তিকিতাকাকে ঘৃণা করি, বলে দিচ্ছেন গুয়ার্দিওলা

তাঁর সময় আবার বার্সেলোনায় দেখা গিয়েছিল সেই বিখ্যাত ‘পাসিং ফুটবল’। যেখানে বিপক্ষকে হারানোর স্ট্র্যাটেজি ছিল একটাই‘ফুটবল নিজের দখলে রাখো।’ যে স্ট্র্যাটেজিকে সব ফুটবল বিশেষজ্ঞরা এখন ‘তিকি-তাকা’ নামে চেনে। আশ্চর্যজনক ভাবে যাঁর হাত ধরে বর্তমান ফুটবলে এই তিকি-তাকার ফুল ফুটেছিল, সেই পেপ গুয়ার্দিওলাই ঘৃণা করছেন শব্দটাও শুনতে। এমনটাই ধরা পড়েছে তাঁর নতুন জীবনীতে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:৪০
Share:

তাঁর সময় আবার বার্সেলোনায় দেখা গিয়েছিল সেই বিখ্যাত ‘পাসিং ফুটবল’। যেখানে বিপক্ষকে হারানোর স্ট্র্যাটেজি ছিল একটাই‘ফুটবল নিজের দখলে রাখো।’ যে স্ট্র্যাটেজিকে সব ফুটবল বিশেষজ্ঞরা এখন ‘তিকি-তাকা’ নামে চেনে। আশ্চর্যজনক ভাবে যাঁর হাত ধরে বর্তমান ফুটবলে এই তিকি-তাকার ফুল ফুটেছিল, সেই পেপ গুয়ার্দিওলাই ঘৃণা করছেন শব্দটাও শুনতে। এমনটাই ধরা পড়েছে তাঁর নতুন জীবনীতে।

Advertisement

বিস্ফোরক গুয়ার্দিওলা বলেছেন, “আমি ঘৃণা করি তিকি-তাকা শব্দটা শুনলেও। তিকি-তাকা মানে হচ্ছে কোনও লক্ষ্য না রেখে শুধু পাস দেওয়া। আমার বার্সেলোনা দল এ রকম কোনও দিন খেলত না। ওদের লক্ষ্য ছিল গোল করার জন্য পাস দেওয়া।” কোচ থাকাকালীন নাকি বৈঠক করেও দলকে গুয়ার্দিওলা বুঝিয়েছিলেন, গোল না করতে পারলে বল পজেশনে রেখে কোনও লাভ নেই। জাভি,ইনিয়েস্তা,মেসিদের গুয়ার্দিওলা বলেন, “তিকি-তাকা খেলা মানে লক্ষ্যহীন ভাবে শুধু পাস দিয়ে যাওয়া। তোমাদের গোল করার জন্য পাস দিতে হবে। লোকে যা বলে ভুল বলে। বার্সা কোনওদিন তিকি-তাকা খেলে না। সব কিছুই গুজব। কোনও দলগত খেলায় শুধু আক্রমণের ঝড় তুলতে হবে। যাতে বিপক্ষ চাপে থাকে। তার পর গোল করো। যার সঙ্গে তিকি-তাকার কোনও সম্পর্ক নেই।”

তিকি-তাকা শব্দটাকে কটাক্ষ করা ছাড়াও আবার গুয়ার্দিওলার জীবনীতে ধরা পড়েছে ভবিষ্যতে স্যর অ্যালেক্স ফার্গুসনের সিংহাসনে বসতে পারেন তিনি। বায়ার্ন মিউনিখের কোচ হওয়ার আগে চেলসি, ম্যাঞ্চেস্টার সিটির মতো ক্লাবের আবেদন খারিজ করলেও, গুয়ার্দিওলা জানিয়েছেন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের কোচ হতে পারেন তিনি। ২০১১ চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে বসে ম্যান ইউ-শালকে লড়াই দেখেছিলেন গুয়ার্দিওলা। মাঠের আবহাওয়া দেখেই নিজের বন্ধু ও তাঁর জীবনীর লেখক পেরারনাউকে বায়ার্ন মিউনিখ কোচ বলেন, “খুব ভাল লাগল ম্যান ইউর ঘরের মাঠে বসে ম্যাচটা দেখে। ওদের সমর্থকরা পুরো নব্বই মিনিট পাশে ছিল দলের। ভবিষ্যতে এ রকম দলেরই কোচ হওয়ার ইচ্ছা আছে আমার।”

Advertisement

আর লিওনেল মেসি? যে ফুটবলারকে একার হাতে প্রতিভাবান এক তরুণ তারকার থেকে মহাতারকায় পরিণত করেছিলেন গুয়ার্দিওলা। আর তাঁর হাত ধরেই তো ফলস নাইনে এত বছর ধরে দাপট দেখিয়ে যাচ্ছেন মেসি। নিজের জীবনীতে সেই অভিনব ঘটনাও তুলে ধরেছেন গুয়ার্দিওলা যখন মেসিকে তিনি উইং থেকে সরিয়ে আনেন ফলস নাইনে। মরসুম ছিল ২০০৮-০৯। লা লিগার শেষ এল ক্লাসিকোর আগের রাতে হঠাত্‌ মেসিকে ফোন করে গুয়ার্দিওলা বলেন, “খুূব গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার দেখানোর আছে। প্লিজ, তুমি আসতে পারবে আমার অফিসে।” দ্বিধাবোধ না করেই ট্যাক্সি ধরে ক্যাম্প ন্যুতে গুয়ার্দিওলার অফিসে যান এলএম টেন। তিনটে বার্সা ম্যাচের ভিডিও দেখান মেসিকে। গুয়ার্দিওলা বোঝান, বিপক্ষ সব সময় চাইছে বার্সা মাঝমাঠের উপরে চাপ দিতে। যে কারণে অর্ধেক জায়গা ফাঁকা থাকছে তাঁদের মাঝমাঠ ও রক্ষণের মধ্যে। গুয়ার্দিওলা বলেন, “পাঁচ মিনিটে ওকে বোঝাই কোথায় আমরা মাত করে দিতে পারব বিপক্ষকে। ওকে বুঝিয়ে দিলাম এ বার থেকে এই ফাঁকা জায়গাটাই হবে মেসি-জোন। আর বাকিটা ইতিহাস।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন