Offbeat Travel Destination

জাঁকজমকের রাজবাড়ি, দেখা যায় পাহাড়, ‘ফেলুদা’-র শুটিং সেখানেই, জায়গাটি কোথায়?

পাহাড়-অরণ্যের শোভা মিলবে একইসঙ্গে। সন্ধ্যা হলেই গা-ছমছমে পরিবেশ। ফেলুদার শুটিংয়ের সেই স্থানেই এই শীতে ঘুরে নিন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৫ ১১:৫৯
Share:

এই ভবনেই গোয়েন্দা কাহিনি ‘রয়্যাল বেঙ্গল রহস্য’-এর শুটিং হয়েছিল। ছবি: সংগৃহীত।

দূর তবে বহু দূর নয়। ভিন রাজ্য হলেও চলবে, তবে ট্রেন যাত্রা খুব লম্বা নয়। ঘোরাঘুরির সময় আছে বটে, তবে ৫ দিনের বেশি নয়।

Advertisement

এত শর্ত মাথায় রেখে এই শীতে বেরিয়ে পড়তে চান, যেখানে আছে নির্জনতা, যেখানে আছে অনেক কিছু অদেখা, আর আছে রোমাঞ্চ, তা হলে চলুন ঢেঙ্কানল। কী, এই জায়গার নাম চেনা ঠেকছে না?

তা হলে বরং একটু সূত্র বলে দিই। ফেলুদার ছবি ‘রয়্যাল বেঙ্গল রহস্য’- যদি দেখে থাকেন, তা হলে পরিচয় হতে পারে এই স্থানের অংশবিশেষের সঙ্গে। অরণ্যপথ, আধ্যাত্মিকতা, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর বহু পুরনো রাজবাড়ি— তা নিয়েই সেজে উঠেছে ওড়িশার অরণ্যঘেরা জেলাটি। এই স্থানেই রয়েছে কৈলাস। না আসল কৈলাসের সঙ্গে মিল খুঁজতে যাওয়া অবান্তর। তবে ঢেঙ্কানলের কপিলাসের পাহাড়কে অনেকে ওড়িশার কৈলাসও বলেন।

Advertisement

এই পাহাড়, অরণ্যভূমির সঙ্গে মিশে রয়েছে আধ্যাত্মিকতা। এখানে এলে স্থানীয় সংস্কৃতিকে জানতে পারবেন খুব কাছ থেকে। উপভোগ করতে পারবেন অরণ্যের গহন রূপ।ওড়িশার নানা প্রান্তে রয়েছে এমনই সব স্থান, যা খুঁজে বের করতে পারলে পর্যটনের তালিকাই জুড়বে নতুন অনেক কিছুই।

পাহাড়ের মাথায় কপিলাস মন্দির। ছবি: সংগৃহীত।

শালিমার থেকে ট্রেন ধরে ঢেঙ্কানল। সেখান থেকে গাড়িতে বা বাসে কপিলাস। কপিলাসে থেকেই ঘুরে নিতে পারেন আশপাশের দ্রষ্টব্য স্থানগুলি। ঢেঙ্কানল শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে কপিলাস এই এলাকার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। স্থানীয়েদর কাছে অবশ্য স্থানটির মাহাত্ম্য অন্য রকম। পাহাড়ের মাথায় চন্দ্রশেখর মূর্তি। শিবের পুজো হয় এখানে। মন্দিরে যেতে গেলে উঠতে হয় বেশ কিছু সিঁড়ি। তবে এখন গাড়ি পাহাড়ের মাথা পর্যন্তই উঠে যাচ্ছে। প্রাচীন মন্দিরটি ওড়িশার স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত। পাহাড়ের কোলে শান্ত পরিবেশে দুধসাদা মন্দিরটি । শোনা যায়, রাজা নরসিংহ দেব এটি নির্মাণ করিয়েছিলেন। পাহাড়ের মাথা থেকে অরণ্যশোভা উপভোগ্য। এখান থেকে ঘুরে নিতে পারেন স্থানীয় চিড়িয়াখানা।

ঢেঙ্কানল জেলায় রয়েছে কপিলাস অভয়ারণ্য। চন্দ্রশেখর মন্দিরটিও অরণ্যঘেরা অঞ্চলেই পড়ে। হায়না, শেয়াল, জঙ্গল ক্যাট-সহ অসংখ্য বন্যপ্রাণের আস্তানা এই বনভূমি।

কপিলাস ছাড়াও ঢেঙ্কানল জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে নানা দর্শনীয় স্থান। তার মধ্যে একটি ঢেঙ্কানল প্রাসাদ। প্রায় দু’শো বছরের পুরনো প্রাসাদোপম অট্টালিকাতেই শুটিং হয়েছিল ‘রয়্যাল বেঙ্গল রহস্য’-এর। এই প্রাসাদের ঘর, শিকারের জিনিসপত্রের অনেক কিছুই চলচ্চিত্রে দেখানো হয়েছিল। এটি এখন বিলাসবহুল থাকার জায়গা। পর্যটকেরাও সেখানে থাকতে পারেন।

ঢেঙ্কানল প্রাসাদে ‘রয়্যাল বেঙ্গল রহস্য’ সিনেমার শুটিং-এর দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত।

ঢেঙ্কানলে রয়েছে মহিমা মন্দির। ঢেঙ্কানল থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে জোরান্ডায় মহিমা স্বামীর স্মৃতিতে এটি তৈরি হয়েছে। মাঘী পূর্ণিমায় এখানে বিশাল উৎসব হয়।

কপিলাস থেকে ঢেঙ্কানল মোটামুটি ২ দিনেই ঘুরে নেওয়া যায়। হাতে আর ২-৩ দিন সময় থাকলে পর্যটন তালিকায় জুড়তে পারেন সাতকোশিয়াও। ঢেঙ্কানল থেকে সাতকোশিয়া ব্যাঘ্র প্রকল্পের দূরত্ব ১৮৭ কিলোমিটার। মহানদীর ধারে অরণ্যঘেরা স্থান। ওড়িশা সরকারের অতিথি নিবাসও রয়েছে সেখানে। অরণ্যের মাঝেই থাকার ব্যবস্থা। মহানদীতে নৌবিহার করা যায়। সূর্যাস্তের সময় এই স্থান অপূর্ব সুন্দর দেখায়। নদী, পাহাড় এবং অরণ্যের সহাবস্থান রয়েছে এই স্থানে। অরণ্যে সাফারির যেমন সুযোগ রয়েছে, কাছেপিঠে বেশ কিছু দ্রুষ্টব্যও রয়েছে। মহানদীর চওড়া বালুতট শীতের দিনে বেশ সুন্দর। সেখানেই ঘুরে-ফিরে অনেকটা সময় কাটানো যায়। নৌ বিহারের সময়ে চোখে পড়তে পারে কুমিরের আনাগোনা, রোদ পোহানো। কথিত আছে, ৭ ক্রোশের নদীখাত থেকে এই স্থানের নাম সাতকোশিয়া।

কী ভাবে যাবেন?

শালিমার থেকে সম্বলপুর সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ধরে পৌঁছন ঢেঙ্কানল। সেখান থেকে গাড়িতে কপিলাস। ভুবনেশ্বর এবং কটক থেকেও সড়কপথে পৌঁছনো যায়, সেক্ষেত্রে সড়কপথে কপিলাসের দূরত্ব খানিক বাড়বে। ভুবনেশ্বর থেকে ট্রেনেও ঢেঙ্কানল যাওয়া যায়। একাধিক ট্রেন আছে।

কোথায় থাকবেন?

ঢেঙ্কানলে ওড়িশা পর্যটন দফতেরর অতিথি নিবাস আছে। সাতকোশিয়াতেও ওড়িশা সরকারে থাকার ব্যবস্থা আছে। কপিলাসে বিভিন্ন মানের হোটেলও মিলবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement