দলকে জিতিয়ে বিতর্কে জড়ালেন ক্রুল

কোস্টারিকার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত সময়ের একেবারে শেষ মিনিটে মোক্ষম চাল চেলেছিলেন লুই ফান গল। নিয়মিত গোলকিপার জ্যাসপার সিলেসেনকে তুলে নিয়ে টিম ক্রুলকে নামানোটা অনেকের কাছেই বিস্ময়কর ঠেকেছিল। এমনকী চমকে গিয়েছিলেন সিলেসেনও। একমাত্র মানসিক প্রস্তুতি নেওয়া ছিল ক্রুলের। যিনি কোয়ার্টারফাইনাল যুদ্ধ জেতাতে রনাঙ্গণে ঠিক কোন পরীক্ষিত অস্ত্রটা প্রয়োগ করবেন, ভেবে রেখেছিলেন সেটাও।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৪ ০৩:৫১
Share:

কোস্টারিকার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত সময়ের একেবারে শেষ মিনিটে মোক্ষম চাল চেলেছিলেন লুই ফান গল। নিয়মিত গোলকিপার জ্যাসপার সিলেসেনকে তুলে নিয়ে টিম ক্রুলকে নামানোটা অনেকের কাছেই বিস্ময়কর ঠেকেছিল। এমনকী চমকে গিয়েছিলেন সিলেসেনও। একমাত্র মানসিক প্রস্তুতি নেওয়া ছিল ক্রুলের। যিনি কোয়ার্টারফাইনাল যুদ্ধ জেতাতে রনাঙ্গণে ঠিক কোন পরীক্ষিত অস্ত্রটা প্রয়োগ করবেন, ভেবে রেখেছিলেন সেটাও।

Advertisement

“আমি ওদের উপর মনস্তাত্বিক চাপ তৈরি করব বলে ঠিকই করে রেখেছিলাম,” বলেছেন ক্রুল। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে নিউকাসল গোলের প্রহরী এর পর যোগ করেছেন, “পেনাল্টি বাঁচাতে গিয়ে আগেও এটা করে আমি সফল হয়েছিলাম। ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডকে বলেছিলাম, আমি জানি তুমি কী ভাবে শট মারবে। আর তাতেই ও চাপে পড়ে যায় আর আমি পেনাল্টিটা সেভ করি। কোস্টারিকানদের বিরুদ্ধে সেই একই কৌশল খেটে গেল দেখে দারুণ আনন্দ হচ্ছে!”

সালভাদরের এরিনা ফন্তে নোভায় কোস্টারিকা যখন প্রথম পেনাল্টিটা নিতে যাচ্ছে, তখন থেকেই ছ’ফুট চার ইঞ্চির ক্রুল গোলের সামনে লাফালাফি করার পাশাপাশি এগিয়ে এসে বার বার প্রতিপক্ষের শুটারদের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে থাকেন। কী বলছিলেন ক্রুল? পরে জানা যায়, প্লেয়ার কিক নিতে আসার আগেই ক্রুল কখনও ডান দিকে, কখনও বাঁ দিকে হেঁটে যাচ্ছিলেন। তারপর এগিয়ে এসে প্রতিপক্ষকে বলতে থাকেন, “আমি জানি তুই কোন দিকে মারবি। তোর শট ঠিক বাঁচিয়ে দেব।” তবে প্লেয়ার শট মারার সময় প্রত্যেকবারই হেঁটে যাওয়া প্রান্তের বিপরীত দিকে ঝাঁপ মারেন ক্রুল। এবং দেখা যায়, পাঁচ বারই ঠিক দিকে ঝাঁপ মেরেছিলেন তিনি। আটকে দেন দুটো শট।

Advertisement

সেই আচরণের ব্যাখ্যা দিয়ে ক্রুল পরে বলেছেন, “গ্রিসের বিরুদ্ধে পেনাল্টিগুলো নেওয়ার সময় কোস্টারিকার প্লেয়ারদের আমি খুব মন দিয়ে স্টাডি করেছিলাম। বুঝেছিলাম, ওদের ঠেকাতে হলে মানসিক চাপে ফেলতেই হবে। যে কারণে ওদের মনে ভয় ধরানোর চেষ্টায় মাইন্ডগেম শুরু করি।” তবে ক্রুল যেটাকে মনস্তাত্বিক লড়াই বলে দাবি করেছেন, সেটা নিয়েই একটা মহলে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে তাঁর। সমালোচকেরা বলছেন, পেনাল্টি শুট আউটের সময় ক্রুল যে বাড়াবাড়ি আগ্রাসনটা দেখিয়েছেন সেটা ফুটবলে কোনও অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না। তাঁদের বক্তব্য, ফুটবল মাঠে গেমসম্যানশিপ আর চোট্টামির মাঝখানে খুব সুক্ষ্ম একটা সীমারেখা থাকে। ক্রুল দলকে জেতাতে গিয়ে সেই রেখাটার পরোয়াই করেননি।

এই সমালোচনা অবশ্য গায়ে মাখতে একদম নারাজ ক্রুল। যাঁকে ম্যাচের আগেই ডাচ দলের গোলকিপিং কোচ ফ্রাঞ্জ হোয়েক বলে দিয়েছিলেন, শেষ মুহূর্তে দরকার হলে তোমাকে কিন্তু বদলি হিসাবে নামতে হবে। গোলকিপারের দাবি, তিনি মোটেই বাড়াবাড়ি করেননি। বলেছেন, “আমাকে একটা নির্দিষ্ট দায়িত্ব দিয়ে মাঠে পাঠানো হয়েছিল। দলকে জেতানোর জন্য অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক না হয়েও যতদূর যা করা সম্ভব, চেষ্টা করে গিয়েছি।”

নাম টিমথি মাইকেল ক্রুল

বয়স: ২৬
জন্ম: হেগ, নেদারল্যান্ডস
উচ্চতা: ৬ ফুট ৪ ইঞ্চি
বতর্মান ক্লাব: নিউকাসল ইউনাইটেড
লোনে খেলেছেন: ফালকির্ক, কার্লাইল ইউনাইটেড-এ
জাতীয় দল: নেদারল্যান্ডস (৭ ম্যাচ খেলে একটাও গোল খাননি)
জাতীয় দলে প্রথম ম্যাচ: ব্রাজিল ফ্রেন্ডলি, ৪ জুন ২০১১

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন