ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
সাপে ভরা পরিত্যক্ত কুয়োয় পড়ে গিয়েছিলেন। ৫৪ ঘণ্টা ধরে সাপের কামড়, মশার কামড়, ক্লান্তি নিয়ে কুয়োর দেওয়াল ধরে আটকে থাকলেন এক তরুণী। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব চিনে। ৫৪ ঘণ্টা ধরে কুয়োয় আটকে থাকার পর উদ্ধার করা হয় তরুণীকে। আলৌকিক ভাবে প্রাণে বেঁচেছেন তিনি।
চিনা সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৩ সেপ্টেম্বর। ৪৮ বছর বয়সি কিন নামের তরুণী ফুজিয়ান প্রদেশের কোয়ানঝোর জঙ্গলে ঘুরতে গিয়েছিলেন। জঙ্গলে হাঁটতে হাঁটতে আচমকা একটি পরিত্যক্ত গভীর কূপে পড়ে যান। কূপটি ছিল সাপে ভরা। কুয়োয় পড়ার পরেই একাধিক সাপের কামড় খান কিন। মশার দল ছেঁকে ধরে তাঁকে। বাঁচার চেষ্টায় মরিয়া তরুণী অনেক চেষ্টা করে কুয়োর ভিতরের দেওয়াল বেয়ে সামান্য উঠে আসেন। কিন্তু আর উঠতে পারেননি। সে ভাবেই ঝুলতে থাকেন ৫৪ ঘণ্টা।
পরের দিন তাঁর নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের হয়। ১৫ সেপ্টেম্বর কিনকে খুঁজতে জঙ্গলে তল্লাশি অভিযান শুরু করে পুলিশ। কিনের পুত্রও এক উদ্ধারকারী দলের কাছে সাহায্যের আবেদন করেন। উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। ড্রোন দিয়ে সারা জঙ্গলে খোঁজ চালানো হয়। অবশেষে দুপুর ২টো নাগাদ কিনের খোঁজ মেলে। তরুণীর ক্লান্ত চিৎকারে গভীর কূপটি আবিষ্কার করেন উদ্ধারকারীরা। এর পর কুয়োর উপরের গাছপালা পরিষ্কার করা হয়। উদ্ধারকারীরা দেখেন, কিনের শরীরের অর্ধেক জলের নীচে। ফ্যাকাশে আঙুল দিয়ে কুয়োর দেওয়ালের একটি ফাটল ধরে রেখেছেন মরিয়া হয়ে। এর পর উদ্ধারকারীরা ধীরে ধীরে তুলে আনেন কিনকে।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কিনকে উদ্ধারের পর তাঁর সারা শরীরে সর্পদংশনের একাধিক চিহ্ন দেখতে পাওয়া যায়। কিন্তু সাপগুলি বিষধর ছিল না বলেই মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়়া মশার কামড়ের কারণে তাঁর সারা শরীর লাল হয়ে গিয়েছিল। কিনের পাঁজরের একটি হাড়ও ভেঙে গিয়েছে বলে খবর। উদ্ধারের পরেই তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে চিকিৎসার জন্য কোয়ানঝোর অন্য একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় কিনকে। বর্তমানে তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল।
কিনের খবর ইতিমধ্যেই হইচই ফেলেছে সমাজমাধ্যমে। তাঁর সাহসিকতার জন্য তাঁকে কুর্নিশ জানিয়েছেন নেটাগরিকেরা। অনেকে আবার তাঁর বেঁচে যাওয়াকে অলৌকিক তকমাও দিয়েছেন। এক নেটাগরিক লিখেছেন, ‘‘অকল্পনীয়। অলৌকিক। মৃত্যুকে জয় করে ফিরেছেন তরুণী।’’ অন্য এক জন আবার লিখেছেন, ‘‘নিজেকে ওই জায়গায় শুধু কল্পনা করলেও আঁতকে উঠছি। তরুণীকে কুর্নিশ জানাচ্ছি।’’