‘একেবারে ফার্স্ট গিয়ারে এগোচ্ছে আর্জেন্তিনা’

আটাত্তরে মারাদোনার দেশের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ী দলে তিনি ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। চার বছর পর বিরাশির বিশ্বকাপেও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন নিজের জার্সির জন্য। কারণ, রক্ষণে খেললেও তাঁর জার্সি নম্বর ছিল এক।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৪ ০৩:২৪
Share:

নাইজিরিয়া ম্যাচেও গোল। মেসি ম্যাজিক চলছে।

আটাত্তরে মারাদোনার দেশের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ী দলে তিনি ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। চার বছর পর বিরাশির বিশ্বকাপেও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন নিজের জার্সির জন্য। কারণ, রক্ষণে খেললেও তাঁর জার্সি নম্বর ছিল এক।

Advertisement

সেই ওসি আর্দিলেস মনে করছেন, এ বারের বিশ্বকাপে ব্রাজিলের মাটিতে তাঁর দেশ আর্জেন্তিনার পারফরম্যান্স এখনও পর্যন্ত ‘ফার্স্ট গিয়ার’-এ রয়েছে। নক-আউটের হাইওয়েতে উঠলে তখন গিয়ার পরিবর্তন করতেই হবে।

ব্রাজিলে প্রথম দুই ম্যাচেই জয় পেয়েছে আর্দিলেসের দেশ। সেই দুই ম্যাচেই গোল পেয়েছেন মেসি। মেসির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেও দলের বাকি ফুটবলারদের পারফরম্যান্স মনে ধরেনি আর্দিলেসের। বলছেন, “ফার্স্ট গিয়ারে গাড়ি যে ভাবে চলে ঠিক সে ভাবেই এ বারের বিশ্বকাপে এগোচ্ছে আর্জেন্তিনা। তবে নক-আউটে দ্রুত সেকেন্ড গিয়ারে চলে যেতে হবে আমাদের।”

Advertisement

এখানেই না থেমে আর্জেন্তিনার বিশ্বকাপ জয়ী ফুটবলার বলেন, “আর্জেন্তিনার পারফরম্যান্সের একমাত্র উজ্জ্বল দিক হল মেসির ফর্ম। প্রথম দু’ম্যাচেই অনবদ্য দুটো গোল করেছে লিও। যা আর্জেন্তিনাকে নিয়ে গিয়েছে নক-আউটে। ফাইনালের যত কাছাকাছি যাবে তত ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে মেসি।” এর সঙ্গেই এলএম টেনের জন্য তাঁর দরাজ শংসাপত্র, “বিশ্বকাপে ওর গোল দুটো দেখলাম। আমার আগের ও পরের জমানার দুই ফুটবল নক্ষত্র হবলেন পেলে ও মারাদোনা। এই দু’জনকে প্রাপ্য সম্মান দিয়েও বলছি, লিওকে কখনও কখনও ওদের চেয়েও বড় ফুটবলার মনে হয়।”

নিজের দল নিয়ে এটা যদি আর্দিলেসের স্বস্তি হয়, তা হলে অস্বস্তিও রয়েছে। যা তিনি গোপন করেননি। বলেছেন, “অস্বস্তির ব্যাপার এটাই যে সাবেয়ার টিম ব্যক্তিগত দক্ষতায় বেরিয়ে যাচ্ছে। দল হিসেবে কিন্তু পারফর্ম করতে পারছে না। বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টে যা খুব দরকার। এখনও পর্যন্ত দেখা যায়নি আর্জেন্তিনার খেলায়।”

আর্দিলেস আরও বলেন, “সাবেয়ার টিমে মেসি ছাড়াও অনেক ভাল ফুটবলার রয়েছে। যেমন, আগেরো, ইগুয়াইন, দি’মারিয়া। কিন্তু ওদের এখনও সে রকম বিধ্বংসী মেজাজে খেলতে দেখলাম না। অথচ এই আগেরো এ বারের মরসুমে ম্যাঞ্চেস্টার সিটিতে কী দুর্দান্ত ফুটবলটাই না খেলেছে।”

বিশ্বকাপে মেসি ছাড়া আর্জেন্তিনার বাকিরা কেন সে ভাবে উজ্জ্বল নয় তার কারণ দর্শাতে গিয়ে আর্দিলেস বলেন, “দলের বাকিরা সে ভাবে সাহায্য পাচ্ছে না। এর জন্য সাবেয়ার সিস্টেমকে দুষলে চলবে না। ফুটবলারদের উচিত খেলাটাকে আরও দ্রুত গতিতে অপারেট করা এবং বল ডিস্ট্রিবিউশন নিখুঁত করা। গতিতে কাউন্টার অ্যাটাক কিন্তু হচ্ছে না।”

আর্দিলেসের বক্তব্য আর্জেন্তিনা শিবিরে গুরুত্ব পাচ্ছে এই কারণেই যে, প্রথম দুই ম্যাচে দলের তিন গোলের মধ্যে দু’ গোলই করেছেন লিও মেসি। বাকি গোল বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা ম্যাচে বসনিয়ান ডিফেন্ডার সিদ কোলাসিনিচের আত্মঘাতী গোল। অথচ ক্লাব পর্যায়ে ও দেশের হয়ে গত মরসুমে দি’মারিয়া, ইগুয়াইন, আগেরোকে এক কথায় সফলই বলা যায়। এমনকি প্রাক-বিশ্বকাপ ম্যাচেও গোল পেয়েছেন ইগুয়াইন (৯ গোল), আগেরো (৫ গোল)।

তা হলে বিশ্বকাপে কী হল? কেউ কেউ বলছেন চোট আখনও পুরোপুরি না সারায় ফিট নয় দি’মারিয়া। তাই গতিতে পাস খেলতে খেলতে কাউন্টার অ্যাটাকে যেতে দেরি করছে আর্জেন্তিনা। দু’ম্যাচ মিলিয়ে ৭৮ মিনিট খেলা ইগুয়াইন সঠিক পাস বাড়িয়েছেন মোটে দশটি। আর্জেন্তিনা শিবির যদিও এই সমালোচনায় ভীত নয়। বরং মেসিদের দাবি বসনিয়া এবং ইরান দু’দলই চূড়ান্ত রক্ষণাত্মক ফুটল খেলেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। যা নক-আউটে হবে না। তখন প্রতিপক্ষ ওপেন অ্যাটাকে আসলেই সুবিধা পাবেন আগেরোরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন