Darjeeling vs Kalimpong

দার্জিলিং না কি কালিম্পং? কোন পাহাড়ি শহর বেশি সুন্দর? নয়া তর্কে আপনার কী মত?

অনেকেই দার্জিলিঙের বদলে কালিম্পঙে ঘুরতে ভালবাসেন। পাহাড়ি শহর ছাড়িয়ে গ্রামের দিকেও ঘোরা যায়। কিন্তু কালিম্পং শহরেও তো গাড়িঘোড়ার ভিড়, ঠান্ডার আমেজ আরও খানিক কম। তবে সমস্ত প্রতিকূলতার পরও দার্জিলিঙের ভিড় এড়াতে কালিম্পং বেছে নিচ্ছেন অনেকে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২৫ ০৯:৫৬
Share:

দার্জিলিঙের ভিড়ে কালিম্পং বেছে নিচ্ছেন অনেকে। ছবি: সংগৃহীত।

‘‘যেন কলকাতার পুজোর ভিড়!’’ গত কয়েক বছর ধরে দার্জিলিঙে বেড়াতে যাওয়া বাঙালি পর্যটকদের মুখে এ কথাই শোনা যাচ্ছে। জনসমুদ্রে না ম্যালের আমেজ উপভোগ করা যাচ্ছে, না ভিউ পয়েন্টের, টাইগার হিলে শুধুই মানুষের মাথা দেখা যাচ্ছে। এমনই পরিস্থিতিতে পর্যটকেরা ম্যাপ খুলে বসে আশপাশের নির্জন গ্রামের সন্ধান চালাচ্ছেন। কিন্তু কেউ কেউ আবার পাহাড়ি গ্রামের চেয়ে পাহাড়ি শহর বেশি পছন্দ করেন। তা হলে কি তাঁদের জন্য উত্তরবঙ্গে আর কোনও বিকল্পই রইল না? এখানেই উঠে আসে কালিম্পঙের প্রসঙ্গ। অনেকেই দার্জিলিঙের বদলে কালিম্পঙে বেড়াতে ভালবাসেন। পাহাড়ি শহর ছাড়িয়ে গ্রামের দিকেও ঘোরা যায়। কিন্তু কালিম্পং শহরেও তো গাড়িঘোড়ার ভিড়, ঠান্ডার আমেজ আরও খানিক কম। তবে সমস্ত প্রতিকূলতার পরেও দার্জিলিঙের ভিড় এড়াতে কালিম্পং বেছে নিচ্ছেন অনেকে। কেন বাড়ছে কালিম্পঙের জনপ্রিয়তা? পরের ছুটিতে উত্তরবঙ্গ ঘুরতে চাইলে দার্জিলিং না গিয়ে কি কালিম্পঙেই থেকে যেতে চান?

Advertisement

দার্জিলিং ম্যাল। নিজস্ব চিত্র।

দার্জিলিঙের বদলে কেন কালিম্পংকে বেছে নিতে পারেন?

১. প্রায় ১২৫০ মিটার উচ্চতার পাহাড়ি শহর। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র, ঔপনিবেশিক আমলের ছাপ, সব মিলিয়ে ছুটির ঠিকানা হিসেবে কালিম্পং উপযুক্ত। সবচেয়ে জরুরি বিষয়, দার্জিলিঙের মতো ভিড়ভাট্টা চোখে পড়বে না। প্রকৃতির সঙ্গে নির্জনে সময় কাটাতে চাইলে, তা এখানে সম্ভব।

Advertisement

২. পুজো হোক বা শীত, অথবা গরমের ছুটিতে (অর্থাৎ পর্যটনের ‘সিজ়ন’ যাকে বলে) দার্জিলিঙে সমস্ত হোটেল ভর্তি হয়ে যায় আগে থেকেই। কেনাকাটা করার বাজারগুলিতে পা রাখা যায় না। গ্লেনারিজ় বা কেভেন্টার্সে খেতে যাওয়ার জন্য দীর্ঘ লাইনের শেষটুকু দেখা যায় না। শহরে ঢোকার বেশ খানিক আগে থেকে রাস্তা বন্ধ হয়ে থাকে গাড়ির ভিড়ে। কিন্তু কালিম্পঙে এমন ভিড় এখনও পর্যন্ত সে ভাবে হয় না। ফলে বেড়াতে যাওয়ার উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়ে যাবে না।

৩. কালিম্পঙের ক্যাফে-রেস্তরাঁগুলিতে অনেক ক্ষণ বসে থেকে খাওয়া যাবে। টেবিল খালি করার তাড়া থাকবে না। স্থানীয় বাজারগুলিতেও ঘুরে ঘুরে শান্তিতে কেনাকাটা করতে পারবেন।

কালিম্পঙের সৌন্দর্য। নিজস্ব চিত্র।

৪. অনেকেই ভাবেন, আকাশ পরিষ্কার থাকলে দার্জিলিং থেকে যত সুন্দর কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়, কালিম্পঙে কি তা সম্ভব হবে? অবশ্যই সম্ভব। কালিম্পং থেকেও শ্বেতশুভ্র তুষারশৃঙ্গ দেখতে পাওয়া যায়। ভিউপয়েন্ট থেকেও বরফে ঢাকা শৃঙ্গ দেখা যায় পাখির ডাক শুনতে শুনতে। আশপাশে স্থানীয়দের পাবেন, পর্যটকদের কম।

৫. গাছপালা, ফুল, ফলে ভর্তি কালিম্পং। প্রচুর নার্সারিতেও গাছেদের আশ্রয়। দার্জিলিঙে যেমন হ্যাপি ভ্যালির চা বাগানে ঘুরে বেড়াতে ভাল লাগে, ঠিক সে ভাবেই এখানে পাহাড়ি বাগানগুলিতে হেঁটে বেড়ানো যায়। রংবেরঙের ফুলগাছে চোখ ধাঁধিয়ে যাবে।

৬. সাংস্কৃতিক আমেজের টানে অনেকে দার্জিলিং শহরে ঘুরতে যান। কিন্তু সে আমেজ কিন্তু কালিম্পঙেও পাবেন। এই শহরের মজা লুকিয়ে রয়েছে তার সাংস্কৃতিক বৈচিত্রে। একই জায়গায় নেপালি, ভুটানি, তিব্বতি, বাঙালি এবং ব্রিটিশ সংস্কৃতি মিলেমিশে রয়েছে সেখানে। ফোডাং গুম্ফা থেকে শুরু করে মর্গ্যান হাউস পর্যন্ত বৈচিত্র অফুরান।

৭. চারখোল, কোলাখাম, রামধুরা, কাফেরগাঁও, এমন সমস্ত ছোট ছোট গ্রামে ঘুরতে যাওয়া যায় কালিম্পং থেকে। গাড়িঘোড়ার ভিড়ে রাস্তা আটকানোর সম্ভাবনা নেই। বরং খুব তাড়াতাড়ি মেঘকে সঙ্গী করে রাস্তা উপভোগ করতে করতে ঘুরে আসা যায় সে সব নিরিবিলি গ্রাম থেকে। দার্জিলিং থেকেও যদিও অনেক গ্রামে ঘুরে আসা যায়, কিন্তু ভিড়ের সময়ে শহর পেরোতেই অনেকখানি সময় লেগে যায়।

দার্জিলিংকে বাদ দিয়ে কালিম্পং হবে না। আবার কালিম্পংকেও বাদ দিয়ে দার্জিলিং নয়। এই দু’টি জায়গা একে অপরের পরিপূরক যেন। ভিড়ের সময়ে এলে দার্জিলিং ছাড়াও কালিম্পংকে বিকল্পের মধ্যে রেখে দিতে পারেন। আবার অফ-সিজ়নে উত্তরবঙ্গ সফর হলে দুই শহরই আপনার তালিকায় থাকতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement