দিল্লির বিরুদ্ধে দাপটে খেলে জয়টা আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে। এটা ঠিক যে, প্লে অফে যেতে চাইলে সামনের কয়েক সপ্তাহে দিল্লি ম্যাচের মতো আরও বেশ কয়েকটা মাস্ট উইন ম্যাচ খেলতে হবে। কিন্তু দিল্লির বিরুদ্ধে জেতার পর টুর্নামেন্টের বাদবাকি চ্যালেঞ্জগুলোর জন্য আমরা তৈরি।
আজ অবশ্য সবার চোখ পঞ্জাবের দিকে। এই মুহূর্তে কিংস ইলেভেন যে ভাবে খেলছে, তাতে ওদের নিয়ে এই মাতামাতিটা স্বাভাবিকও। সময় দারুণ যাচ্ছে ওদের। টানা জিতে চলেছে। মাঠে নেমে যা করছে সেটাই খেটে যাচ্ছে। পঞ্জাবের হয়ে রান তোলার সিংহভাগ দায়িত্ব ভাগ করে নিচ্ছে গ্লেন ম্যাক্সওয়েল আর ডেভিড মিলার। চোখ ধাঁধানো ব্যাটিং করছে দু’জনে, বিশেষ করে ম্যাক্সওয়েল।
এমনিতে আমার নীতি হল, টুর্নামেন্ট চলার সময় অন্য টিমের খেলা আমি দেখি না। অভিজ্ঞতা বলে, অন্যরা কে কী করছে তা নিয়ে মাথা ঘামানোর বদলে নিজের টিম আর নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে খাটলে আখেরে অনেক বেশি লাভবান হওয়া যায়। কিন্তু ম্যাক্সওয়েল পর পর ম্যাচে যা সব কাণ্ড ঘটিয়ে চলেছে, তাতে ওর ব্যাটিং না দেখা অসম্ভব! যে চ্যানেলই ঘোরাই না কেন, সেখানেই ওর ব্যাটিংয়ের একটা না একটা রিপ্লে চলছে! না দেখে থাকে কার সাধ্য!
তবে পঞ্জাবের এই ধুন্ধুমার ব্যাটিং স্টাইলের একটা নেতিবাচক দিকও আছে। আর সেটা হল, বড় ঝুঁকি নেওয়া। প্রত্যেক বলে মেরে খেলতে পারলে এক দিকে যেমন বড় রান তুলতে পারার ‘হাই রিওয়ার্ড’ থাকে, তেমনি বেপরোয়া চালাতে গিয়ে উইকেট দিয়ে আসার ‘হাই রিস্ক’-ও থাকে। আজ আমাদের এই দ্বিতীয় সম্ভাবনাটাই কাজে লাগাতে হবে। ওদের ব্যাটসম্যানদের ফাঁদে ফেলে ভুল করতে বাধ্য করানোর মতো বোলিং বৈচিত্র কিন্তু আমাদের আছে। বিশেষ করে কমলা টুপির ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে আমাদের সুনীল নারিনের একটা রক্তচাপ বাড়ানো পিচ-যুদ্ধ দেখার জন্য মুখিয়ে আছি।
সুনীলকে আমরা সানি বলে ডাকি। বল হাতে অসম্ভব ধূর্ত বলেই সানি এত বড় মাপের স্পিনার। ওর বল বুঝতে পারা ভীষণ কঠিন। তার সঙ্গে ব্যাটসম্যানকে রান করার সুযোগ ও প্রায় দেয় না বললেই চলে। টি-টোয়েন্টিতে তো ওকে দেখে নিয়ে খেলার সময়টুকুও পাওয়া যায় না। তাই সানির বিরুদ্ধে আগে বহুবার ব্যাট করার অভিজ্ঞতা থাকা ব্যাটসম্যানও ওকে খেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়ে। সানির মহড়া নেওয়ার একমাত্র উপায়, ও বল করতে আসার সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণে চলে গিয়ে পাল্টা চাপ তৈরি করা। কিন্তু মনে রাখতে হবে, কাজটা অসম্ভব ঝুঁকিপূর্ণ।
ম্যাক্সওয়েল-মিলারের রোশনাইয়ে পঞ্জাব দলে আরও কয়েকজনের ধারাবাহিক ভাল পারফরম্যান্স ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। কিন্তু দলকে জেতানোয় এগুলোর গুরুত্ব কোনও অংশে কম নয়। নিলামে পঞ্জাব খেলোয়াড় নিয়েছিল খুব বুদ্ধি করে। যে কারণে ম্যাক্সওয়েল-মিলারের এক্স ফ্যাক্টরের আড়ালে একটা দারুণ জমাট টিম আছে ওদের হাতে।
তবু বলব, মাঠে নেমে আজ খেলাটা হবে এগারো বনাম এগারোর। আমরা যে রণকৌশল ছকে নিয়ে নামছি, সেটা ঠিকঠাক কাজে লাগাতে পারলে আমি নিশ্চিত, আজ আমরাই জিতব!