Xiaomi Smartphone

স্যামসাংকে টপকে এক নম্বরে পৌঁছে মহাপতন, মোবাইল ফোনের বাজার থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে এই ব্র্যান্ড!

ভারতের স্মার্টফোনের বাজার থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে বসেছে চিনা সংস্থা শাওমি। অথচ একটা সময়ে স্যামসাংকে হারিয়ে এক নম্বরে উঠে গিয়েছিল তারা। কী কারণে হচ্ছে এই পতন?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:৩৭
Share:

ভারতের বাজার থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে শাওমির স্মার্টফোন। —প্রতীকী ছবি।

মোবাইল ফোনের বাজার থেকে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে শাওমি। চলতি বছরে ভারতের সেরা ২৫টি অ্যান্ড্রয়েড ফোনের তালিকায় নাম নেই এই চিনা সংস্থার। শুধু তা-ই নয়, বর্তমানে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিটির দফতরের কর্মীসংখ্যা কমতে কমতে হাজারেরও নীচে নেমে এসেছে। অথচ, ২০১৩ সালে ‘ক্যাশ সেল’ শব্দটির জন্ম দিয়েছিল শাওমি। ওই বছরই এমআই-৩ মডেলকে এনে স্মার্টফোনের বাজারে ঝড় তুলেছিল তারা।

Advertisement

এমআই-৩ মডেলটির নজরকাড়া সাফল্যের পর চুপ করে বসে থাকেনি শাওমি। চিনা সংস্থাটির দ্বিতীয় চমক হল রেড মি-নোট-৩ সিরিজ়। ২০১৩ সালের পর যা বাজারে এনে সবাইকে চমকে দেয় তারা। পরবর্তী বছরগুলিতে একে একে লঞ্চ করতে থাকে ওই সিরিজ়ের নোট-৪ এবং নোট-৫ স্মার্টফোন। ২০১৭ সালে স্যামসাংকে টপকে ভারতের এক নম্বর ব্র্যান্ড হয়ে ওঠে এই মুঠোবন্দি ডিভাইস নির্মাণকারী সংস্থা।

২০২০ সালে কোভিড অতিমারি শুরু হলে এ দেশে শাওমির ব্যবসা প্রথম বার ধাক্কা খায়। বিশ্লেষকেরা ভেবেছিলেন, কাঁচামালের সরবরাহ শৃঙ্খল নড়ে যাওয়ার কারণেই এই সমস্যা হচ্ছে। ওই সময় বিশ্ব জুড়েই চিপ বা সেমিকন্ডাক্টরের অভাব দেখা গিয়েছিল। তার আঁচে যথেষ্টই লোকসানের মুখে পড়ে সংশ্লিষ্ট চিনা ফোন নির্মাণকারী সংস্থা।

Advertisement

কিন্তু, কোভিড অতিমারি শেষ হতে না হতেই শাওমির বিরুদ্ধে ওঠে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ। এই বিষয়ে তদন্তে নামে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এবং আয়কর দফতর। ২০২৩-’২৪ আর্থিক বছরে চিনা সংস্থাটির ৪,৭০০ কোটি টাকা ফ্রিজ করে কেন্দ্র। ফলে এ দেশের ব্যবসা করার ক্ষেত্রে মারাত্মক চাপের মুখে পড়ে যায় তারা।

বিশ্লেষকদের দাবি, গত দু’বছরে প্রতিযোগিতার বাজারে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে শাওমি। সেই জায়গা অনেকটাই দখল করে ফেলেছে ওপো, ভিভো বা রিয়্যালমির মতো সংস্থা। গ্রাহকদের হাতে সস্তায় ভাল ফোন তুলে দিয়ে একটা সুনাম অর্জন করেছিল সংশ্লিষ্ট চিনা সংস্থা। কিন্তু, তারা যে সেটা ক্রমশ হারিয়ে ফেলেছে, তা বলাই বাহুল্য।

এই পরিস্থিতিতে স্মার্টফোনের বাজার ধরে রাখতে বেশ কিছু ফোন বাজারে আনে শাওমির সহযোগী সংস্থা পোকো। কিন্তু সেগুলি একেবারেই গ্রাহকদের মন জয় করতে পারেনি। উল্টে সংশ্লিষ্ট মুঠোবন্দি ডিভাইসগুলিতে দেখা গিয়েছে একের পর এক সমস্যা। এর মধ্যে রয়েছে দ্রুত মাদারবোর্ড নষ্ট হয়ে যাওয়া বা ডিসপ্লেতে সবুজ রেখা চলে আসার মতো সমস্যা। শেষেরটি অবশ্য শাওমির ফোনেও দেখতে পাওয়া গিয়েছে বলে ব্যবহারকারীদের একাংশের অভিযোগ রয়েছে।

ফলে, গত দু’বছরে স্মার্টফোন নির্মাণকারী চিনা সংস্থাটির বিক্রির সূচক অনেকটা নেমে যায়। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে প্রিমিয়াম শ্রেণির বেশ কয়েকটি ফোন বাজারে আনে শাওমি। কিন্তু প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডিং তৈরি করতে ব্যর্থ হয় তারা। উল্টে শাওমির ফোন সস্তা তাই গুণগত মানের দিক থেকে খারাপ, এই ধারণা আমজনতার মনে বদ্ধমূল হয়ে যায়। বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করেন, এখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র দিকে বেশি করে নজর দিতে হবে তাদের। পাশাপাশি, আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটানো এবং ব্যাপক প্রচারেরও প্রয়োজন রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement