তোমরাই ভরসা। দাভিস লুইজকে কি সেটাই বলছেন নেইমার।
ব্রাজিলের ছ’নম্বর বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন যাঁকে মূলকেন্দ্র করে ঘুরপাক খাচ্ছে, যার গোলের দিকে তাকিয়ে সমগ্র ব্রাজিল সমর্থককুল, সেই নেইমার দ্য সিলভা আবার নিজে তাকিয়ে তাঁর দলের ডিফেন্সের দিকে। ব্রাজিলের ‘ওয়ান্ডার কিড’ মনে করছেন, সেলেকাওয়ের রক্ষণ মজবুত থাকলে তবেই লুই ফিলিপ স্কোলারির দলের ড্রেসিংরুমে বিশ্বকাপ ঢোকার সম্ভাবনা সত্যিকারের বাড়বে। নেইমার দেখছেন, তিনি গোল করতে পারুন বা না-পারুন, তাঁর পিছনে ব্রাজিল ডিফেন্স সব সময় জমাট বেঁধে আছে।
মেক্সিকোর সঙ্গে ব্রাজিলের গোলশূন্য ড্রয়ে যতই চারদিকে গেল-গেল রব উঠুক, তিনি নেইমার কিন্তু মূল্যবান দু’পয়েন্ট খোয়ানোর মধ্যেও ইতিবাচকের সন্ধান পাচ্ছেন। “ওই ম্যাচে আমরা যেমন গোল করতে পারিনি, তেমনই আমাদের ডিফেন্স গোল খায়ওনি। যেটা প্রথম ম্যাচে প্রথমেই খেতে হয়েছিল। আমি তো মনে করি, ডিফেন্সের পুরো চেহারার মাপটা বরং মেক্সিকোর সঙ্গে ড্র ম্যাচেই বেশি বোঝা গিয়েছে, ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে তিন গোলে জেতা ম্যাচের অপেক্ষায়,” ফিফার সরকারি ওয়েবসাইটে বলেছেন নেইমার।
নেইমারের গোল করার দক্ষতার সঙ্গে তাঁর পুরনো ক্লাবের কিংবদন্তি পূর্বসুরি পেলের তুলনা পর্যন্ত অনেকে টানছেন। কিন্তু স্বয়ং নেইমারের মাথায় ব্রাজিল ডিফেন্স। তা হলে কি দানি আলভেজ, থিয়াগো সিলভা, দাভিদ লুইজ, মার্সেলোকে নিয়ে গড়া বিশ্বকাপের প্রথম দু’ম্যাচে ব্রাজিল রক্ষণ চিন্তায় ফেলেছে নেইমারকে? না। বরং নেইমারের কথায়, “আমাদের ডিফেন্সের ক্ষমতার উপর আমার অগাধ আস্থা। কারণ, আমাদের গোলের রাস্তার উৎস ওই ডিফেন্সই।”
এমনিতে ‘বিগ ফিল’-এর ব্রাজিল দলের চরিত্রটা একটু অন্য ধরনের। ব্রাজিলের চিরাচরিত আপন আনন্দে আক্রমণের রাস্তা থেকে ফুটবলারদের প্রিয় ‘ফেলেপাও’ দলকে সরিয়ে নিয়ে এসেছেন ব্যালান্সড ফুটবলে। রক্ষণ-আক্রমণের সুসম যোগসাজসে। ২০০২ বিশ্বকাপে রোনাল্ডো-রিভাল্ডো-রোনাল্ডিনহোকে নিয়ে গড়া স্কোলারির চ্যাম্পিয়ন দলের খেলাতে সেই ব্যাপারটার স্পষ্ট প্রমাণ ছিল। বারো বছর পর নেইমার সেটারই আদল চাইছেন। বলে দিচ্ছেন, “এ বার ব্রাজিলের সাফল্যের উপাদান আমার মতে লুকিয়ে রয়েছে আমাদের দলের ডিফেন্স লাইনের উপর।’ ব্রাজিলের দশ নম্বর জার্সির নতুন মহা-মালিক মনে করছেন, ঠিক এক বছর আগে কনফেডারেশনস্ কাপ থেকেই ব্রাজিল রক্ষণের প্রকৃত পরিমাপটা বোঝা যাচ্ছে। “আমাদের দলের খুব গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হল ডিফেন্স লাইন। এই বিভাগে আমরা গত বছর কনফেডারেশনস্ কাপ থেকেই ভাল করে আসছি।”
নেইমারের গোলের রাস্তা স্বয়ং নেইমারের মতে, তাঁর দলের ডিফেন্স থেকেই তৈরি হওয়া সম্ভব। “আমরা যখন গোল করতে পারছি না, তখনও আমাদের একেবারেই উচিত নয় ডিফেন্সে নেমে বসে থাকা। বরং আমাদের ডিফেন্স থেকেই আমাদের পরের আক্রমণটা শুরু হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আমাদের ডিফেন্সকে আরও জমাট থাকতে হবে। পাহারাদারের কাজটা আরও নিখুঁত করতে হবে। তা হলে পিছন থেকে হুড়মুড়িয়ে আক্রমণ বিপক্ষের বক্সে তুলে আনা সম্ভব। তখন গোলের রাস্তা আরও খুলে যাবে।”