এক জন অধিনায়ক টেস্ট ক্রিকেটের পৃথিবী থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছেন আচমকা অবসরে। কাউকে জানতেও দেননি। তবু এমন মহাআলোচিত অবসরের চার দিন পরেও তাঁকে নিয়ে জল্পনা, তর্কবিতর্ক অব্যাহত। ঋদ্ধিমান সাহার চোট হলে তিনি নাকি সিডনি টেস্টে আবার নামতে পারেন! নামতে পারেন টেস্ট অবসর ভেঙে, দেশের স্বাথের্ । মাইক হাসি— ফ্লেচার-উত্তর ভারতীয় ক্রিকেটের দায়ভার নাকি এই অস্ট্রেলীয়র হাতে দিতে চান অবসরপ্রাপ্ত ভারত অধিনায়ক।
মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে এখনও কেউ শিরোনাম থেকে সরাতে পারল না।
আর এক জন অধিনায়ক সবে দায়িত্ব নিয়েছেন। কিন্তু তাঁর অধিনায়কত্ব এতটাই আগ্রাসী যে শুধু অস্ট্রেলিয়া কেন, ক্রিকেটবিশ্বে ঝড় উঠে গিয়েছে। অস্ট্রেলিয়া এত দিন শাসাচ্ছিল। বলছিল, স্লেজিংয়ের তিনি এখনও দেখেছেন কী! সিডনি টেস্টের চার দিন আগে অবাক করে আগুনে সুরটা পাল্টে গেল। পাল্টে দিয়ে গেলেন অস্ট্রেলিয়ারই এক নম্বর পেসার।
বিরাট কোহলির আগ্রাসন দেখে মিচেল জনসনের মনে হচ্ছে, ভারতীয় ক্রিকেটের এটা দরকার। কোহলির আগ্রাসনটা টিমের খুব দরকার।
ধোনির প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা নাকি জনসনের কোহলিকে আক্রমণের রাস্তা থেকে কিছুটা সরে আসা কোনটা বেশি মুখরোচক তা নিয়ে তর্ক চলতে পারে। সিডনি টেস্টে ঋদ্ধিমানের চোট লাগলে ধোনির নামার সম্ভাবনা আছে, সেটা স্বয়ং টিম ডিরেক্টর রবি শাস্ত্রী বলে দিলেন। “ধোনি স্ট্যান্ড বাই হিসেবে আছে। ঋদ্ধিমানের কিছু হলে ও থাকবে,” একটি ক্রিকেট ওয়েবসাইটকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বলে দিয়েছেন শাস্ত্রী।
টেস্ট থেকে সদ্য অবসরপ্রাপ্ত ভারত অধিনায়ককে নিয়ে আবার দু’টো জল্পনা ছড়াচ্ছিল। কেউ কেউ ধোনির অবসরের পিছনে কারণ হিসেবে ভারতীয় ড্রেসিংরুমে কোহলির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তাকে তুলে আনছিলেন। শাস্ত্রী সেটা পত্রপাঠ উড়িয়ে বলে দিয়েছেন, “আপনাদের কোনও ধারণাই নেই ধোনিকে সবাই কতটা সম্মান করে। কোহলি শুধু নয়, গোটা টিম করে।”
দ্বিতীয় জল্পনাটা হল, ভারতের পরবর্তী কোচ হিসেবে মাইক হাসির নাম ধোনির ভাসিয়ে দেওয়া। এমএসডি নাকি চান, ২০১৫-র পর ডানকান ফ্লেচারের মেয়াদ শেষ হলে হাসিকে আনা হোক। কারণ হাসির মধ্যে গ্যারি কার্স্টেনের অনেক গুণই আছে। যা শুনে হাসি বেশ অবাকই। অস্ট্রেলিয়ার এক কাগজে বলেও দিয়েছেন, “এমএসকে ধন্যবাদ। তবে প্রস্তাবটার জন্য আমি তৈরি কি না, জানি না।”
মিচেল জনসন আবার টেস্টে ধোনির সিংহাসনের উত্তরসসূরির কীর্তিকলাপ বেশ উপভোগ করছেন। কোহলিকে তাঁর বেশ ‘ইন্টারেস্টিং’ মনে হচ্ছে। “চরিত্র হিসেবে ও তাই। সব কিছুর মধ্যে জড়িয়ে পড়তে চায়। মিডিয়াতে বেরোচ্ছে, নোংরা স্লেজিং চলছে। কিন্তু বিরাট শুধু আমাদের বলছিল ও কত রান করেছে। মনে করাচ্ছিল, ভারত সফরে আমরা ০-৪ হেরেছিলাম। আমরা তখন ওকে পাল্টা বলি, এই সিরিজে কিন্তু এখন আমরা ২-০ এগিয়ে। এগুলোই বারবার চলছিল,” বলে দিয়েছেন জনসন।
সঙ্গে তাঁর আরও সংযোজন, “আমার মনে হয় ক্যাপ্টেন বিরাটও একই রকম হবে। ও ক্রিকেটটা ও ভাবেই খেলতে চায়। চায়, টিমটাও একই ভাবে খেলুক। আসলে ভারত কখনওই আগ্রাসী ক্রিকেটের জন্য তেমন পরিচিত ছিল না। কিন্তু আমি যে দিন থেকে বিরাটকে খেলতে দেখছি, দেখেছি তেতে মাঠে নামে। একটা কথা বলতে পারি, এমএস যা-যা করত, তার থেকে কিন্তু এখন অনেক কিছুই আলাদা হবে।” তবে জনসনের মনে হচ্ছে, এমসিজিতে রাগিয়ে দেওয়ায় বিরাট নিজের কাজ সম্পূর্ণ করে আসতে পারেননি। ১৬৯ করে আউট হয়ে যান।
বিরাটকে স্লেজিং তাই যেমন চলছিল, চলবে। কারণ ওতে ভাল কাজ দিচ্ছে!