প্রতীকী ছবি।
আইফোন হোক বা ম্যাকবুক— অ্যাপ্লের প্রতিটা পণ্য তাদের স্মার্টলুকের জন্য জনপ্রিয়। বছরের পর বছর কেটে গেলেও এতে কোনও বদল করেনি সংশ্লিষ্ট মার্কিন টেক জায়ান্ট সংস্থা। এই নিয়ে তাদের সমালোচনাও হয়েছে বিস্তর। কিন্তু, তার পরও কেন আইফোন বা ম্যাকবুকের নকশা অপরিবর্তিত? এর উত্তর লুকিয়ে আছে সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা তথা প্রথম সিইও স্টিভ জোব্সের স্বভাবে।
অ্যাপ্ল যখন প্রথম আইফোন, ম্যাকবুক বা স্মার্টওয়াচ বাজারে আনে তখন দুনিয়া শুদ্ধ লোকের চোখ ধাঁধিয়ে গিয়েছিল। কারণ, এর আগে এত সুন্দর বৈদ্যুতিন পণ্য কখনও প্রত্যক্ষ করেনি বিশ্ব। মার্কিন টেক জায়ান্ট সংস্থাটির এ-হেন সাফল্যের ষোল আনা কৃতিত্ব অবশ্যই জোব্সের প্রাপ্য। কারণ নকশা নিয়ে অত্যন্ত খুঁতখুঁতানি ছিল তাঁর।
জোব্স মনে করতেন, মানুষের জীবনে ব্যবহৃত প্রতিটা জিনিসেরই শিল্পগুণ থাকা আবশ্যক। আর তাই নিজের বাড়ির জন্য তিনি এমন টেবল বা সোফা খুঁজতেন, যা আর পাঁচটা সাধারণ আসবাবের থেকে হবে একেবারে আলাদা। ফলে কোনও কিছুই পছন্দ হত না তাঁর। জোব্সের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের দাবি, তাঁর বাড়ির ভিতরটা ছিল প্রায় ফাঁকা। বসার ঘরে একটি মাত্র মাদুর রেখেছিলেন তিনি। কারণ, মনের মতো আসবাব খুঁজে না পাওয়ায় কিছুই কেনেননি স্টিভ।
শিল্পের প্রতি জোব্সের এই খুঁতখুঁতানির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন তাঁর স্ত্রী লরেন পাওয়েল। বেশ কয়েকটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, রাতের পর রাত ধরে টেবল আর সোফা খুঁজতেন তাঁরা। কিন্তু কোনওটাই মনের মতো না হওয়ায় সে সব শেষ পর্যন্ত বাতিল করে দিতেন স্টিভ। ছোটবেলা থেকেই জোব্স বস্তুর শিল্পসৌন্দর্যকে প্রাধান্য দিতেন। এর সঙ্গে মিশে থাকত দর্শন। এই দুইয়ের সংমিশ্রণ তাঁর তৈরি আইফোন, আইপ্যাড, ম্যাকবুক বা অ্যাপ্ল স্টুডিয়োয় দেখা গিয়েছে।
২০১১ সালের ৫ অক্টোবর মাত্র ৫৬ বছর বয়সে মৃত্যু হয় স্টিভের। তিনি চলে যাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট পণ্যগুলির নকশায় কোনও বদল করতে পারেনি অ্যাপ্ল। কারণ, জোব্সের মতো শিল্পের পরিবর্ত পাওয়া সম্ভব ছিল না এই মার্কিন টেক জায়ান্ট সংস্থার।