চিনের তৈরি কোয়ান্টাম কম্পিউটার ডিজিটাল সিন্দুকের যাবতীয় তালা ভেঙে ফেলতে সক্ষম, খবর সূত্রের। — প্রতীকী ছবি।
আধার-প্যান থেকে শুরু করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের যাবতীয় তথ্য। এই সব কিছু সুরক্ষিত রাখতে বর্তমানে ডিজিটাল ব্যবস্থার উপরে ভরসা করছে আমজনতা। আগামী দিনে যার তালা অনায়াসেই ভেঙে ফেলবে কোয়ান্টাম কম্পিউটার! এমনটা মত বিশ্লেষকদের একাংশের। ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে নাকি অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে চিন। পিছিয়ে নেই আমেরিকাও। কোথায় দাঁড়িয়ে ভারত? আনন্দবাজার ডট কম-এর এই প্রতিবেদনে রইল তার হদিস।
ডিজিটাল সুরক্ষা ব্যবস্থায় একটি শব্দ খুবই প্রচলিত। সেটা হল ‘এনক্রিপশন’। অর্থাৎ গ্রাহক নিজে ছাড়া বা তাঁর অনুমতি ছাড়া ওই তথ্য কেউ দেখতে বা পড়তে পারবেন না। কিন্তু বিশ্লেষকদের দাবি, এই ‘এনক্রিপশন’ বিষয়টি প্রকৃতপক্ষে একটি ভাঁওতা। কারণ, কোয়ান্টাম কম্পিউটারের মাধ্যমে ডিজিটাল দরজার এই তালা খোলা মোটেই কঠিন নয়।
পশ্চিমি গণমাধ্যমগুলির দাবি, চিনা প্রযুক্তিবিদেরা ইতিমধ্যেই ৭২ কিউবিটের ‘ইউকং’ নামের একটি কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি করে ফেলেছেন। সূত্রের খবর, এটি ব্যবহার করে বেশ কিছু ‘এনক্রিপ্টেড’ তথ্য হস্তগত করেছেন তাঁরা। কোয়ান্টাম কম্পিউটার কিউবিট নির্ভর। ‘এনক্রিপশন’-এর তালা খুলতে এক হাজার কোটি কম্বিনেশনকে একসঙ্গে কাজে লাগানোর সক্ষমতা রয়েছে এই অত্যাধুনিক কম্পিউটারের।
অন্য দিকে চুপ করে বসে নেই যুক্তরাষ্ট্রও। ডিজিটাল তথ্য সুরক্ষিত করতে পোস্ট কোয়ান্টাম ক্রিপ্টোগ্রাফি তৈরি করেছে আমেরিকা। সংশ্লিষ্ট প্রযুক্তিটিকে টেক জায়ান্ট, ব্যাঙ্ক বা শেয়ার বাজারের মতো প্রতিষ্ঠানগুলির ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক করেছেন সেখানকার সরকার। এই নিয়ম ভাঙলে মোটা জরিমানার মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।
কিন্তু তার পরেও একটি জায়গাতে পিছিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন গবেষকেরা এখনও চিনা কোয়ান্টাম কম্পিউটারের হার্ডঅয়্যারের কিউবিট সংখ্যা পেরোতে পারেননি বলে দাবি করেছে প্রযুক্তিবিদদের একাংশ। ফলে ডিজিটাল মাধ্যমে থাকা ‘এনক্রিপ্টেড’ তথ্য চুরি হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। কোয়ান্টাম প্রযুক্তিতে পা রেখেছে ভারতও। আর তাই ‘ন্যাশনাল মিশন অফ কোয়ান্টাম টেকনোলজি’ প্রকল্পে দিন দিন বরাদ্দ বাড়াচ্ছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার।
গ্যাজেট বিশ্লেষকদের দাবি, আগামী দিনে বিশ্বকে বদলে দেবে কোয়ান্টাম কম্পিউটার। তার আগেই ‘এনক্রিপশন’ তালা ভাঙার সক্ষমতা পেয়েছে চিন। যুক্তরাষ্ট্র মন দিয়েছে ডিজিটাল সিন্দুকের সুরক্ষায়। এর পাশাপাশি ইউরোপীয় দেশগুলি আবার কোয়ান্টাম কম্পিউটারের জন্য নতুন আইন তৈরির প্রয়োজনীতার কথা বলতে শুরু করেছে।