। রেলওয়েজের বিরুদ্ধে যা করার সুযোগ আমি পেয়েছি। সব মিলিয়ে ম্যাচে মোট উনপঞ্চাশ ওভার বল করেছি আমি,” ইন্দৌর থেকে ফোনে বলছিলেন বাংলার এক নম্বর স্পিনার সৌরাশিস। শুক্রবারই মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে যিনি মাইলস্টোন ম্যাচে নামবেন। জীবনের শততম প্রথম শ্রেণির ম্যাচে।

Advertisement

মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে আপনার ব্যক্তিগত লক্ষ্য কিছু থাকবে? উত্তরে পনেরো বছর ধরে বাংলার হয়ে খেলা সৌরাশিস বললেন, “দেখুন, যে পরিস্থিতিতে টিম আছে তাতে আমার নিজের লক্ষ্যের চেয়ে টিমের ভাল হওয়াটা বেশি জরুরি। বাংলা যদি পুরো পয়েন্ট পায়, আর আমি যদি একটা ওভারও বল না পাই, পেসাররাই যদি সব উইকেট তুলে নেয়, কোনও আক্ষেপ থাকবে না। এটা মনে রাখতে পারব যে, আমার রেকর্ডের ম্যাচে বাংলা জিতেছিল,” বলে তাঁর ফের সংযোজন, “নিজেরটা নিয়ে শুধু একটাই বলার আছে। দুশো শতাংশ দেব। আমি টিমের সিনিয়র স্পিনার। চেষ্টা করব সুযোগ পেলে টিমকে জিতিয়ে ফেরানোর।”

ইন্দৌরের উইকেট সম্পর্কে যা শোনা গেল, তাতে সৌরাশিসের মুখে হাসি ফোটার কথা। পরের দিকে উইকেটে টার্ন ধরতে পারে বলে মনে করছে বঙ্গ শিবির। যে কারণে টিমে দুই স্পিনার থাকার সম্ভাবনার কথা শোনা গেল। সৌরাশিস লাহিড়ীর সঙ্গে বাঁ হাতি স্পিনার অমিত বন্দ্যোপাধ্যায় সম্ভবত নামবেন। ওপেনিংয়ে আবার অভিষেক হচ্ছে অভিষেক দাসের। স্থানীয় ক্রিকেটে পরের পর ডাবল সেঞ্চুরি করে যিনি সাম্প্রতিকে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছেন ময়দানে। যার একটা আবার টি টোয়েন্টি ম্যাচেও আছে!

গ্রুপ টেবলের যা অবস্থা তাতে এই ম্যাচটা টিমের জীবন-মৃত্যুর দিক নির্দেশ করে দেবে। এখন পর্যন্ত ৭ ম্যাচ খেলে বাংলার পয়েন্ট ১২। মধ্যপ্রদেশের বিরুদ্ধে বাংলা যদি পুরো পয়েন্ট তুলতে পারে, তা হলে এ বারের মতো রঞ্জি ট্রফিতে বেঁচে যাওয়া যাবে। কিন্তু হেরে গেলে অবনমন আতঙ্ক তখন ভাল রকম তাড়া করতে শুরু করবে বাংলাকে।

বাংলার পক্ষে এটা ভাল খবর, মধ্যপ্রদেশের পেসার ঈশ্বর পাণ্ডে এই ম্যাচে নেই। তাঁর পায়ে চোট আছে। তবে নমন ওঝা নামবেন বাংলার বিরুদ্ধে। বাংলার কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা এখনও খাতায় কলমে একটা বেঁচে আছে। যদি বাংলা মধ্যপ্রদেশকে সরাসরি হারিয়ে ছ’পয়েন্ট তোলে, আর অন্য দিকে তামিলনাড়ু এবং কর্নাটক যদি যথাক্রমে বরোদা আর মুম্বইকে সরাসরি হারিয়ে দেয়, কোয়ার্টার ফাইনালে এখন যেতে পারে বাংলা। অধিনায়ক লক্ষ্মীরতন শুক্ল অতশত ভাবছেন না। ফোনে শুধু বললেন, “মরসুমের প্রথম ম্যাচটা যে মাইন্ডসেট নিয়ে খেলতে নামতাম, সেটা নিয়ে এই ম্যাচেও নামব। টিমটা ঝরঝরে, ফুরফুরে অবস্থায় আছে। ভাল কিছুই আশা করছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement