দিবস-উৎসব সরিয়ে রেখে বাগানে ১২৫ পূর্তির চিন্তা

মোহনবাগান মাঠে শুধু ফুটবল খেলা হল। আর ক্লাবের জন্মস্থান যেখানে সেই উত্তর কলকাতায় হল উৎসব। মোহনবাগান দিবসের চিরাচরিত উৎসব দূরে সরিয়ে রেখে বরং অগস্টের শেষে বা সেপ্টেম্বরের শুরুতে রাষ্ট্রপতি, তারকা বিশ্বকাপার নিয়ে এসে ‘রত্ন’ দেওয়ার সলতে পাকাতে শুরু করেছেন ক্লাবকর্তারা। বাগানের ১২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে। তবে ক্লাবের ধাত্রীগৃহ অঞ্চল শ্যাম পার্কে ২৯ জুলাই পালনের এক অনুষ্ঠানে সবুজ-মেরুন জার্সি পরে দাপিয়ে ফুটবল খেলা পাঁচ প্রাক্তনসনৎ শেঠ, অশোক চট্টোপাধ্যায়, প্রণব গঙ্গোপাধ্যায়, সুব্রত ভট্টাচার্য এবং প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্রীড়ারত্ন পুরস্কার দেওয়া হল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৪ ০২:০১
Share:

সংবর্ধিত পাঁচ। বাঁ দিক থেকে সনৎ শেঠ, প্রণব গঙ্গোপাধ্যায়, সুব্রত ভট্টাচার্য, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় ও অশোক চট্টোপাধ্যায়। মঙ্গলবার শ্যাম পার্কে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস

মোহনবাগান মাঠে শুধু ফুটবল খেলা হল। আর ক্লাবের জন্মস্থান যেখানে সেই উত্তর কলকাতায় হল উৎসব।

Advertisement

মোহনবাগান দিবসের চিরাচরিত উৎসব দূরে সরিয়ে রেখে বরং অগস্টের শেষে বা সেপ্টেম্বরের শুরুতে রাষ্ট্রপতি, তারকা বিশ্বকাপার নিয়ে এসে ‘রত্ন’ দেওয়ার সলতে পাকাতে শুরু করেছেন ক্লাবকর্তারা। বাগানের ১২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে। তবে ক্লাবের ধাত্রীগৃহ অঞ্চল শ্যাম পার্কে ২৯ জুলাই পালনের এক অনুষ্ঠানে সবুজ-মেরুন জার্সি পরে দাপিয়ে ফুটবল খেলা পাঁচ প্রাক্তনসনৎ শেঠ, অশোক চট্টোপাধ্যায়, প্রণব গঙ্গোপাধ্যায়, সুব্রত ভট্টাচার্য এবং প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্রীড়ারত্ন পুরস্কার দেওয়া হল।

যদিও দু’টো অনুষ্ঠানেই ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। আলোর মালায় সেজে ওঠা বাগান-তাঁবুতে আধা উৎসবে শামিল হলেন বহু প্রাক্তন ফুটবলার, চিত্রতারকা, স্কুলছাত্র, নার্সারি ফুটবলার ও ক্রীড়া সাংবাদিক। তিনটি ম্যাচ হল। সব কর্তাই হাজির সেখানে। কোনও ক্ষোভ বা বিক্ষোভের আঁচ ছিল না। শুধুই খেলার আনন্দে ভেসে যাওয়া। যা দেখে ক্লাবের একদা ডায়মন্ড কোচ অমল দত্তের মন্তব্য, “ভাল লাগছে মোহনবাগানে এসে।”

Advertisement

কিন্তু ক্লাবের কর্মসমিতির সদস্য অতীন ঘোষের উদ্যোগে যে অনুষ্ঠান হল শহরের উত্তরে, সেখানে উথলে উঠল তীব্র ক্ষোভ। সুব্রত ভট্টাচার্য তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন বর্তমান ক্লাব কর্তাদের। “সবাই ক্লাবটা নিয়ে ব্যবসা করছে। ক্লাব চালানোর কোনও পদ্ধতি নেই। আজই উচিত ছিল ক্লাবের কিছু করার,” বলে দিলেন বাগানের ঘরের ছেলে। আর প্রণব গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “ক্লাব থেকে আজ পর্যন্ত সম্মান পাইনি।” সাংসদ-ফুটবলার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় আবার বললেন, “শিবদাস-বিজয়দাস সহ শিল্ডজয়ী এগারো জনের জন্য সাংসদে যাতে সম্মান দেওয়া হয় সেই চেষ্টা করব।”

ময়দানে বাগান-তাঁবুতে শ্যাম থাপা থেকে উলগানাথন, শিবাজি বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে প্রদীপ চৌধুরী, বিদেশ বসু, মানস ভট্টাচার্য, সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়-সহ বহু প্রাক্তন হাজির ছিলেন। ছিলেন অমল দত্তও। বাগানের নতুন তৈরি গ্যালারিতে বসে তিনটি ম্যাচ দেখে দর্শকদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। তিনটি ম্যাচে জেতে বাগানের নার্সারি টিম, প্রাক্তনদের নিয়ে তৈরি প্রেসিডেন্ট একাদশ ও ক্রীড়া সাংবাদিক ক্লাব।

ভূপেন চন্দ্র অ্যাভিনিউয়ের অনুষ্ঠান অবশ্য ছিল বক্তৃতায় ভারী। ক্লাবের আঁতুড়ঘরে অমর একাদশের মূর্তির সামনে শোভাযাত্রা শেষ হওয়ার আগে মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক, রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রী, প্রাক্তন ফুটবলার সবাই যে যা পেরেছেন বলে গিয়েছেন। কখনও নিজেদের সাফল্যের কথা। কখনও ভারতীয় ফুটবলের উন্নতির কথা। মাঝেমধ্যে বাগান-কর্তাদের গালমন্দ করেছেন কেউ কেউ। ফলে প্রথম ভারতীয় দল হিসাবে বাগানের আইএফএ শিল্ড জয়ের ১০৩ বছরের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক সভার মতো হয়ে যায়।

বাগান-কর্তারা অবশ্য শ্যামবাজার সংলগ্ন অনুষ্ঠান নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। ক্লাবের সহ সচিব সৃঞ্জয় বসু বললেন, “রাষ্ট্রপতি, মুখ্যমন্ত্রীর সময় চেয়ে নিয়ে বড় অনুষ্ঠান করব নেতাজি ইন্ডোরে। চেষ্টা চলছে বিশ্ব ফুটবলের নামী কোনও তারকা আনার। এ ছাড়াও একটা ফুটবল ম্যাচ করার কথা ভাবছি আমরা। কয়েক দিনের মধ্যেই সব ঠিক হয়ে যাবে।”

এ বছরের সেপ্টেম্বরেই ক্লাবের নির্বাচন। ১২৫ বছর পূর্তি উৎসব তাই বড় মাপের করতে চাইছেন বাগানের বর্তমান কর্তারা। দেখার তাঁরা কতটা সফল হন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন