গ্লাসগোয় জয়দীপ। ছবি ফেসবুক।
কমনওয়েলথ গেমসে নামার ঠিক এক সপ্তাহ আগে রবিবার সন্ধেয় গ্লাসগো থেকে প্রায় একশো কিলোমিটার দূরে ডান্ডি-র কারনুস্টি গল্ফ হোটেল থেকে ইন্টারনেট চ্যাট-এ আনন্দবাজারকে সাক্ষাৎকার দিলেন বাংলার তারকা শুটার জয়দীপ কর্মকার।
প্রশ্ন: দিল্লির পর এখন গ্লাসগোয়ে প্রস্তুতি। তফাতটা ঠিক কী?
জয়দীপ: ৪২ ডিগ্রি আর ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের তফাতটা যে রকম হয়, ঠিক সে রকম।
প্র: সে জন্যই তো আপনাদের ইভেন্টের প্রায় দু’সপ্তাহ আগে কমনওয়েলথ গেমসে চলে যাওয়া?
জয়দীপ: সে তো বটেই। আজই আমার জার্মান কোচ হেইনজ রেইনকেমেইর এসে পড়েছেন এখানে। কাল থেকেই ওঁর ট্রেনিংয়ে প্র্যাকটিস শুরু হবে।
প্র: গ্লাসগোয়ে আপনার ইভেন্টে (৫০ মিটার রাইফেল প্রোন) সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ কে?
জয়দীপ: বিশ্বের তিন নম্বর ও অলিম্পিক পদকজয়ী ওয়ারেন পোটেন্ট। আমাদের গগন নারঙ্গ-ও দুর্দান্ত ফর্মে আছে। ঘরের মাঠে হ্যামন্ড, স্টার্টনদের মতো ইংরেজ শুটাররা কড়া লড়াই দেবে।
প্র: গত দিল্লি কমনওয়েলথ গেমসে এই একটা শুটিং ইভেন্টেই কোনও পদক আসেনি ভারতের। তাই এ বার প্রত্যাশার চাপটা আরও বেশি।
জয়দীপ: অবশ্যই। তবে আমি এখানে শুধু পদক জেতার জন্য আসিনি।
প্র: তা হলে গ্লাসগো থেকে জয়দীপ কর্মকার পদকহীন ফিরবেন?
জয়দীপ: তা তো বলিনি। তবে শুধু আমি নই, ভারতের সব শুটারই এখানে আরও বড় লক্ষ্য নিয়ে এসেছে।
প্র: সেটা কী?
জয়দীপ: বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, রিও অলিম্পিকের আসল প্রস্তুতিটা আমরা এখানেই সেরে রাখব। আমি টেকনিকে কিছু বদল এনেছি। সেই বদলগুলো ঠিকমতো রপ্ত করতে পারলে রিওয় গত বারের চেয়েও ভাল স্কোর হবে। দেশের পক্ষে যা বেশি জরুরি। তা ছাড়া আমার ইভেন্টে নিয়মের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। সেটাও একটা ফ্যাক্টর। সেগুলো কতটা রপ্ত করতে পেরেছি, এখানেই তা বুঝতে পারব। দুশো শতাংশ দেওয়ার চেষ্টা করব। এ সবের মধ্যে পদক এলে ভাল। না এলেও লক্ষ্যটা একই থাকবে, ২০১৬-এ অলিম্পিকে সেরা পারফরম্যান্স করা।
প্র: কমনওয়েলথ গেমসে পদক জিততে না পারলে তো লোকে আপনাকে ভুল বুঝতে পারে।
জয়দীপ: পারে। আমার কাছে তাঁদের প্রত্যাশা অনেক। কিন্তু তাঁদেরও বুঝতে হবে, এক জন শুটারকে কতটা কঠিন রাস্তা পেরোতে হয়। তাঁদের কাছে পদকটা সম্মান, আনন্দের ব্যাপার। কিন্তু সাফল্যের শিখরে পৌঁছনোর আগে আমাদের কাছে এটা সর্বদা অসমাপ্ত একটা যুদ্ধ। আশা করি ব্যাপারটা সবাই বুঝবেন।
প্র: তা হলে গ্লাসগোয় শুটিং থেকে পদকের আশা না করাই ভাল?
জয়দীপ: এক বারও তা বলিনি। রেজাল্ট আমার হাতে নেই। আমি আমার সেরাটা দিতে পারি মাত্র। কিন্তু সেটা ইভেন্টের দিন বাকি সবার চেয়ে ভাল হতেও পারে, না-ও পারে।