বাগানের দুঃসময়ে বর্তমানের পাশে নেই প্রাক্তন

সনি কে, জানেন না ওডাফা

হয় জেতো, নয় বিদায় নাও! সালগাওকরের বিরুদ্ধে মরণ-বাঁচন ম্যাচ খেলতে নামার আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে বাগানে এখন এই স্লোগান। করিম বেঞ্চারিফার টিমের বিরুদ্ধে জিততে না পারার দুঃখে সাবিথের জন্মদিন পালন স্থগিত হয়ে গিয়েছিল বৃহস্পতিবার।

Advertisement

রতন চক্রবর্তী

মারগাও শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:০৭
Share:

ফেড কাপ চলছে। কিন্তু তাঁর পায়ে ফুটবল নেই। হতাশ ওডাফা তাঁর বাড়ির সামনের বেনোলিম সমুদ্রতটে। শুক্রবার। ছবি: উত্‌পল সরকার

হয় জেতো, নয় বিদায় নাও! সালগাওকরের বিরুদ্ধে মরণ-বাঁচন ম্যাচ খেলতে নামার আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে বাগানে এখন এই স্লোগান।

Advertisement

করিম বেঞ্চারিফার টিমের বিরুদ্ধে জিততে না পারার দুঃখে সাবিথের জন্মদিন পালন স্থগিত হয়ে গিয়েছিল বৃহস্পতিবার। কেক কিনে রাখা সত্ত্বেও। শুক্রবার ছিল আবার লালকমল ভৌমিকের জন্মদিন। টিমের মধ্যে গুমোট ভাব কাটাতে দু’জনের জন্মদিন পালনে আজ ছাড়পত্র দেন কোচ সঞ্জয় সেন। রাতে কেক কাটার আগে অবশ্য সনি নর্ডি-সহ সব সিনিয়র ফুটবলারের সঙ্গে আলাদা আলাদা কথা বলেছেন বাগান কোচ। টিম সূত্রের খবর, ডেরেক পেরিরার টিমকে হারাতে মরিয়া মোহনবাগান দু’দিন আগেই ফর্মেশন বদলের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। সবুজ-মেরুন জার্সিতে গোলের জন্য হাপিত্যেশ করে থাকা সনিকে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে পিয়ের বোয়ার সঙ্গে। বিদেশি ফলায় গোয়ার টিমকে গোয়ার মাঠে বিঁধতে চাইছেন সঞ্জয়।

বলবন্ত সিংহ, জেজে, সাবিথ--ওয়ান স্ট্রাইকার পজিশনে তিন ভারতীয় স্ট্রাইকার ব্যর্থ বাগানে। কিছু করতে পারেননি ফেড কাপের দু’টি ম্যাচেই। সে জন্যই বিদেশিতে আস্থা রাখার কথা ভাবছেন কোচ। সনি-বোয়া জোড়া স্ট্রাইকার পজিশনে চলে গেলে সনির জায়গায় লেফট উইংয়ে খেলতে পারেন পঙ্কজ মৌলা। শুক্রবার বিকেলে বেনোলিমের ট্রিনিটি মাঠে অনুশীলনে পঙ্কজকে নানা ভাবে দেখে নিলেন সঞ্জয়।

Advertisement

সনি, বোয়া, বেলো রজ্জাক, ডেনসন দেবদাস ছাড়া সবাই অনুশীলন করেছেন এ দিন। সনি ছিলেন প্রচণ্ড মনমরা। মুখে হাসি নেই। বেনোলিমের মাঠ বাগান হোটেল থেকে বহু দূরে। প্রায় পঞ্চাশ কিলোমিটার। অন্য মাঠ না পাওয়ায় এখানেই অনুশীলনের ব্যবস্থা হয়েছিল শিল্টন-লালকমলদের। দীর্ঘ জার্নির ফলে নির্ধারিত সময়ের প্রায় কুড়ি মিনিট পরে বাগানের টিম বাস ঢুকল মাঠে। কাকতালীয় ভাবে মাঠটা আবার ওডাফা ওকোলির পাড়ায়!

ওডাফার বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে বাগানের অনুশীলন চলছে। জানা সত্ত্বেও সেখানে ঢুঁ মারার বিন্দুমাত্র আগ্রহ দেখাননি গত তিন বছর বাগানের ত্রাতা ধরা হত যাঁকে, সেই গোলমেশিন। বলে দিলেন, “মোহনবাগানের কোনও খোঁজ রাখতে চাই না। সনি নর্ডি কে তাও জানি না। জানার আগ্রহও নই। আমি নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। সবাই ভাবছে আমার চোট। সে জন্য হয়তো আমাকে কোনও ক্লাব ডাকছে না। আমি ওজন কমিয়ে ফেলেছি পঁচিশ কেজি। নিজেকে পুরো ফিট করে তুলেছি।” তবে বাগানের কোনও খোঁজ রাখতে না চাইলেও জানিয়ে দিলেন, পুরনো ক্লাব ডাকলে ফের খেলতে রাজি।

ওডাফার পাড়ায় অনুশীলন করতে এসেছেন শুনে আলাদা কোনও প্রতিক্রিয়া নেই সনিরও। বিস্মিত ভাবে প্রশ্ন করলেন, “ওডাফা এখানে থাকে? কোথায় খেলে এখন? ওর নাম শুনেছি। কিন্তু খেলা দেখিনি।” জানাতে হল, যে ক্লাবে ওডাফা এখন রয়েছেন, সেই চার্চিলের কোনও টুর্নামেন্ট খেলার সুযোগ নেই এ বছর। ওই ক্লাবের কর্তারা ফেডারেশনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। শুনে বিস্ময় বাড়ে সনির মুখে। “তাই না কি।” তবে ওডাফা নিয়ে কথা বললেও বাগানের হায়েস্ট পেইড ফুটবলারের মন যেন পড়ে আছে রবিবারের ম্যাচে। বারবার বলছিলেন, “কোচের সঙ্গে রাতে মিটিং আছে আমার। সেখানে বলব আমার পজিশন বদলাতে। আমি গোল করতে চাই। গোল না করতে পারলে টিম জিতবে না। মোহনবাগানের হয়ে স্বপ্ন গোল করা। এখনও সেটা করতে পারলাম না।” পরে কোচকে এই নিয়ে প্রশ্ন করলে বললেন, “ও যদি চায়, আমি ওকে স্ট্রাইকার খেলাব। সেটা আমার মাথায় আছে। ম্যাচটা জিততেই হবে। তার জন্য যা করার করব।”

বাগানের এই দুঃসময়ে প্রাক্তন এসে বর্তমানকে উত্‌সাহ দিয়ে যায়নি। এমতাবস্থায় ওডাফার পাড়ায় অনুশীলন করে কি বাড়তি মোটিভেশন পেয়ে গেলেন সনি? হাইতি স্ট্রাইকার বললেন, “সেটা নয়। ও সব নিয়ে ভাবছিও না। জিততে হবে। গোল করতে হবে। এটাই শুধু মাথায় রাখছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন