Luxurious Trains of India

ভারতের তিন রাজকীয় ট্রেন! যার মূল উদ্দেশ্য গন্তব্যে পৌঁছোনো নয়, সফরই আসল কথা!

যানবাহনে মানুষ চড়েন গন্তব্যে পৌঁছোনোর জন্য। কিন্তু এ ট্রেন কেবল সেই একটিই উদ্দেশ্য নিয়ে রওনা দেয় না। যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছোনোর আগে তাঁদের রাজকীয় খাতির-যত্ন করাই এ ট্রেনের আসল লক্ষ্য।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:০১
Share:

রাজকীয় ট্রেনের দরজা খুলছে সেপ্টেম্বর থেকেই! ছবি : সংগৃহীত।

দার্শনিকেরা বলে গিয়েছেন, লক্ষ্যে পৌঁছোনো জীবনের মোক্ষ নয়। লক্ষ্যে পৌঁছোনোর যে সফর সেটাই আসল। সেই পথই বেঁধে দেয় জীবনের অভিমুখ। ভারতের তিন রাজকীয় ট্রেনও এই একই দর্শনে চলে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার তেমনই এক রাজকীয় ট্রেনে সফর করেছেন ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। ভারতীয় রেলের ওই ট্রেনের নাম মহারাজা এক্সপ্রেস। রাষ্ট্রপতি দিল্লির সফদরজং রেল স্টেশন থেকে সেই ট্রেনে উঠে গিয়েছেন মথুরা অবধি।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতির জন্য ওই ট্রেনের ১২টি কোচকে সাজিয়ে তোলা হয়েছিল বিশেষ ভাবে। এর মধ্যে ছিল একটি গ্র্যান্ড প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুট, একটি ডিলাক্স কেবিন, ফাইন ডাইনিং রেস্তরাঁ, প্লাস লাউঞ্জ। এ ছাড়া দু’টি এসি কোচ রাখা ছিল পদস্থ রেল কর্মচারী এবং রাষ্ট্রপতি ভবনের কর্মচারীদের জন্য।

Advertisement

মহারাজা এক্সপ্রেস তার পরেই আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে ভারতের ভ্রমণপিপাসু মহলে। ভারতের তো বটেই, গোটা দুনিয়ার সবচেয়ে বিলাসবহুল ট্রেন সফরের তালিকাভুক্ত এই মহারাজা এক্সপ্রেসের যাত্রা। তবে একা মহারাজা এক্সপ্রেস নয়, ভারতে এমন আরও কয়েকটি ট্রেন রয়েছে, যে ট্রেনে উঠলে নিজেকে রাজারাজড়া মনে হবে। সেই সব ট্রেনের দরজা খুলছে এই সেপ্টেম্বর-অক্টোবর থেকেই। সে সব ট্রেনের বৈশিষ্ট্য কী, খরচই বা কত? তা এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।

মহারাজা এক্সপ্রেসের প্রেসিডেন্সিয়াল স্যুটের একটি অংশ।

মহারাজা এক্সপ্রেস

আইআরসিটিসির এই বিলাসবহুল ট্রেন মূলত অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চলাচল করে। হয় দিল্লি অথবা মুম্বই থেকে ছাড়ে ট্রেনটি। অর্থাৎ এ ট্রেনে উঠতে হলে হয় ট্রেনে নয়তো বিমানে উজিয়ে দিল্লি কিংবা মুম্বইয়ে আসতে হবে।

প্যাকেজ: ৩ রাত ৪ দিনের একটি প্যাকেজ রয়েছে। যা বাড়়িয়ে ৬ রাত ৭ দিনও করে নেওয়া যায়। যাত্রাপথে আগরা, জয়পুর, রনথম্ভৌর, উদয়পুর, জোধপুর, বিকানের, খাজুরাহো অথবা বারাণসী পড়তে পারে। আপনি কোন রুট বেছে নিচ্ছেন তার উপরে নির্ভর করবে পুরোটাই।

বিশেষত্ব: প্রাসাদোপম স্যুট, দু’টি ফাইন ডাইনিং রেস্তরাঁ তো আছেই। এ ছাড়া ট্রেন সফরের মাঝেমাঝে যাত্রীদের ট্রেন থেকে নামিয়ে দুর্গ, প্রাসাদ, ব্যাঘ্র সংরক্ষণ অরণ্যে সফরেরও বন্দোবস্ত আছে।

খরচ: মাথাপিছু কমপক্ষে ৬.৯২ লক্ষ টাকা। যা বেড়ে ২২.২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। যদি ৬ রাত্রি ৭ দিনের প্যাকেজ নেওয়া হয়।

ট্রেনের ভিতরেই ফাইন ডাইনিং রেস্তরাঁ। পরিষেবায় হাজির স্যুটেড-বুটেড খিদমদগার।

ডেকান ওডিসি

মহারাষ্ট্র পর্যটনের উদ্যোগে তৈরি এই রাজকীয় ট্রেন পরিষেবা চলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে মে মাস পর্যন্ত।

প্যাকেজ: এই সফর বিভিন্ন ভাবনা এবং সফরের ধরনের ভিত্তিতে আলাদা আলাদা করা আছে। কোনওটির নাম ইন্ডিয়ান ওডিসি, কোনওটির নাম হিডেন ট্রেজ়ার অফ গুজরাত। এমনই ৮-১০ রকমের থিম সফর থেকে পছন্দেরটি বেছে নিতে হবে যাত্রীদের। সব ক’টি সফরই ৭ দিনের।

বিশেষত্ব: বিলাসবহুল স্যুট, কেবিন, ফাইন ডাইনিংয়ের পাশাপাশি স্পা পরিষেবা এবং ইউনেস্কো স্বীকৃত ইতিহাসপ্রসিদ্ধ এলাকায় ভ্রমণের সুযোগ। অজন্তা-ইলোরা থেকে শুরু করে উপকূলবর্তী প্রাচীন শহর, জঙ্গল ভ্রমণ, স্থানীয় সংস্কৃতির স্বাদ সবই থাকবে ওই সফরে।

খরচ: ডিলাক্স কেবিনে মাথাপিছু ৭.৪ লক্ষ থেকে ১১.৮ লক্ষ টাকা। প্রেসিডেন্সিয়াল কেবিনে ১৫.৮ লক্ষ থেকে ১৭.৮ লক্ষ পর্যন্ত ।

চলন্ত প্রাসাদে রাজস্থানের রাজপ্রাসাদের মতোই কারুকাজ।

প্যালেস অন হুইলস

চলন্ত প্রাসাদ। নামেই বুঝে যাওয়ার কথা বিষয়টি কী হতে চলেছে। উঠে বসলেও আশাহত হবেন না। মূলত সেপ্টেম্বর থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত চলে এই ট্রেন পরিষেবা।

প্যাকেজ: প্রতি বুধবার দিল্লির সফরদরজং স্টেশন থেকে রওনা হয় এই ট্রেন। রাজস্থান এবং আগরা ঘুরে ফেরে আবার দিল্লিতেই। পুরো প্যাকেজ ৮ দিন ৭ রাতের।

বিশেষত্ব: ট্রেনের ভিতরের মেঝে থেকে শুরু করে বসার জায়গা, এমনকি ছাতে শিসমহলের মতো হয় আয়না, নয়তো মিনাকারি কাজের নকশা! বিলাসবহুল লাউঞ্জ, ফাইন ডাইনিং, ব্রেকফাস্ট ক্যাফে, প্রাসাদোপম স্যুট, ডিলাক্স কেবিন তো আছেই। সেই সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী নানা পরিষেবাও থাকবে অতিথিদের জন্য। থাকবে ট্রেন থামিয়ে বেড়ানোর ব্যবস্থাও।

খরচ: দিনপ্রতি মাথাপিছু খরচ ২ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকা থেকে ২ লক্ষ ৮৮ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement