ওল্ড ট্র্যাফোর্ড যাওয়াটা আমার কাছে স্মৃতির রাস্তায় হাঁটার মতো। বহু বছর আগে ল্যাঙ্কাশায়ারে খেলার সময় ওল্ড ট্র্যাফোর্ড আমার ঘরের মাঠ ছিল। এই নামটার সঙ্গে ফুটবল আর ক্রিকেট, দুটোই জড়িয়ে। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড মাঠে ধোনিকে যেতে দেখে অবাক হইনি। ল্যাঙ্কাশায়ারের দিনগুলোয় প্রত্যেক শনিবার আমিও ওখানেই যেতাম। আমার সময়ের চেয়ে অবশ্য এখনকার ওল্ড ট্র্যাফোর্ড অনেক পাল্টে গিয়েছে। আগে পিচটা ওল্ড স্ট্যান্ডসের সমান্তরাল ছিল। কিন্তু এখন উইকেটটা তার মুখোমুখি।
এই পিচটা বোধহয় এই সিরিজের সবচেয়ে দ্রুত উইকেট হবে। লর্ডসের মতো সিম মুভমেন্ট হয়তো থাকবে না কিন্তু বাউন্স আর ক্যারি থাকবে। যাতে স্পিনাররা সাহায্য পাবে। বাউন্সি পিচে বল করতে স্পিনাররা পছন্দ করে। কিন্তু লর্ডস আর সাউদাম্পটনের কথা মাথায় রেখে বলছি, তৃতীয় দিন থেকে টার্ন করতে শুরু করলে অবাক হব না। আমার মনে হয় বৃষ্টি সব কিছু ভেস্তে না দিলে দুটো ম্যাচেই ফলাফল হবে।
ইংল্যান্ড টিমে স্টিভন ফিনের আসাটা দারুণ সিদ্ধান্ত। ছন্দে থাকলে ওর পেস আর বাউন্স দেখার মতো। ভাবতে অবাক লাগে যে গত অ্যাসেজ সিরিজের পর ফিনের ফর্ম এত পড়ে গিয়েছিল! তৃতীয়-চতুর্থ সিমার নিয়ে ইংল্যান্ড ভুগছে, তাই ফিনের দিকে ওরা তাকিয়ে থাকবে। ব্রড আর অ্যান্ডারসনের চাপও কিছুটা কমাতে পারবে ফিন। ইংল্যান্ডের তৃতীয়-চতুর্থ সিমারদের যা মান দেখলাম, তাতে ফিনই ওদের সেরা বিকল্প।
এই ম্যাচে ভারতকে আক্রমণ করতে হবে। ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের সামনে নতুন কিছু পেশ করতে হবে। গতির সঙ্গে বৈচিত্র আনার জন্য বরুণ অ্যারনকে দরকার। পঞ্চম বোলার হিসেবে অশ্বিনকেও নেওয়া হোক। ছ’নম্বর ব্যাটসম্যান মাত্র একটা টেস্ট খেললেও বিশেষ অবদান রাখতে পারেনি। বিনি বল হাতে খুব একটা সুযোগ পায়নি। তাই এই পরিস্থিতিতে অশ্বিনকে নিয়ে এগনোই ভাল। শিখর ধবনকে মানসিক ভাবে চাঙ্গা হওয়ার জন্য বিশ্রাম দিলেও ভাল হয়। একজন ওপেনার যখন রান পায় না, তখন তার পক্ষে রোজ নতুন বলের সামনে দাঁড়ানোটা খুব নিংড়ে নেওয়ার মতো অভিজ্ঞতা হতে পারে। এই টেস্টটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, তাই এখানে ফ্রেশ কাউকে নিয়ে আসাটা খারাপ হবে না। প্রথম দিকে মুরলী বিজয় সাহায্য পেলে পরে পূজারা আর কোহলির চাপও কমবে। বিশেষ করে ওরা যখন ভাল ফর্মে নেই। জয়ের ছন্দ নিয়ে প্রচুর কথাবার্তা হয়েছে। সাউদাম্পটনে যদি ইংল্যান্ডের দিকে ছন্দ ঘুরে যেতে পারে, তা হলে এই টেস্টে ধোনি টস জিতলে ছন্দটা আবার ভারতের দিকে চলে আসবে।