পছন্দের জায়গায় বেড়ানোর জন্য কী ভাবে সঞ্চয় করবেন? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
ল্যাপটপের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে সুন্দর ছবি দেখে কখনও কারও না কারও মনে হয়, যদি সেখানে যাওয়া যেত! কোথায় সেই জায়গা, যাওয়ার খরচ কত, তা নিয়ে খোঁজ নিতে গেলেই অনেক সময় থমকে যায় স্বপ্ন। হয়তো দেখা যায়, অর্থের মাপকাঠিতে সাধ্যের বাইরে সেই স্থান।
কিন্তু স্বপ্ন থাকলে, সেই স্বপ্নপূরণের পথও খোঁজা জরুরি। আর এ কাজে সাহায্য করতে পারে অর্থ সঞ্চয়ের সঠিক কৌশল। দৈনন্দিন খরচ-খরচার পরে বেড়ানোর জন্য আলাদা ফান্ড তৈরি করা খুব সহজ না হলেও, কঠিন নয়।
১। সপ্তাহান্তের ছুটি মানেই বাইরে খাওয়া, এটা-সেটা কেনা, ঘোরা-বেড়ানো। মাসের কোনও একটি সপ্তাহা্ন্তে অন্তত বাড়তি খরচ না করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। মাসে একটি বা দু’টি সপ্তাহ— এই ভাবে বেহিসেবি খরচ না করে, সেই টাকাটাই ভ্রমণের জন্য সঞ্চয় করা যায়। সিনেমা দেখতে যাওয়া, বাইরে খাওয়া বাবদ যে খরচ হত, সেই অঙ্কের টাকাই সরিয়ে রাখুন। এ ভাবেও কিন্তু এক মাসে ২ হাজার থেকে ৪-৫ হাজার পর্যন্ত টাকা সঞ্চয় করা যায়।
২। মাসের শেষে ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্টে চোখ রাখুন। এমন অনেক খাতে খরচ হয়ে যায়, যা আটকানো সম্ভব। যেমন জিমে যাওয়া হচ্ছে না, অথচ মাসে মাসে টাকা দিয়ে যেতে হচ্ছে। সন্তানের হয়তো বিশেষ কোনও একটি শিক্ষায় আগ্রহী নেই, তাকে জোর করে ক্লাসে পাঠানো হচ্ছে বা সে যাচ্ছে না। খুঁজলে এমন অনেক কিছুই পাওয়া যাবে, যেখানে অর্থের অপচয় হচ্ছে। অনেক সময় ওটিটি প্ল্যাটফর্ম থেকে ম্যাগাজ়িন— এমন অনেক বার্ষিক সাবস্ক্রিপশন নেওয়া হয়ে থাকে, যেগুলি দেখা বা পড়া হয় না। এমন জিনিস খুঁজে বার করে সেখান থেকে ভ্রমণের খাতে সাশ্রয় করা সম্ভব।
৩। সঞ্চয়ও মজার হতে পারে। সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, ঘরের আনাচকানাচে বা পকেট থেকে যদি কোনও ভুলে যাওয়া টাকা পাওয়া যায়, সেটা ভ্রমণ খাতেই সঞ্চয় করবেন। বিষয়টি মোটেও হাস্যকর নয়। অনেক সময় ব্যাগ হাতড়ে এমন নোট পাওয়া যায়। বিছানার কোণে, আলমারির তাকেও রেখে দিয়ে ভুলে যাওয়া টাকা খুঁজে পাওযা যায়। সেগুলি সঞ্চয় করতে পারেন।
৪। বাড়তি উপার্জনেও মন দেওয়া যেতে পারে। পরিবারের সকলেই সেই চেষ্টা করতে পারেন। অনেক সময় ঘরে বসেও টুকিটাকি ব্যবসা, অনলাইনে কাজ করা যায়। উপার্জন বাড়লে অর্থও সঞ্চিত হবে দ্রুত।
৫। ঘন ঘন চা-সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস থাকলে মাসের শেষে অনেক টাকাই বেরিয়ে যায়। চা খাওয়ার অভ্যাস থাকলে সঙ্গে টি-ব্যাগ রাখতে পারেন। অফিসে গরম জলের ব্যবস্থা করে নিলে এই খাতে খরচ কমবে। একই ভাবে প্রতি দিন টুকিটাকি খাবার বা বাইরে মধ্যাহ্নভোজ সারলে মাসের শেষে যে খরচ হয়, তা অর্ধেক হতে পারে বাড়ি থেকে রান্না করা খাবার খেলে।
বেড়ানোর মূল খরচ কোথা থেকে আসবে?
আর্থিক পরামর্শদাতারা বলেন, বেড়ানো জীবনের অন্যতম লক্ষ্য হলে এই খাতের জন্যই অর্থ সঞ্চয় জরুরি। সাংসারিক খরচ আছেই। আপৎকালীন পরিস্থিতি, সন্তানের পড়াশোনার জন্য সঞ্চয় জরুরি। এর বাইরে বার্ষিক উপার্জনের ১ থেকে ১০-১২ শতাংশ অর্থ কিন্তু ভ্রমণ খাতে বরাদ্দ করা যেতে পারে।