অনেকেই তাঁকে মারাদোনার আগে জায়গা দিচ্ছেন আর্জেন্তিনীয় ফুটবলে। স্বয়ং মারাদোনা পর্যন্ত। অনেকে বলে দিয়েছেন, তাঁর ট্রফি ক্যাবিনেটে বিশ্বকাপ কোনও দিন ঢুকুক বা না-ঢুকুক, তিনিই বিশ্বের সেরা ফুটবলার। সত্যিকারের গ্রেট।
কিন্তু তিনি— লিওনেল মেসি নিজের এই সব শংসাপত্রের কোনওটাই মানতে নারাজ। ২০১৪ বিশ্বকাপে নামার মাসখানেক আগে এলএম টেন-এর সরল স্বীকারোক্তি, “দিয়েগো মারাদোনার সঙ্গে আমাকে তুলনা করবেন না। তখনই সেই তুলনাটা করবেন, যে দিন আমিও মারাদোনার মতো বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলার হব। ফুটবল বিশ্বের সেরা পুরস্কার বিশ্বকাপ যত দিন না আমি জিততে পারছি, নিজেকে সত্যিকারের গ্রেট ফুটবলার বলেও মনে করি না।”
গত কয়েক বছরে ইউরোপিয়ান ক্লাব টুর্নামেন্টে মেসির অবিশ্বাস্য সাফল্য তাঁকে মারাদোনার সঙ্গে বারবার তুলনায় এনেছে। কিন্তু বার্সেলোনা ফরোয়ার্ডের যেটা এখনও অধরা সেই বিশ্বকাপ মারাদোনা জেতা ছাড়াও ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলেও ইতালির নাপোলির হয়ে বড় ট্রফি জিতেছেন। মারাদোনা ২৫ বছর বয়সে বিশ্বকাপ জিতেছিলেন। ব্রাজিলে মেসি তাঁর তৃতীয় বিশ্বকাপ খেলবেন ২৭ বছর বয়সে। চার বছর আগে বিশ্বকাপে তাঁর কোচ সম্পর্কে মেসির এ দিন সশ্রদ্ধ মন্তব্য, “মারাদোনার সঙ্গে আমার তুলনা হওয়াটা নিজের কাছে খুব মধুর অনুভূতি। কিন্তু বাস্তবে ব্যাপারাটাকে আমি মেনে নিতে পারছি না। মারাদোনার সঙ্গে আমার তুলনাই হয় না, যতক্ষণ না আমি বিশ্বকাপ জিততে পারছি। মারাদোনা দেশকে বিশ্বসেরা করেছেন। আমি মনে করি না, কোনও ফুটবলারের সত্যিকারের গ্রেট হিসাবে গণ্য হওয়া উচিত যতক্ষণ না সেই প্লেয়ার বিশ্বকাপ জিতছে।”
বার্সেলোনার হয়ে ক্লাব ফুটবলে ৪২৪ ম্যাচে ৩৫৪ গোল করা আর ২১টি ট্রফি জিতলেও মেসির আক্ষেপ, “তা সত্ত্বেও যতক্ষণ না আমি বিশ্বকাপ জিতছি নিজেকে সেরা বলে মানতে পারছি না। তবে আশা করি, ব্রাজিলে এ বার আমার সেই অভাব দূর করতে পারব। এ বার বিশ্বকাপ আর্জেন্তিনাই জিতবে।” আর্জেন্তিনা অধিনায়কের আরও সংযোজন, “বিশ্বকাপ জিততে পারলে যখন অবসর নেব, পিছন ফিরে তাকিয়ে মনে হবে, ফুটবলের সেরা পুরস্কারটা আমার আছে।”