Durga Puja Travel 2025

কলকাতার অদূরে মন হারানোর ঠিকানা! পুজোয় অরণ্য-নদীর গল্প শুনতে চলুন বড়দি পাহাড়

পুজোর ছুটিতে সফরের জন্য ট্রেন, বাস, বিমানের টিকিট কাটা হয়নি? বেড়ানোর সঙ্গী হতে পারে চারচাকাই। আনন্দবাজার ডট কম-এ থাকছে সড়কপথে ভ্রমণের চেনা-অচেনা গন্তব্যের হদিস।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:২০
Share:

পাখির চোখে বড়দি পাহাড় সংলগ্ন এলাকা। বয়ে গিয়েছে নদী। ছবি: সৌম্য দে।

নাম পাহাড়, তবে টিলা বলাই ভাল। তাতে অবশ্য সৌন্দর্য কম পড়ে না মোটেই। কংসাবতী নদী, আরণ্যক পরিবেশ, গ্রাম-জীবনের গল্প শুনতে এই পুজোয় দু’টি দিন কাটাতে অনায়াসেই ঘুসে আসা যায় সেখানে। বাঁকুড়ার বড়দি পাহাড়। কলকাতা থেকে চারচাকায় যেতে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় লাগার কথাও নয়।

Advertisement

অথচ এক বার সেখানে পৌঁছে গেলে বিস্মিত হবেন অনেকেই। মনে হবে, এক বেলাতেই এমন জায়গাতেও পৌঁছনো যায়! কেউ বলেন, স্থানীয় বড়দি গ্রামের নামেই এর নাম। আছে ভিন্ন মতও। অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে ইংরেজ শাসকদের অত্যাচার মাত্রা ছাড়ালে বাঁকুড়া অঞ্চলের জমিদার ও তাঁদের লেঠেলরা বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন। রায়পুরের জমিদার দুর্জন সিংহ এই বিদ্রোহের মাথা হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু এক সময় ইংরেজ বাহিনীর কাছে তাঁকে হার মানতে হয়। শোনা যায়, ইংরেজদের কাছ থেকে লুকোতে ওই পাহাড়ে কয়েকটি দিন তাঁর বড়দির আশ্রয়ে ছিলেন তিনি। তা থেকেই এই জায়গার নাম বড়দি পাহাড়।

চারপাশে শাল-মহুয়ার বন। অরণ্য পথে হাঁটলে পা জড়িয়ে ধরে বুনো লতাপাতা। গাছের আড়ালে থাকা পাখিদের ডাকে সেই পরিবেশ আরও সুন্দর হয়ে ওঠে। বাঁকুড়ার তাপমাত্রা শীতের দিনে বড় মনোরম। তাই সেই সময়েই পর্যটকেরা আসেন এখানে। তবে বর্ষার রূপও কম সুন্দর নয়। এই বছর দীর্ঘায়িত বর্ষার ফলে পুজোর সময়েও প্রকৃতিতে থাকবে শ্যামলিমা।

Advertisement

বড়দি পাহাড় সংলগ্ন এলাকার ড্রোন ভিউ। ছবি: সৌম্য দে।

বড়দি পাহাড় থেকে কংসাবতীর রূপ বড় সুন্দর। টানা কয়েক দিন বৃষ্টি হলেই নদীর দু'কূল ছাপিয়ে তখন বয়ে যায় জল। তবে বৃষ্টির বাড়াবাড়ি না থাকলে নদীর বুকে নৌবিহারও সম্ভব। দিন দুয়েক অলস ভাবে ঘোরা এবং থাকার জন্য এই স্থান আদর্শ। কলকাতা থেকে খুব দূরে নয়, বলে আগাম প্রস্তুতির বিশেষ দরকার হয় না।

এখান থাকলে চড়তে পারেন পাহাড়। বিশেষ কষ্টকর নয়। পাহাড়ে ওঠার সময় চোখে পড়ে কংসাবতী। উঁচু থেকে তা আরও সুন্দর দেখায়। এক বার পাহাড়ের চূড়ায় উঠতে পারলে, চোখের সামনে বদলে যায় দৃশ্যপট। এখানে আছে শিবের থান। নির্জনে একটি ছোট্ট শিবমন্দির। মন্দির যে সব সময় খোলা থাকে, তা নয়। তবে অরণ্যের এই পথের শোভাই এখানে আসার অন্যতম কারণ হতে পারে।

গাড়ি সঙ্গেই থাকছে। ঘুরে নিতে পারেন মুকুটমণিপুর এবং গাংদোয়া ড্যাম। বড়দি পাহাড় থেকে মুকুটমণিপুরের দূরত্ব ৩০ কিলোমিটার, গাংদোয়া ড্যামের দূরত্ব ৮৩ কিলোমিটার। সময় লাগবে দু’ঘণ্টার একটু বেশি।

কী ভাবে যাবেন?

কলকাতা থেকে বড়দি পাহাড়ের দূরত্ব মোটামুটি ২১০ কিলোমিটারের মতো। কোন রাস্তা ধরে যাওয়া হচ্ছে, তার উপর দূরত্ব নির্ভর করবে। কলকাতা থেকে উলুবেড়িয়া, পীরাকাটা, গোয়ালতোড়, সারেঙ্গা হয়ে বড়দি পাহাড়। পুজোর সময় এই পথে সঙ্গ দেবে কাশফুল, সবুজ ধানগাছ। কখনও মিলবে জনপদ। এই পথের বেশির ভাগটাই চওড়া পিচের রাস্তা। গোয়ালতোড়ে ঢোকার আগে মিলবে শালের জঙ্গল।

কোথায় থাকবেন?

এখানে থাকার জন্য রয়েছে বড়দি পাহাড় ইকো রিসর্ট। পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে নদী। খানিক এগোলেই মিলবে পাহাড়ে চড়ার রাস্তা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement