এখনই রিয়ালকে ফেভারিট বলে দিলেন কোচ সিমিওনে

১৫ মে ১৯৭৪: ১১৪ মিনিটে লুইস আরাগোনেসের গোলে ১-০ এগোয় আটলেটিকো মাদ্রিদ। আর ছ’মিনিট ধরে রাখলেই ইউরোপিয়ান কাপ চলে যেত তাঁদের হাতে। কিন্তু সোয়ারজেনবেকের গোলে সমতা ফেরায় বায়ার্ন মিউনিখ। আর ‘রিপ্লেতে’ ৪-০ জিতে বায়ার্ন হয় চ্যাম্পিয়ন। সেই চল্লিশ বছরের হতাশা থেকে মুক্তি পাওয়ার সুযোগ আবার আটলেটিকোর হাতে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ঐতিহাসিক ট্রফি ছোঁয়ার থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে আটলেটিকো। প্রশ্ন হচ্ছে, এ বার কি সেই মিউনিখ ম্যাচের ভূত তাড়াতে পারবে আটলেটিকো? ঘোঁচাতে পারবে চল্লিশ বছরের গ্লানি। যে রাস্তায় কাঁটার মতো দাঁড়িয়ে আছে তাঁদেরই ঘরোয়া শত্রু রিয়াল মাদ্রিদ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৪ ০৩:২১
Share:

“আমি সমস্ত ফুটবলারের মা-দের ধন্যবাদ জানাতে চাই। এমন ছেলেদের তাঁরা জন্ম দিয়েছেন যারা হারতে শেখেনি।” —সিমিওনে

১৫ মে ১৯৭৪: ১১৪ মিনিটে লুইস আরাগোনেসের গোলে ১-০ এগোয় আটলেটিকো মাদ্রিদ। আর ছ’মিনিট ধরে রাখলেই ইউরোপিয়ান কাপ চলে যেত তাঁদের হাতে। কিন্তু সোয়ারজেনবেকের গোলে সমতা ফেরায় বায়ার্ন মিউনিখ। আর ‘রিপ্লেতে’ ৪-০ জিতে বায়ার্ন হয় চ্যাম্পিয়ন।

Advertisement

সেই চল্লিশ বছরের হতাশা থেকে মুক্তি পাওয়ার সুযোগ আবার আটলেটিকোর হাতে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ঐতিহাসিক ট্রফি ছোঁয়ার থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে আটলেটিকো। প্রশ্ন হচ্ছে, এ বার কি সেই মিউনিখ ম্যাচের ভূত তাড়াতে পারবে আটলেটিকো? ঘোঁচাতে পারবে চল্লিশ বছরের গ্লানি। যে রাস্তায় কাঁটার মতো দাঁড়িয়ে আছে তাঁদেরই ঘরোয়া শত্রু রিয়াল মাদ্রিদ।

ফাইনালে পৌঁছে আটলেটিকো কোচ দিয়েগো সিমিওনে যেমন বলেই দিয়েছেন, “হ্যাঁ, আমরা রিয়ালকে ভাল ভাবেই চিনি। জানি ওরা কে কী রকম খেলে। এ মরসুমে অনেক ম্যাচ খেলেছি রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধে। আমরা খুব উৎসুক ফাইনালে ওদের বিরুদ্ধে খেলা নিয়ে।” রিয়াল দলের প্রতিটা শক্তি বা দুর্বলতা সম্বন্ধে পরিচিত হলেও, নিজেদের ‘আন্ডারডগ’ স্বীকার করতে একটুও দ্বিধাবোধ করছেন না সিমিওনে। “আমরা এমন একটা ক্লাবের বিরুদ্ধে ফাইনাল খেলছি যারা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বড় বড় ম্যাচ খেলে অভ্যস্ত ।” চেলসির বিরুদ্ধে প্রথমে গোল খেয়েও তাঁর দলের মানসিকতা বদলায়নি, দাবি সিমিওনের। “তোরেসের গোলের পরে খুব তাড়াতাড়ি আমরা সমতা ফেরাই। দ্বিতীয়ার্ধে পাঁচ জনকে মাঝমাঠে খেলিয়েছি বল দখলের জন্য।” ম্যাচ জয়ের কৃতিত্ব ফুটবলারদের নয়। বরং তাঁদের মা-দের ধন্যবাদ জানিয়ে আটলেটিকো কোচ বলেছেন, “আমি সমস্ত ফুটবলারের মা-দের ধন্যবাদ জানাতে চাই। এমন ছেলেদের তাঁরা জন্ম দিয়েছেন যারা হারতে শেখেনি।”

Advertisement

দ্বিতীয়ার্ধের মাঝপথে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়লেও, দলের তারকা স্ট্রাইকার দিয়েগো কোস্তার ২৪ মে ফাইনাল খেলা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। সিমিওনে বলেছেন, “কোস্তা চোট পেয়েছিল ঠিকই। কিন্তু এখন ভাল আছে। বৃহস্পতিবার ক্লাব ডাক্তাররা ওর পরীক্ষা করেছেন। এখন সুস্থ।”

চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল ছাড়াও আটলেটিকোর জন্য অপেক্ষা করছে লা লিগার শেষ তিন ম্যাচ। যে ম্যাচগুলোতে জয় মানেই ১৯৯৬-এর পরে ঘরোয়া লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগও আছে আটলেটিকোর। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, লা লিগার জন্য সমস্যা হতে পারে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের প্রস্তুতিতে। লা লিগার শেষ তিনটে ম্যাচে যদি কোনও নির্ভরযোগ্য ফুটবলার চোট পেলে ফাইনালে সমস্যা হতে পারে আটলেটিকোর।

সমস্যার তালিকায় রয়েছে আবার দলের তারকা ফুটবলারের ভবিষ্যৎ। মরসুম শেষ হওয়ার আগের থেকেই জল্পনা তুঙ্গে যে, লিসবন ফাইনালটাই হয়তো আটলেটিকো সমর্থকদের কাছে শেষ সুযোগ তাঁদের প্রিয় দিয়েগো কোস্তাকে লাল-সাদা জার্সিতে দেখার। কারণ পরের মরসুমে কোস্তার জন্য ইতিমধ্যেই আটলেটিকোর সঙ্গে কথা সেরে রেখেছেন পরাজিত চেলসি কোচ হোসে মোরিনহো। যদিও ক্লাব সমর্থকদের আশ্বস্ত করে কোস্তা বলেছেন, “আমি আটলেটিকোতে ভাল আছি। জানি অনেক ক্লাব আমাকে সই করাতে চায়। কিন্তু আমার লক্ষ্য আটলেটিকোকে ট্রফি জিততে সাহায্য করা। যোগ্য দল হিসাবেই ফাইনালে খেলব আমরা।”

নিজের দলের পাশে ‘ফেভারিট’ তকমা থাকলেও, আটলেটিকোকে সমীহ করে রিয়াল মাদ্রিদ কোচ কার্লো আন্সেলোত্তি বলেছেন, “মাদ্রিদের দুটো দলই শক্তিশালী। আটলেটিকো মাদ্রিদ খুব ভাল দল বলেই ফাইনাল খেলছে। এই ম্যাচে কোনও ফেভারিট নেই।” এ বার দেখার রিয়ালের ‘লা ডেসিমা’র খিদে কি আটকাতে পারবে আটলেটিকো?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন