আংশিক টুর্নামেন্ট হওয়া নিয়ে সমস্যায় বাতিল দক্ষিণ আফ্রিকা

মরুশহরে আইপিএল অন্য চ্যালেঞ্জ, দাবি দুর্নীতিদমন কর্তার

ফের মরু শহরে ফিরছে ভারতীয় ক্রিকেট। এ বার আইপিএলের বেশে। গত ১৪ বছরে যে দেশে ভারতীয় ক্রিকেট দল দু’টির বেশি ম্যাচ খেলেনি। ক্রিকেট-জুয়া ও গড়াপেটার কালো ছায়া এড়ানোর জন্য যেখানে দল পাঠানোরই বিরোধী ছিল কেন্দ্রীয় সরকার, সেই আরব আমিরশাহিতে আইপিএলের ১৬টি ম্যাচ হবে, এই সিদ্ধান্ত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসল বোর্ডের দূর্নীতি দমন বিভাগের কর্তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৪ ০৪:২৮
Share:

ফের মরু শহরে ফিরছে ভারতীয় ক্রিকেট। এ বার আইপিএলের বেশে। গত ১৪ বছরে যে দেশে ভারতীয় ক্রিকেট দল দু’টির বেশি ম্যাচ খেলেনি। ক্রিকেট-জুয়া ও গড়াপেটার কালো ছায়া এড়ানোর জন্য যেখানে দল পাঠানোরই বিরোধী ছিল কেন্দ্রীয় সরকার, সেই আরব আমিরশাহিতে আইপিএলের ১৬টি ম্যাচ হবে, এই সিদ্ধান্ত হওয়ার পর নড়েচড়ে বসল বোর্ডের দূর্নীতি দমন বিভাগের কর্তারা।

Advertisement

বুধবার বোর্ড জানিয়ে দিল, আইপিএল সেভেনের প্রথম দিকের ১৬টি ম্যাচ হবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। ১৬ থেকে ৩০ এপ্রিল এই ম্যাচগুলি হওয়ার পর আইপিএল সরে আসবে বাংলাদেশে। ১ থেকে ১২ মে সেখানে হওয়ার পর শেষ পর্যায়ের ম্যাচগুলি হবে ভারতে। যদিও মে-র শুরু থেকেই ভারতে আইপিএলের আসর বসাতে চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে আর্জি জানিয়েছে বোর্ড, কিন্তু সেই অনুমতি পাওয়ার সম্ভাবনা কম ধরে নিয়েই বাংলাদেশকে বিকল্প কেন্দ্র হিসেবে রাখা হল। ১ জুন ফাইনাল, এমনটাই ঠিক করে রেখেছে বোর্ড। অর্থাৎ ৩০ দিনে ৪৪টি ম্যাচ করার কঠিন কাজটাই এ বার করে দেখাতে হবে তাঁদের। বুধবার বিকেলে আইপিএল কমিশনের চেয়ারম্যান রঞ্জীব বিসওয়াল এই প্রসঙ্গে আনন্দবাজারকে বললেন, “কাজটা কঠিন ঠিকই। কিন্তু আমরা আশাবাদী এটা করা যাবে। আমাদের উদ্দেশ্য ভারতে যথাসম্ভব বেশি ম্যাচ করা।”

প্রাথমিক ভাবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিকল্প কেন্দ্র হিসেবে ধরা হয়েছিল। এমনকী বোর্ড প্রেসিডেন্ট এন শ্রীনিবাসনও চেয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকাতেই চলে যাক আইপিএল। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় কয়েকটি জায়গায়। যেমন, শোনা যাচ্ছে প্রধান স্পনসরদের আপত্তি। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকায় সংশ্লিষ্ট স্পনসরের বাজার সে রকম নেই বলে জানা গিয়েছে। ফ্র্যাঞ্চাইজিরা আবার চেয়েছিল, আইপিএলের অন্তত কিছুটা ভারতে হোক এবং বাকিটা উপমহাদেশের কাছাকাছি। সে জন্যই চলে এসেছে বাংলাদেশ এবং আমিরশাহির নাম। আংশিক আইপিএল দক্ষিণ আফ্রিকায় নিয়ে যাওয়া নিয়েও প্রচুর সমস্যা ছিল। টুর্নামেন্টের মাঝপথে পুরো ‘সেট আপ’ আফ্রিকা মহাদেশ থেকে ভারতে নিয়ে আসার ঝক্কিও নিতে চায়নি বোর্ড।

Advertisement

সপ্তম আইপিএল

• প্রথম পর্ব: ১৬-৩০ এপ্রিল, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, ১৬ ম্যাচ।

• দ্বিতীয় পর্ব: ১-১২ মে, বাংলাদেশ/ভারত

• তৃতীয় পর্ব: ১৩ মে-১ জুন, ভারত।

ক্রিকেট জুয়ার মক্কা বলে কুখ্যাত আমিরশাহিতে এমন একটা সময়ে আইপিএলকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, যখন আইপিএলের আকাশেও গড়াপেটার কালো মেঘ। তাই গোটা ব্যাপারটা নিয়েই বেশ চিন্তিত দুর্নীতি দমন বিভাগের প্রধান রবি সাওয়ানি। যদিও এ দিন মুম্বই থেকে ফোনে তিনি বললেন, “এই ব্যাপারটা সামলাতে কোনও সমস্যা হবে বলে মনে হয় না,” কিন্তু কার্যত মেনে নিলেন আমিরশাহিতে আইপিএল এই ব্যাপারটাই তাঁদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। বলেন, “প্রয়োজন হলে ওখানে আমরা আরও বেশি লোক নেব এবং তারাই দায়িত্ব নিয়ে কাজ করবে। এ ছাড়া ওখানকার স্থানীয় নিরাপত্তা বিভাগের সাহায্যও নিতে হবে আমাদের।”

মুদগল কমিশনের রিপোর্ট, আইসিসি-র দুর্নীতি দমন বিভাগের রিপোর্ট ও তাঁর নিজস্ব রিপোর্টের ভিত্তিতে এ বার যে বেশ কিছু নতুন পদক্ষেপ করতে চলেছে দূর্নীতি দমন বিভাগ, তাও জানিয়ে সাওয়ানি বলেন, “এ বার অনেক কিছুই আমরা করব, যা আগে করা হয়নি। যেমন এ বার প্রতি দলের সঙ্গে আমাদের বিভাগের অফিসাররা সবসময় থাকবেন। তাঁরা ওই দলের ক্রিকেটারদের উপর নজর রাখবেন। এ ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি নতুন পদক্ষেপ করা হবে। এগুলো গোপন থাকাই ভাল।”

কিন্তু ক্রিকেট জুয়ার মক্কায় নিয়ে যেতে হচ্ছে কেন আইপিএল?

বিসওয়াল বলেন, “এই ব্যাপারে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের মত নেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগই ওখানে আইপিএল করার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে। তা ছাড়া আমিরশাহির সরকার আমাদের যথেষ্ট নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক সাহায্য দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।” বাংলাদেশে দু’টি বড় মাপের টুর্নামেন্ট (এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ) হয়ে যাওয়ার পরপরই আইপিএলের জন্য সেখানকার মাঠ ও উইকেট তৈরি থাকবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে বলেই সেখানে আইপিএল সেভেন শুরু না করার সিদ্ধান্তের কথা জানান বিসওয়াল। বলেন, “ওখানে ওই সময় উইকেট তৈরি থাকবে না বলে জানিয়েছেন ওখানকার বাংলাদেশ বোর্ডের কর্তারা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন