প্রথম ডার্বির আগে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
একজন নামছেন কলকাতায় তাঁর প্রথম ডার্বিতে। অন্য জনের সেই অভিজ্ঞতা দ্বিতীয়বার।
কিন্তু বড় ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগে দুই তারকার পারিপার্শ্বিক আবহ একেবারে দুই মেরুতে!
মঙ্গলবার ডার্বিতে অভিষেক হতে চলা বাগানের সনি নর্ডি যখন ঠাসা ভিড়ে সমর্থকদের ট্যাকল সামলে গাড়িতে উঠছেন, তখন দু’শো মিটার দূরত্বে শুনশান ইস্টবেঙ্গল তাঁবু ছাড়ছেন ডুডু ওমাগবেমি।
বাগানের হাইতিয়ান স্ট্রাইকার তাঁবু ছাড়ার সময় খোশমেজাজে। “ডার্বি জিতলে ভাতের সঙ্গে গলদা চিংড়ি আর চিকেনের ঝোল দিয়ে সেলিব্রেট করব,” স্টিয়ারিং হাতে গাড়ি স্টার্ট দেওয়ার আগে বললেন সনি। লাল-হলুদের গোলমেশিন ডুডু অবশ্য তখন আর্মান্দো কোলাসোর কড়া নজরদারিতে। আশেপাশে কাউকে ঘেঁষতে দেওয়া তো দূরের কথা। ইস্টবেঙ্গলের গোয়ান কোচ ঠায় দাঁড়িয়ে থাকলেন, যতক্ষণ না তাঁর নাইজিরিয়ান স্ট্রাইকারের গাড়ি ময়দান ছেড়ে চলে যায়!
সোমবারের বাগান যতটা খোলামেলা, ততটাই যেন গুটিয়ে লাল-হলুদ শিবির। কোচ থেকে ফুটবলার সবার মুখে কুলুপ। গত ডার্বির আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে আবির্ভূত হয়ে যুবভারতী এলাম, দেখলাম, জয় করলাম মেজাজে দাপিয়েছিলেন ডুডু। এ দিন প্র্যাকটিস শেষে কোচের নজর বাঁচিয়ে সেই ডুডুই মজা করে বলে গেলেন, “আমার আদর্শ ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। ওর ভাবনাকে সঙ্গী করেই মঙ্গলবার মাঠে নামব। গত বারের মতো এ বারও গোল করতে চাই।”
ডুডুর কথাতেই পরিষ্কার, ডার্বিতে গোল পেতে কতটা মরিয়া তিনি। তবে সনিও কি চুপ করে বসে থাকার পাত্র? সবুজ-মেরুন জনতার মাঝে দাঁড়িয়েই হুঙ্কার দিয়ে গেলেন, “যে কোনও ম্যাচ হারা যায়, ডার্বি নয়। তাই এখনও পর্যন্ত আমার খেলা একটাও ডার্বি হারিনি। সব ক’টাতে গোলও করেছি। আশা করছি, মঙ্গলবারও সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। আমার গোলেই দল জিতবে।” তিনি যে শুধু মুখেই বড় বড় কথা বলছেন, তা কিন্তু নয়। নিজের স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে স্থির নর্ডিকে প্র্যাকটিসেও বাড়তি পরিশ্রম করতে দেখা গেল। সবার প্রথম মাঠে নামলেন। সবার শেষে মাঠ ছাড়লেন। তবে ইস্টবেঙ্গলের র্যা-ডু জুটি যে বেশ ভয়ঙ্কর, সেটাও স্বীকার করে নিলেন বাগানের স্ট্রাইকার। তাঁর কথায়, “ডার্বির সঙ্গে অন্য ম্যাচের কোনও তুলনা হয় না। ইস্টবেঙ্গলের খেলা আমি ভিডিওতে দেখেছি। ওদের ডুডু-র্যান্টি বেশ ভাল। জিততে হলে আমাদের ডিফেন্ডারদের বাড়তি দায়িত্ব নিতে হবে।”