সাফল্যহীন অস্ট্রেলিয়া সফরের পর বিশ্বকাপের এই জয় ভারতীয় সমর্থকদের কাছে নিশ্চয়ই প্রত্যাশিত ছিল না। তবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জেতার পর আমি আগের কলামে লিখেছিলাম, ওই পারফরম্যান্স দেখাতে পারলে ভারত দক্ষিণ আফ্রিকাকেও হারাবে। রবিবার ভারতের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স মনে দাগ কাটার মতোই। শিখর ধবনের একক দক্ষতা আর ভারতীয় বোলিংয়ে উন্নতি তো অবশ্যই এই জয়ের পিছনে রয়েছে। তবে ওদের দলগত উদ্যোগের প্রশংসাও করতে হবে।
দক্ষিণ আফ্রিকাকে অনায়াসে হারানোর পর ভারত অন্য দলগুলোর উদ্দেশ্যে স্পষ্ট বার্তা দিল যে, ওরা বিশ্বকাপটা ফিরিয়ে নিতেই এসেছে। বিশ্বকাপের আগে ওদের ফর্ম নিয়ে প্রচুর সমালোচনা হলেও এখন ছবিটা একদম অন্য রকম। পরপর দুটো ম্যাচে জয় মানে ওরা নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছে। ব্যাটসম্যান, বোলাররা ফর্মে চলে এসেছে। এ রকম পরিস্থিতি থেকেই তো আত্মবিশ্বাস বাড়ে। বোলাররা ছন্দে ফিরে এসেছে দেখলাম। যে রকম লাইন, লেংথ রেখে বল করছে ওরা, উইকেট শিকারের জন্য যে ভাবে ঝাঁপাচ্ছে, তাতে ভারতীয় সমর্থকদের এখন অনেক কিছু পাওয়ার আছে বলেই মনে হচ্ছে।
বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সপ্তাহেই কিন্তু বেশ কয়েকটা নজরকাড়া পারফরম্যান্স চোখে পড়ল। তার মধ্যে বিরাট কোহলি, শিখর ধবন, লেন্ডল সিমন্স আর ডেভিড মিলারের সেঞ্চুরি যেমন রয়েছে তেমনই রয়েছে অসাধারণ কিছু বোলিং পারফরম্যান্সও।
কারা কোয়ার্টার ফাইনালে উঠবে— এই জায়গা থেকে তার আগাম আন্দাজ করা কঠিন। তবে মনে হচ্ছে ‘বি’ গ্রুপ থেকে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং আয়ারল্যান্ড নক আউটে পৌঁছবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে আইরিশরা বুঝিয়ে দিল যে, ওরা ছোট ক্রিকেট খেলিয়ে দেশের তকমাটা ঝেড়ে ফেলতে চাইছে। ওদের আট জন প্লেয়ার কাউন্টি ক্রিকেটে খেলে বলে ওদের ক্রিকেটে অভিজ্ঞতাও কম নয়। বিশ্বকাপে নিজেদের জায়গা গুছিয়ে নেওয়ার প্রতিজ্ঞা নিয়েই যেন নেমেছে ওরা। এর আগেও তো ইংল্যান্ড, পাকিস্তানের মতো বড় দলকে হারানোর ইতিহাস রয়েছে আয়ারল্যান্ডের। এখন আরব আমিরশাহি, জিম্বাবোয়ে আর বিধ্বস্ত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জিততে পারলেই কোয়ার্টার ফাইনালে চলে যাবে ওরা। যেটা হলে আমি অবাক হব না।
এ দিকে, ওয়েস্ট ইন্ডিজও কিন্তু প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের কাছে হারের ধাক্কা সামলে উঠে দাঁড়িয়েছে। পাকিস্তানকে হারিয়ে ক্যারিবিয়ানরা আবার লড়াইয়ে ফিরেছে। পাকিস্তানকে হয়তো শেষ আটে উঠতে গেলে বাকি চারটে ম্যাচই জেতা ছাড়া উপায় নেই। আর সেটা হওয়ারই ছিল। পাঁচটা ক্যাচ ফস্কে কোনও ম্যাচ জেতার আশা করা যায় না! এ বারের বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ফিল্ডিংই সবচেয়ে জঘন্য লাগছে আমার। টুর্নামেন্টে লড়াইয়ে থাকতে হলে ওদের ব্যাটিং আর বোলিংয়েও প্রচুর উন্নতি করতে হবে।