দুই কমিশনের দ্বন্দ্বে ক্ষুণ্ণ শিশু-স্বার্থ: সুপ্রিম কোর্ট

জলপাইগুড়ির হোম থেকে শিশু পাচারের ওই ঘটনায় রাজ্যের এডিজি (সিআইডি)-র কাছে কিছু তথ্য জানতে চেয়েছিল জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন।

Advertisement

শমীক ঘোষ ও শিবাজী দে সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৫৯
Share:

ফাইল চিত্র।

রাজ্যে শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন আছে। কেন্দ্রীয় স্তরেও আছে জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন। দুই সংস্থারই কাজ শিশুদের স্বার্থ দেখা, আরও নির্দিষ্ট করে বললে শিশুদের স্বার্থ যথাযথ ভাবে রক্ষিত হচ্ছে কি না, তার উপরে নজরদারি চালানো। কিন্তু রাজ্য ও কেন্দ্রের অধীন সেই দুই পৃথক সংস্থার টানাপড়েনে শিশুদেরই স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ। জলপাইগুড়ির হোম থেকে শিশু পাচারের ঘটনার মামলার রায়ে নিজেদের এই পর্যবেক্ষণের কথা জানিয়েছে শীর্ষ আদালতের বিচারপতি দীপক গুপ্ত ও বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসুর ডিভিশন বেঞ্চ।

Advertisement

জলপাইগুড়ির হোম থেকে শিশু পাচারের ওই ঘটনায় রাজ্যের এডিজি (সিআইডি)-র কাছে কিছু তথ্য জানতে চেয়েছিল জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন। কিন্তু সব তথ্য পায়নি তারা। সেই জন্য সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয় ওই কমিশন। সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন নির্দেশ দিয়েছে, রায়ের প্রতিলিপি পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে ওই তথ্য জাতীয় শিশু রক্ষা কমিশন এবং কলকাতা হাইকোর্টের জুভেনাইল জাস্টিস কমিটিতে পেশ করতে হবে এডিজি (সিআইডি)-কে।

পুলিশ জানায়, ২০১৭ সালের শিশু পাচারের ঘটনায় তৎকালীন এডিজি (সিআইডি) রাজেশ কুমারের কাছে জাতীয় শিশু রক্ষা কমিশন জানতে চেয়েছিল, কত শিশুকে দেশে ও বিদেশে বিক্রি করা হয়েছে, ক’টি শিশুকে দত্তক দেওয়া হয়েছে, কত জন প্রবাসী ভারতীয় ক’টি শিশু দত্তক নিয়েছেন। ওই ঘটনায় ধৃত ও আটকের তালিকা এবং তদন্তকারীদের কাছে তাঁরা কী বিবৃতি দিয়েছেন, তা-ও জানতে চায় জাতীয় কমিশন। রাজেশ সেই সব তথ্য পুরো না-জানানোয় তাঁকে সমন পাঠিয়ে ২০১৭ সালের ২৫ জুলাই এবং ২৯ অগস্ট জাতীয় কমিশনে হাজির হতে বলা হয়।

Advertisement

জাতীয় শিশু রক্ষা কমিশনের এমন সমন পাঠানোর এক্তিয়ারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন রাজেশ। হাইকোর্ট সেই সমনের উপরে স্থগিতাদেশ দিয়ে জানায়, রাজ্যের শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন এই বিষয়ে অনুসন্ধান করছে। তাই জাতীয় শিশু রক্ষা কমিশনে এডিজি (সিআইডি)-র হাজির হওয়ার প্রয়োজন নেই। হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আপিল মামলা করে জাতীয় কমিশন।

শীর্ষ আদালতের মন্তব্য, এক্তিয়ার নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রের শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়া উচিত নয়। বরং শিশুদের স্বার্থ রক্ষায় সহোদরের মতো আচরণই কাম্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন