মারণ গ্রুপ জমিয়ে দিল কোস্টারিকা

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৪ ০৪:১৮
Share:

দুরন্ত হেডে দেশের হয়ে প্রথম গোল দুয়ারতের।

উরুগুয়ে-১ : কোস্টারিকা-৩
কলম্বিয়া-৩ : গ্রিস-০

Advertisement

উরুগুয়ের একটা ছেড়ে তিন জন দিয়েগো গত বিশ্বকাপে সোনার বল জয়ী ফোরলান আর দুই সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার আটলেটিকো মাদ্রিদের গডিন এবং ওয়েস্ট ব্রমের লুগানো। লাতিন আমেরিকান ফুটবলে দিয়েগো নামেরই যেন আলাদা তাৎপর্য। ওটা যে মারাদোনার প্রথম নাম!

Advertisement

নামেই ডিফেন্ডার। উরুগুয়ের প্রায় প্রতিটা আক্রমণে কোস্টারিকার অ্যাটাকিং থার্ডে গডিন-লুগানোর বিপজ্জনক উপস্থিতি। ১৬ মিনিটে গতবারের সেমিফাইনালিস্টের বাতিল গোলটাও ছিল লুগানোর চকিত ক্রস থেকে গডিনের। ছ’মিনিট পরেই কাভানির পেনাল্টি গোলে উরুগুয়ের এগিয়ে যাওয়ার পেনাল্টিও লুগানোর অর্জিত। তাঁকে বক্সে জুনিয়র দিয়াজ পিছন থেকে টেনে ধরেছিলেন।

কিন্তু এক দিয়েগোকে (ফোরলান) সাহায্য দিতে অন্য দুই দিয়েগোর বারবার আক্রমণে ওঠাই শেষমেশ যেন কাল হল গত উরুগুয়ের! বিপক্ষের প্রতি-আত্রমণে নিজেদের জায়গায় ফিরতে পারছিলেন না দুই ডিফেন্ডার। দ্বিতীয়ার্ধের গোড়ার দিকে তিন মিনিটের মধ্যে কোস্টারিকার দু’টো গোলের সময়ই স্কোরার ক্যাম্পবেল আর দুয়ার্তেকে মার্ক করতে ব্যর্থ গডিন বা লুগানো। তবে দিনের সেরা গোলটা ৮৩ মিনিটে পরিবর্ত নেমে পরের মিনিটেই করেন মার্কো উরেনা।

ব্রাজিলে ৩২ দেশের মধ্যে সবচেয়ে পুরনো কোচ উরুগুয়ের অস্কার তাবারেজ। সেই ২০০৬ থেকে দায়িত্বে আছেন। কিন্তু তাঁর বিপুল অভিজ্ঞতাও কোস্টারিকার বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে জয়ের উজ্জ্বল রেকর্ড ম্লান করতে পারেনি। এই নিয়ে চার বারের মধ্যে তিন বারই বিশ্বকাপে তাদের প্রথম ম্যাচে জিতল কোস্টারিকা। ১৯৯০, ২০০২, ২০১৪। এবং স্কটল্যান্ড, চিনের চেয়ে উরুগুয়ে-বধ অনেক বেশি কৃতিত্বের। তার চেয়েও বড় কথা, এই প্রথম কোনও লাতিন আমেরিকান দলকে বিশ্বকাপে হারাল তারা। এর আগে এ রকম তিনটে ম্যাচে কোস্টারিকা ন’গোল খেয়েছিল।


ক্যাম্পবেলের উৎসব।

দলে সত্যিকারের বিশ্বমানের ফুটবলার বলতে পিএসভি আইন্দোভেনের ব্রায়ান রুইজ আর আর্সেনালের জোয়েল ক্যাম্পবেল। কিন্তু সেই দুই ফরোয়ার্ডের যুগলবন্দি আটকাতেই হিমসিম তাবারেজের দল। বড় চেহারার শক্তিশালী ক্যাম্পবেলকে এক-এক সময় আটকাতে চার জন ডিফেন্ডার লাগছিল। তাতেও ফোর্তালেজার মাঠে গ্রুপ অফ ডেথে আরও মৃত্যু-গহ্বরে ঢুকে পড়া আটকাল কই উরুগুয়ের! এই ধাক্কার পর সুয়ারেজ কি সুস্থ হয়ে ফিরে ইংল্যান্ড, ইতালির মতো হেভিওয়েটের বিরুদ্ধে উরুগুয়েকে উতরোতে পারবেন? এ বারের বিশ্বকাপে প্রথম লাল কার্ড দেখার লজ্জাও লেগে থাকল উরুগুয়ের ম্যাক্সি পেরেরার গায়ে!

দিনের প্রথম ম্যাচের আগে বেলো হরাইজন্তের মাঠের গ্যালারি দেখে যেন মনে হচ্ছিল ব্রাজিল খেলতে নামছে! চার দিক হলুদ আর হলুদ। কিন্তু এটা কলম্বিয়ার হলুদ জার্সি। তবে তাদের খেলাতেও পূর্ণাঙ্গ লাতিন আমেরিকান টাচ।

পাঁচ মিনিটেই কলম্বিয়ার ইপিএল প্লেয়ার (অ্যাস্টন ভিলায় খেলেন) পাবলো আরমেরো-র বক্সের মাথা থেকে বাঁ-পোস্টে নেওয়া ডান পায়ের দুরন্ত শটে গোলটার ঠিক আগে গুতিয়েরেজ একটা চমৎকার ফলস দেন। তাতেই কুয়াদ্রাদোর রাইট উইং থেকে করা ক্রসটায় আরও খারাপ ভাবে কেটে যায় গ্রিস ডিফেন্স। টিপিক্যাল লাটিন আমেরিকান টাচ!

কলম্বিয়া ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে পাঁচ নম্বরে ছিল। চলতি মাসেও সামান্য নেমে আটে আছে। কোচ হোসে পেকারম্যানের মতো ধুরন্ধর আর্জেন্তিনীয়। কলম্বিয়া দলটার হৃদপিণ্ড রাদামেল ফালকাও চোটের জন্য এই বিশ্বকাপেই নেই। যদিও পেকারম্যান দলের একতা বাড়াতে ব্রাজিলে মোনাকো-সুপরাস্টারকে নিয়ে এসে টিম হোটেলে রেখেছেন। এ দিন ম্যাচ শুরুর আগে একগাল হেসে ফালকাও সব সতীর্থের সঙ্গে মাঠের ধারে হাত মিলিয়ে গেলেন। তার কয়েক মিনিটের মধ্যে হিগুয়েতা-ভালরামার দেশের প্রথম গোল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে কলম্বিয়ার দ্বিতীয় গোলটা তিন টাচে। আগুইলার-রড্রিগেজ হয়ে চকিত ফ্লিকে গোল করে যান গুতিয়েরেজ। ইনজুরি টাইমে রড্রিগেজের গোলটা যেন ম্যাচের সেরার কাছে পোয়েটিক জাস্টিস হয়ে থাকল। এত ভাল খেলেও স্কোর লাইনে নাম থাকবে না!

ছবি: এএফপি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন