সর্দার সিংহের নেতৃত্বে ভারতীয় দল।
অলিম্পিকের পরেই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম গেমস— এশিয়াডের সপ্তদশ সংস্করণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে জমকালো করতে সংগঠক দক্ষিণ কোরিয়া তাদের দেশের ক্রীড়াবিদদের চেয়ে বেশি আস্থা রাখল বিনোদন জগতের উপর!
ইনচিওনের মূল স্টেডিয়াম ঠাসা ৬০ হাজার দর্শক আশি মিনিটের সংক্ষিপ্ত অথচ টানটান উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সবচেয়ে বেশি উল্লাসে ফেটে পড়েন, যখন বিখ্যাত কোরীয় পপ গায়ক সাই গ্যাংনাম নেচে মাতিয়ে দেন। দক্ষিণ কোরিয়ার মাটিতে এর আগে অলিম্পিক হয়েছে, বিশ্বকাপ ফুটবল হয়েছে। কিন্তু দেশে এত নামীদামি ক্রীড়াবিদ থাকা সত্ত্বেও গেমসের উদ্বোধনী আসরের যেটা সবচেয়ে মর্যাদামণ্ডিত মুহূর্ত, সেই মশাল আজ জ্বালালেন বিখ্যাত কোরীয় অভিনেত্রী লি ইয়ং-আই।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের গানের মধ্যেও যেন বর্তমানের চেয়ে অতীতকেই বেশি করে স্মরণ করলেন কোরীয় উদ্যোক্তারা! ১৯৮৮ সোল অলিম্পিক আর ২০০২ বিশ্বকাপ ফুটবলের থিম সং-এর রিমিক্স-কে অবশ্য দর্শকরা দারুণ ভাবে বরণ করে নেন। বরং ইনচিওন গেমসের নতুন থিম সং ‘ওয়ান এশিয়া, আ সং অব হোপ’ তেমন হাততালি কুড়োয়নি।
তবে সবচেয়ে উত্তেজক মুহূর্ত তৈরি হয় যথারীতি অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর কুচকাওয়াজের সময়। ৪৫ দেশের ১৩ হাজারের বেশি ক্রীড়াবিদ ও কর্মকর্তার বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজে ভারতীয় দলে সবার আগে জাতীয় তেরঙা হাতে ছিলেন হকি দলের অধিনায়ক সর্দার সিংহ। যিনি বিকাশ গৌড়া, পিভি সিন্ধু, সানিয়া মির্জাদের টপকে এই সম্মান অর্জন করেন এই বিষয়ে দিল্লিতে গতকালের ভারতীয় অলিম্পিক সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে। কুচকাওয়াজে ভারতীয় পুরুষদের গায়ে ছিল কালো ব্লেজার। মেয়েরা পরেছিলেন নীল শাড়ি। ২৮টি বিভিন্ন খেলায় অংশ নিতে চলা প্রায় সাতশো ভারতীয় ক্রীড়াবিদের বেশির ভাগের হাতে ছিল ছোট-ছোট জাতীয় পতাকা। মুখভরা হাসি।
দক্ষিণ কোরিয়া প্রেসিডেন্ট ‘গেমস ওপেন’ ঘোষিত করার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই ভারতীয়রা শনিবারই দশটা বিভিন্ন খেলায় নেমে পড়ছেন। যার মধ্যে শ্যুটিংয়ে দু’টো এবং উশু-তে একটি বিভাগে পদকের মীমাংসাও হয়ে যাবে।
এ বারের এশিয়াডের উদ্বোধনের দিন পরের এশিয়ান গেমসের উদ্যোক্তাও চূড়ান্ত হয়ে গেল। আরও চারটি দেশের শহরের দাবিকে টপকে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা ২০১৮ গেমস আয়োজনের দায়িত্ব অর্জন করল।
একই সঙ্গে এ বারের গেমসকে যৌন হেনস্থা মুক্ত করার ব্যাপারে এ দিন চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করলেন ওসিএ প্রেসিডেন্ট শেখ আহমেদ আল-ফাহাদ। গতকালই এক স্বেচ্ছাসেবিকাকে যৌন হেনস্থার অভিযোগে ইরান দলের এক কর্মকর্তাকে গেমস ভিলেজ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। এ দিন আবার এক প্যালেস্তাইন ফুটবলারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এক মহিলাকে অশালীন ভাবে ধরার। যার পরেই ওসিএ-র তরফে ইনচিওন গেমসের সমস্ত ক্রীড়াবিদ ও কর্তাদের সতর্ক করা হয়েছে, ফের কোনও যৌন হেনস্থা ঘটলে অভিযুক্তকে কঠিনতম শাস্তি পেতে হবে। ‘আমরা চাই শালীনতার গেমস। যৌন হেনস্থা মুক্ত ভিলেজ!’