এ বারের এশিয়া কাপের পরিসংখ্যান বলছে, টুর্নামেন্টের সেরা পাঁচ বোলারের মধ্যে তিন জন ভারতীয়। অথচ সেরা পাঁচ ব্যাটসম্যানের তালিকায় ভারতের কেউ নেই। এটা নিয়ে ভাল ভাবে চিন্তাভাবনা করা দরকার।
বিরাট কোহলি তো বটেই, মনে হয় শিখর ধবন, রোহিত শর্মাও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে নিশ্চিত জায়গা পাবে। এক সপ্তাহের কিছু বেশি সময় পরে ওই একই দেশে হবে টুর্নামেন্টটা। বাংলাদেশের উইকেটের কথা মাথায় রেখে যুবরাজ সিংহ বা সুরেশ রায়না, বা ওদের দু’জনকেই ব্যাটিং লাইন আপে ফেরানো দরকার। তা হলে সব মিলিয়ে কী দাঁড়াল? ভারতীয় ক্রিকেট কি এক পা এগোল, না দু’পা পিছিয়ে গেল?
আসুন, মরসুম শুরুর সময়টায় ফিরে যাই। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে একটা টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন করেছিল যুবরাজ। তার পর অবশ্য জনসনের বিরুদ্ধে আর দক্ষিণ আফ্রিকায় ওকে নড়বড়ে দেখিয়েছে। ও যে এখনও ক্রিকেটটা উপভোগ করছে, সেটা বোঝাতে হবে যুবরাজকে। অস্ট্রেলিয়া বা দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ওর শরীরী ভাষা দেখে যেটা মনে হয়নি। এ বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ যুবরাজের সবচেয়ে বড় সুযোগ হতে পারে। দক্ষিণ আফ্রিকা আর নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুটো ওয়ান ডে সিরিজের পরে সুরেশ রায়নার উপরও নির্বাচকেরা আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। এশিয়া কাপ দলে চেতেশ্বর পূজারার সুযোগ পাওয়ার সেটাই একমাত্র কারণ।আমাদের ব্যাটসম্যানদের জন্য এই বছরটা একটা অগ্নিপরীক্ষা হতে চলেছে। ২০১৫ বিশ্বকাপ শেষ হওয়া পর্যন্ত প্রায় চার মাস মিচেল জনসন ওদের পিছনে পড়ে থাকবে। একই ভাবে, ২০১১ সফরের স্মৃতি ইংল্যান্ড টিমের কাছে যথেষ্ট স্পষ্ট। তাই ওরা ভালই জানবে ভারতের বিরুদ্ধে কী কী স্ট্র্যাটেজি নিতে হবে। ব্যাটিংয়ে কিছু বদল আনলে সেটা কি খুব তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে যাবে?
এখনও আমরা পূজারার ব্যাপারে কিছুই জানি না। তিন ‘আর’: রোহিত, রাহানে আর রায়ডুই সব সমালোচনার কেন্দ্রে। তবে মনে রাখতে হবে, এই টুর্নামেন্টে কিন্তু রাহানে আর রায়ডু বেশ ভাল খেলেছে। ওদের দু’জনেরই স্ট্রাইক রেট বেশ ভাল ছিল। আর একটা কথা বলে নেওয়া দরকার যে, ওরা দু’জন মিলে এখন পর্যন্ত চল্লিশের কম ওয়ান ডে খেলেছে।
তাই বলছি, এখন পূজারার উপর লগ্নি করাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। টিমটা জিতলে তবেই তো উইনিং কম্বিনেশন বদলানো হয় না। যে টিম হারছে, তাতে বদল করা হবে না কেন? আর আমাদের বোলিং যখন এত ভাল করছিল, তখন তো সেখানে এক জনের জায়গায় ঈশ্বর পাণ্ডেকে একটা সুযোগ দেওয়াই যেত। শামির সত্যিই বিশ্রামটা প্রাপ্য ছিল। আরে বাবা, ম্যাচ তো ছিল আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে! সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে না?
অর্থহীন স্ট্র্যাটেজির ফলও অর্থহীন হয়। তারুণ্যে লগ্নি করো। নিজেদের মনোভাব ঠিকঠাক করে নেওয়ার সুযোগ দাও তাদের। তার পরেও যদি তারা সফল না হতে পারে, তা হলে তখন তাদের বাদ দাও। হালফিলে যুবরাজ আর রায়নার সঙ্গে যেটা করা হল। এক বছর পরে অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বকাপ। সেটার কথা মাথায় রেখে এখন তারুণ্যের উপর লগ্নি করে ওদের তৈরি করাটা সত্যিই দরকার। বিশ্বকাপ শুরু হতে এক বছরের কিছু কম সময় বাকি। তার মধ্যে প্রথম এগারোয় দু’তিনটে নতুন মুখ দেখলে অবাক হবেন না।