জলপ্রপাতের এমন রূপ দর্শনে কোথায় যেতে হবে? রইল তিন ঠিকানা। ছবি: সংগৃহীত।
উঁচু পাহাড়ের উপর থেকে নেমে আসছে ঝর্না। যত বেশি জলের তোড়, ততই তার সৌন্দর্য। আর এমন রূপ বর্ষা ছাড়া কি সম্ভব? ঝর্না এবং জলপ্রপাতের রূপ এক এক জায়গায় এক এক রকম। কোথাও জলপ্রপাত নেমে এসেছে ধাপে ধাপে, কোথাও আবার জলের ক্ষয়কাজে তৈরি গিরিখাতই আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। তবে এই সব কিছুর মধ্যেই নজর কাড়ে সুউচ্চ পাহাড়ের উপর থেকে নেমে আসা জলধারা। আসলে উচ্চতার আকর্ষণই আলাদা।
কুঞ্চিকল জলপ্রপাত
কর্নাটকের অগুম্বেতে রয়েছে কুঞ্চিকল জলপ্রপাত। ছবি: সংগৃহীত।
কর্নাটকের অগুম্বে বর্ষার অন্যতম আকর্ষণ। সেখানেই ঘন অরণ্যের মধ্যে অবস্থান কুঞ্চিকল জলপ্রপাতের। উচ্চতা ৪৫৫ মিটার। মনে করা হয়, এটাই ভারতের সর্বোচ্চ জলপ্রপাত। ভরা বর্ষায় যখন সশব্দে জলধারা নেমে আসে পাহাড়ের উপর থেকে বাষ্পে ভরে যায় চারপাশ। সেই রূপ স্বর্গীয়। ঘন সবুজের ক্যানভাসে দুধ-সাদা জল নেমে আসছে ঝরঝরিয়ে— রঙের এই বৈপরীত্য চিত্তাকর্ষক। অ্যাডভেঞ্চারের শখ থাকলে এই বর্ষায় কুঞ্চিকল যাওয়ার পরিকল্পনা করতে পারেন। ঘন অরণ্যপথে পাড়ি দিতে হবে জলপ্রপাত দেখতে। উদুপি এবং মেঙ্গালুরু — যে কোনও একটি জায়গা থেকে সেখানে যাওয়া যায়। এটি পড়ছে শিমোগা জেলায়। তবে এই জলপ্রপাত দেখতে যেতে হলে আগাম অনুমতির দরকার পড়ে। ওই এলাকায় জলবিদ্যুৎ প্রকল্প রয়েছে। সেই কারণেই কড়াকড়ি।
বিমানে মেঙ্গালুরু বিমানবন্দর বা ট্রেনে উদুপি গিয়ে সেখান থেকে জলপ্রপাত ভ্রমণের পরিকল্পনা করতে পারেন।
বরেহপানি জলপ্রপাত
ওড়িশার বরেহপানি জলপ্রপাতও ভীষণ সুন্দর। ছবি: সংগৃহীত।
সিমলিপাল জাতীয় উদ্যানের ভিতরে রয়েছে বরেহপানি জলপ্রপাত। ৩৯৯ মিটার উঁচু পাহাড় থেকে নেমে আসছে জলধারা। সেই রূপের টান অমোঘ। জলস্রোত নেমে আসে দুই স্তরে। দূর থেকে শোনা যায় বরেহপানির ‘গর্জন’। তবে ভরা বর্ষায় সেখানে যাওয়ার ছাড়পত্র মেলে না। সিমলিপাল জাতীয় উদ্যানের অনেকটা অংশই এই মরসুমে পর্যটকদের জন্য বন্ধ থাকে। ফলে বরেহপানি যেতে হবে বর্ষা পার করে। সেপ্টেম্বরের শেষে কিংবা অক্টোবরে।
ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলায় পড়ে সিমলিপাল জাতীয় উদ্যান। বারিপদা এবং জসিপুর, এই দুই জায়গা দিয়ে সেখানে প্রবেশ করা যায়। ভুবনেশ্বর থেকে জসিপুরের দূরত্ব ২৫২ কিলোমিটার এবং বারিপদা ২৫২ কিলোমিটার। কলকাতা থেকে দূরত্ব প্রায় ৩০০ কিলোমিটার।
নোহকালিকাই জলপ্রপাত
বর্ষায় এমন রূপই থাকে মেঘালয়ের নোহকালিকাই জলপ্রপাতের। ছবি: সংগৃহীত।
এক সময় বিশ্বের সর্বাধিক বৃষ্টিপাতের স্থান হিসাবে ভূগোলের বইতে নাম ছিল চেরাপুঞ্জির। সেই স্থানের অদূরে অবস্থিত এই জলপ্রপাত। ৩৪০ মিটার উঁচু থেকে নেমে আসা নোহকালিকাইয়ের ফেনিল জলধারা মেঘালয়ের বড় আকর্ষণ। তবে এই রূপ ঘনঘোর বর্ষা ছাড়া অন্য সময় মেলে না। পাহাড়ের গা বেয়ে রয়েছে সিঁড়ি। সেখান দিয়ে জলপ্রপাতের নীচ পর্যন্ত যাওয়া যায়।
ট্রেনে বা বিমানে গুয়াহাটি পৌঁছে সড়কপথে মেঘালয় যেতে পারেন। দূরত্ব ১৬৫-১৭০ কিলোমিটারের মতো। শিলংয়েও বিমানবন্দর আছে।