এক নয়, এক জোড়া উইকেট। একটা পুরোদস্তুর গ্রিন টপ। অন্যটা আবার একটু ব্যাটিং-ঘেঁষা, যেখানে পরের দিকে টার্ন ধরতে পারে। ২৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে চলা বাংলা বনাম রেলওয়েজ ম্যাচে এমন দু’টো স্ট্রিপ দেওয়া হচ্ছে লক্ষ্মীরতন শুক্লদের। যা থেকে তাঁরা বেছে নেবেন যে কোনও একটা।
গ্রুপ টেবলের যা পরিস্থিতি, তাতে বাংলাকে কোয়ার্টার ফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে শেষ দু’টো ম্যাচে শুধু সরাসরি জিতলেই চলবে না, তাকিয়ে থাকতে হবে বাকিদের দিকেও। ৬ ম্যাচে মাত্র ১১ পয়েন্ট নিয়ে রঞ্জি টেবলে এখন সাত নম্বরে বাংলা। যে অবস্থায় রেল ম্যাচকে চরম গুরুত্বপূর্ণ বলে ধরা হচ্ছে।
রবিবার রাতে মুম্বই উড়ে যাওয়ার আগে দু’টো পিচ দেখে গেলেন সিএবি যুগ্ম-সচিব সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। পরে বললেন, “উইকেট নিয়ে আমি কিছু বলব না। টিম দেখে যে উইকেটে খেলা ঠিক মনে করবে, সেটাতেই খেলবে। তবে রেল ম্যাচটা ডু অর ডাই ম্যাচ। ছ’পয়েন্ট তুলতেই হবে।” তাঁকে আরও জিজ্ঞেস করা হয়, টিম ফিরলে তাদের কোনও পরামর্শ দেবেন কি না। উত্তরে সৌরভ বলেন, “আমি আর কী বলব? খেলতে তো হবে ওদের।”
মঙ্গলবার থেকে প্র্যাকটিস শুরু করে দিচ্ছে বাংলা। যে দিন আবার স্থানীয় ক্রিকেটের ম্যাচও আছে। সিএবি থেকে প্লেয়ারদের যোগাযোগ করে বলে দেওয়া হয়েছে যে, ম্যাচ খেললে ঠিক আছে। নইলে প্র্যাকটিসে আসতে হবে। আবার ওই একই দিনে রেল ম্যাচের দল নির্বাচনী বৈঠকও আছে। যেখানে টিমের দু’এক জন সিনিয়রকে সরিয়ে জুনিয়র রক্ত আমদানি করতে চাইছেন বাংলার নির্বাচকরা। তবে ২৯ জানুয়ারি থেকে কোচবিহার ট্রফির সেমিফাইনাল থাকায় (যেখানে বাংলা নামবে) জুনিয়রদের পাওয়া নিয়ে একটা জট দেখা গিয়েছে। শোনা গেল সৌরভ নাকি নির্বাচকদের বলেছেন যে, ব্যাপারটা নিয়ে তিনি দেখবেন।
কিন্তু কোন উইকেটে খেলা হবে শেষ পর্যন্ত? জানা গেল, টিমও বিভক্ত। কারও কারও মনে হচ্ছে, ছ’পয়েন্টের জন্য ঝাঁপাতে গেলে সেটা ব্যুমেরাং হয়েও ফিরে আসতে পারে টিমের কাছে। কারণ বাংলা হেরে গেলে তখন কোয়ার্টার ফাইনাল দূরে থাক, গ্রুপ সি-তে নামার আশঙ্কা প্রবল হয়ে উঠতে পারে। যা আদতে অবনমন। তাই কেউ কেউ মনে করছেন, দু’টো ম্যাচ জিতলেও যখন কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হবে না তখন এই বছরটা ছেড়ে দেওয়া ভাল। গ্রুপে থেকে গিয়ে পরের বছর চেষ্টা করা যেতে পারে। এখনও পুরোটাই প্রাথমিক ভাবনার স্তরে আছে।
তবে রক্ষণাত্মক ভাবনার পিছনে কারণ আরও একটা থাকতে পারে। যেটা টিমের কেউ বললেন না। রেল টিমে তো তিন জন বাঙালি আছেন।
অরিন্দম ঘোষ। অনুষ্টুপ মজুমদার। অর্ণব নন্দী। বাংলা থেকে ‘বিতাড়িত’ হলেও ইডেন উইকেট এঁরাও যে একটু-আধটু চেনেন!