— প্রতীকী ছবি।
যত দিন যাচ্ছে ততই আমজনতার নিত্যদিনের ব্যবহার করা মোবাইল ফোন হয়ে উঠছে বিপজ্জনক ডিভাইস। যদিও সেই তালিকায় নাম নেই মার্কিন টেক জায়ান্ট অ্যাপ্লের তৈরি আইফোনের। সেটা বাদ দিলে বাকি যাবতীয় স্মার্টফোনের ব্যাটারিতে মৃত্যুফাঁদ লুকিয়ে আছে বললে অত্যুক্তি করা হবে না। কারণ, নিজে থেকে আগুন ধরা যাওয়া বা মুঠোবন্দি ডিভাইসের ব্যাটারি বিস্ফোরণের ঘটনা কমা তো দূরে থাক উল্টে ক্রমশ বাড়ছে।
বর্তমানে অধিকাংশ স্মার্টফোনেই রয়েছে লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি। এতে থার্মাল রানওয়ের আশঙ্কা ষোলো আনা। অর্থাৎ নিজে থেকেই স্মার্টফোনে জ্বলে উঠতে পারে আগুন। কারণ, বিরল ধাতু লিথিয়াম-আয়নে শক্তির ঘনত্ব খুব বেশি। ফলে শর্ট সার্কিট, বাহ্যিক ভাবে ব্যাটারিতে কোনও ক্ষতি বা অতিরিক্ত তাপ তৈরি হলে সংশ্লিষ্ট ধাতুটিতে শুরু হয় বিক্রিয়া। তাতে তাপমাত্রা আরও বেড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত একসময় ফোনে নিজে থেকেই জ্বলে ওঠে আগুন।
প্রযুক্তির ভাষায় একেই বলে থার্মাল রানওয়ে। এতে ফোনের ভিতরে থাকা একের পর এক সেলগুলি গরম হতে থাকে। ফলে ভিতর থেকেই এতে জ্বলে ওঠে আগুন। তা ছাড়া স্মার্টফোনের ভিতরে মাত্রাতিরিক্ত তাপ তৈরি হলে এর ভিতরের ইলেক্ট্রোলাইট থেকে বার হয় ধোঁয়া। তখন মুঠোবন্দি ডিভাইসটির ভিতরের অংশে জমে থাকা বিষাক্ত গ্যাস বেরিয়ে আসতে না পেরে এতে বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে।
গ্যাজ়েট বিশ্লেষকদের দাবি, দীর্ঘ দিন ধরে স্মার্টফোন ব্যবহার করলে এর ভিতরের রাসায়নিক নষ্ট হয়ে যায়। ফুলে যায় ব্যাটারিও। তখনই বাড়ে শর্ট সার্কিটের আশঙ্কা। এর জন্যেই পুরনো স্মার্টফোনে বিস্ফোরণের বেশি ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এ ছাড়া বিপদের নেপথ্যে রয়েছে গ্রাহকদের গুণগত মানের দিক থেকে খারাপ বা ভেজাল ব্যাটারির ব্যবহার।
ব্যবহারকারীদের অনেকেই সস্তা দামে অনামি সংস্থার পাওয়ার ব্যাঙ্ক কিনে ফেলেন। এতে কিন্তু সুরক্ষার জন্য কোনও অতিরিক্ত সার্কিট থাকে না। সংশ্লিষ্ট পাওয়ার ব্যাঙ্কে পাওয়া যাবে না থার্মাল প্রোটেকশান এবং সার্টিফায়েড সেল। এগুলিকেই দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন গ্যাজেট বিশ্লেষকেরা।
লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির জন্যই যে সব সময় স্মার্টফোনে আগুন ধরবে, এমনটা নয়। মুঠোবন্দি ডিভাইসের ভিতরের রাসায়নিক খারাপ হয়ে গেলে অনেক সময়েই সেখান থেকে ধোঁয়া বার হতে থাকে। এতে থাকে বিষাক্ত ফ্লোরিন গ্যাস, যা আমজনতার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই খারাপ।