পর্যটক টানতে এ বার জোড়া কুমির আসছে গড়চুমুকে

এত দিন ছিল ময়ূর, চিতল হরিণ, শজারু। গত মাসে আনা হয়েছে কচ্ছপ। এ বারে আসছে দু’টি কুমির। নতুন বছরের শুরুতেই গড়চুমুকে ‘মিনি জু’র তকমা পাওয়া হরিণ পার্কে টুপিতে জুড়তে চলেছে নতুন পালক। হাওড়া জেলা বন দফতর সূত্রের খবর, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে দু’টি কুমির আনা হবে গড়চুমুকে। এর জন্য হরিণ পার্কে তৈরি করা হয়েছে পুকুর। তার চারদিক প্রাচীর দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে।

Advertisement

নুরুল আবসার

শ্যামপুর শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪ ০২:২৮
Share:

গড়চুমুকের মৃগদাবে চড়ছে হরিণ (বাঁ দিকে)। কুমির আনার জন্য এখানেই তৈরি হচ্ছে পরিকাঠামো (ডান দিকে)। ছবি তুলেছেন সুব্রত জানা।

এত দিন ছিল ময়ূর, চিতল হরিণ, শজারু। গত মাসে আনা হয়েছে কচ্ছপ। এ বারে আসছে দু’টি কুমির।

Advertisement

নতুন বছরের শুরুতেই গড়চুমুকে ‘মিনি জু’র তকমা পাওয়া হরিণ পার্কে টুপিতে জুড়তে চলেছে নতুন পালক। হাওড়া জেলা বন দফতর সূত্রের খবর, ১৫ জানুয়ারির মধ্যে আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে দু’টি কুমির আনা হবে গড়চুমুকে। এর জন্য হরিণ পার্কে তৈরি করা হয়েছে পুকুর। তার চারদিক প্রাচীর দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে।

এতেই শেষ নয়। পাখির জন্য চারটি পাকা ঘর তৈরি হচ্ছে। বিরল প্রজাতির পাখি রাখার জন্যও তৈরি হচ্ছে ঘর। পাখিও এসে যাবে শীঘ্রই। অদূর ভবিষ্যতে আনা হবে ভল্লুক। পরে চিতাবাঘ আনারও পরিকল্পনা আছে বলে বন দফতর সূত্রের খবর।

Advertisement

দামোদরের তিরে গড়চুমুক হাওড়া জেলা তথা দক্ষিণবঙ্গের অন্যতম সেরা পর্যটন কেন্দ্র। সেখানকার বাংলো, চড়ুইভাতি করার জায়গা ও চিলড্রেন্স পার্ক জেলা পরিষদ রক্ষণাবেক্ষণ করে। চত্বরের মধ্যেই রয়েছে তারের জাল দিয়ে ঘেরা হরিণ পার্ক। সেখানে রয়েছে ৮৫টি চিতল হরিণ, ২টি শজারু এবং ৪টি ময়ূর এবং ৫২টি বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। এই সব পশুপাখির রক্ষণাবেক্ষণ করেন বন কর্মীরা। তাদের জন্য চিকিত্‌সাকেন্দ্র রয়েছে।

বছর দুই আগে এই হরিণ পার্ককে ‘মিনি জু’-এর তকমা দিয়েছে সেন্ট্রাল জু অথরিটি। তার পরেই স্টেট জু অথরিটি এর উন্নতির জন্য নানা প্রকল্প হাতে নেয়। তার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যৌথ ভাবে টাকা দিচ্ছে। রাজ্য বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে তিনটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। তারই মধ্যে রয়েছে কুমির প্রকল্প, কচ্ছপ প্রকল্প এবং পাখি প্রকল্প। এর জন্য ৪০ লক্ষ টাকা খরচ করা হচ্ছে। কচ্ছপের জন্য ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে নতুন পুকুর। আকর্ষণীয় ভাবে বাঁধানো হয়েছে তার পাড়। ৪২৫টি কচ্ছপ রাখা হয়েছে। কুমিরের জন্য পুকুর তৈরির কাজও প্রায় শেষ। তারও পাড় বাঁধানো হয়ে গিয়েছে। জেলা পরিষদের বন ও পরিবেশ সংক্রান্ত কর্মাধ্যক্ষ মানস বসু এবং হাওড়া জেলা বনাধিকারিক মাজেদার রহমান বলেন, “এখানে দু’টি কুমির আনা হবে। তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

নানা প্রজাতির পাখি রাখার জন্য চারটি বিশেষ ধরনের খাঁচা তৈরি হচ্ছে। মাসখানেকের মধ্যেই সেগুলি তৈরি হয়ে যাবে বলে জেলা পরিষদ সূত্রে জানানো হয়েছে। মানসবাবু বলেন, “চিতাবাঘ আনার ব্যাপারে কিছু নির্দিষ্ট পরিকল্পনা হয়েছিল। স্টেট জু অথরিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চিতাবাঘ খুব সংবেদশীল প্রাণী। সর্বক্ষণের চিকিত্‌সক মজুত রাখার ব্যবস্থা হলে অনুমতি দেওয়া হবে। ভবিষ্যতে আমরা সেই ব্যবস্থা অবশ্যই করব। এখানে ভালুক আনারও পরিকল্পনা রয়েছে।”

গড়চুমুকে যাঁরা চড়ুইভাতি করতে আসেন, তাঁদের কাছে উপরি এই মিনি জু। এত দিন হরিণ, শজারু, পাখি, ময়ুর দেখতেই তারের জালের বাইরে ভিড় ভেঙে পড়ত। রাজ্য বন দফতরের এক পদস্থ আধিকারিকের মতে, এখনও পর্যন্ত গড়চুমুককে লোকে চড়ুইভাতি করার জায়গা হিসেবেই বেশি চেনে। কিন্তু মিনি জু আড়ে-বহরে বাড়লে শুধু চিড়িয়াখানা দেখার জন্যও ভিড় হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন