মুদগল কমিশনের রিপোর্টের অর্থ দু’রকম, বলছে বোর্ড

সুপ্রিম কোর্টে শুনানি পিছোল ১৮ দিন

মুদগল কমিশনের রিপোর্ট ‘দ্ব্যর্থক’ শুনানির প্রথম দিন সুপ্রিম কোর্টে এমনটাই বলে এল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। শুক্রবার আদালতে বোর্ডের পক্ষ থেকে বলে দেওয়া হল, মুদগল কমিশন যে রিপোর্ট পেশ করেছে, তা অস্পষ্ট। তার দু’রকম অর্থ হয়। আরও ভাল করে বললে, গুরুনাথ-কাণ্ডের ফলে চেন্নাই সুপার কিংসের শাস্তি হওয়া নিয়ে দু’রকম মত পাওয়া যাচ্ছে রিপোর্টে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৪ ০৩:০১
Share:

মুদগল কমিশনের রিপোর্ট ‘দ্ব্যর্থক’ শুনানির প্রথম দিন সুপ্রিম কোর্টে এমনটাই বলে এল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। শুক্রবার আদালতে বোর্ডের পক্ষ থেকে বলে দেওয়া হল, মুদগল কমিশন যে রিপোর্ট পেশ করেছে, তা অস্পষ্ট। তার দু’রকম অর্থ হয়। আরও ভাল করে বললে, গুরুনাথ-কাণ্ডের ফলে চেন্নাই সুপার কিংসের শাস্তি হওয়া নিয়ে দু’রকম মত পাওয়া যাচ্ছে রিপোর্টে।

Advertisement

এ দিন মুদগল কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে শুনানির প্রথম দিন ছিল। কিন্তু বোর্ডের আবেদনে তা পিছিয়ে গেল আগামী ২৫ মার্চ পর্যন্ত। একটি ক্রিকেট ওয়েবসাইটের দাবি-- তাদের কাছে শুক্রবার আদালতে পেশ করা বোর্ডের হলফনামা আছে। যেখানে বলা, মুদগল কমিশনের রিপোর্টের নির্দিষ্ট একটা ব্যাপার একে অন্যের সঙ্গে মিলছে না।

গত ১০ ফেব্রুয়ারি যে রিপোর্ট জমা করেছে কমিশন, তার দু’টো ভাগ আছে। একটায় সই আছে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মুকুল মুদগল এবং জাস্টিস নাগেশ্বর রাওয়ের। তথ্যপ্রমাণাদি যা-যা পাওয়া গিয়েছে, তা সার্বিক ভাবে সেখানে দেওয়া। দ্বিতীয়টা জমা করেছেন কমিশনের তৃতীয় সদস্য নিলয় দত্ত। যিনি অসম ক্রিকেট সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি তদন্তের খুঁটিনাটি জমা করেছেন। কিন্তু গুরুনাথ মইয়াপ্পন কাণ্ডে চেন্নাই সুপার কিংসকে শাস্তি হওয়া উচিত কি না এই প্রশ্নের উত্তরে নাকি দু’রকম মত থাকছে। মুদগলের রিপোর্ট বলছে, আইপিএলের নিয়মবিধির ১১.৩ ধারা ভেঙেছে চেন্নাই সুপার কিংস। কারণ আইপিএল সিক্সে গুরুনাথ যে বেটিং করতেন এবং টিমের খবরাখবর পাচার করতেন, তা প্রমাণিত। যে বিধিভঙ্গের কারণে চেন্নাইকে আইপিএল থেকে বহিষ্কারও করা যেতে পারে। কিন্তু নিলয় দত্ত-র রিপোর্টে কোথাও বলা নেই যে চেন্নাই বিধিভঙ্গ করছে। তাই গুরুনাথকে নিয়ে দু’রকম মত থাকছে।

Advertisement

শুধু তাই নয়, মুদগল কমিটি আদালতে সুপারিশ করেছিল যে, অভিযুক্তদের শাস্তি নির্ধারণ করুক আদালত। কারণ তদন্ত কমিটির সে ক্ষমতা নেই। কিন্তু এ দিনই আবার তদন্ত কমিটির সদস্য নিলয় দত্ত বলেছেন, “রিপোর্টে যে মহামান্য আদালতকে শাস্তি বা জরিমানা নির্ধারণ করতে বলা আছে, এমন ভ্রান্ত ধারণা রাখা ঠিক নয়।” বোর্ডের পক্ষ থেকে আদালতে আরও বলে আসা হল যে, অভিযুক্ত বা সন্দেহভাজনদের শাস্তির ব্যবস্থা আদালত নয়, বোর্ডকেই করতে দেওয়া হোক। আইপিএলের নিয়মবিধি মেনে।

বোর্ডের পক্ষ থেকে আদালতকে আরও অনুরোধ করা হয়েছে, কমিশন যে মুখবন্ধ খাম পেশ করেছে আদালতে, তার ভিতরে যা আছে, সেটা যেন প্রকাশ্য না করে দেওয়া হয়। কমিশন বলেছিল, ওই মুখবন্ধ খামে কিছু অভিযুক্ত এবং সন্দেহভাজনের নাম আছে। যা শুধুমাত্র বিচারপতিরাই খুলে দেখবেন। বোর্ড এ দিন আবেদনে বলেছে, এমনিতেই গড়াপেটা নিয়ে স্টিং অপারেশনের নাম করে কিছু টিভি চ্যানেল কয়েক জন প্রথম সারির ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে নানাবিধ অভিযোগ এনেছে। যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এমনও জল্পনা তৈরি হয়েছে, ওই মুখবন্ধ খামে ভারতীয় টিমের বর্তমান কিছু ক্রিকেটারের নাম আছে। আদালতের কাছে তাই অনুরোধ করা হচ্ছে, খামের ভিতরের তথ্য যেন প্রকাশ্য না করা হয়। বোর্ড নিশ্চিত, আদালত এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না যাতে নির্দোষ ক্রিকেটারদের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

মামলা যে পথে...

৭ অক্টোবর ২০১৩

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আইপিএল স্পট ফিক্সিং কাণ্ডের তদন্তে গঠিত মুদগল কমিটি। কমিটি দেখবে সেখানে গুরুনাথ মইয়াপ্পনের যোগাযোগ আছে কি না। প্রাক্তন বিচারপতি মুকুল মুদগল ছাড়া কমিটির বাকি দুই সদস্য নাগেশ্বর রাও ও নিলয় দত্ত। দায়িত্ব পেয়ে কমিটির প্রধান মুদগল বললেন, “তদন্ত লোক দেখানো হবে না।”

১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৪

সুপ্রিম কোর্টে মুদগল কমিটির রিপোর্টে পেশ। বলা হল, আইপিএল সিক্সে বেটিং করেছেন মইয়াপ্পন। শ্রীনিবাসন উদ্ধৃত ‘ক্রিকেট উৎসাহী’ নন গুরুনাথ। বরং তিনি চেন্নাই সুপার কিংসের কর্তা। সঙ্গে পেশ করা হল মুখবন্ধ খাম। জল্পনা শুরু, গড়াপেটা কাণ্ডে সন্দেহভাজন কিছু ভারতীয় ক্রিকেটারের নাম আছে খামে।

৭ মার্চ ২০১৪

সুপ্রিম কোর্টে মুদগল কমিটির রিপোর্টের প্রথম শুনানি। কিন্তু বোর্ডের আবেদনে সেটা পিছিয়ে গেল ২৫ মার্চ পর্যন্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন