ছবি: সংগৃহীত।
কিশোরী কন্যার পোষ্য টাট্টু ঘোড়া চিড়িয়াখানায় দান করেছিলেন মা। সেই টাট্টু ঘোড়াকে মেরে সিংহদের খাইয়ে দিলেন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। ঘটনাটি ঘটেছে ডেনমার্কের অ্যালবর্গ চিড়িয়াখানায়। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরেই বিশ্বব্যাপী ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শিকাগো ৫৭ নামে ২২ বছর বয়সি জার্মান টাট্টু ঘোড়াটিকে পুষেছিল অ্যাঞ্জেলিনা সল নামে ডেনমার্কের ১৩ বছর বয়সি এক কিশোরী। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে গুরুতর চর্মরোগে ভুগছিল সেই ঘোড়া। গ্রীষ্মকালে তার অবস্থা আরও খারাপ হয়। ক্ষত তৈরি হয় ঘোড়াটির শরীরে। সংক্রমণের আশঙ্কাও তৈরি হয়। পোশাক পরিয়ে রক্ষা করার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ঘোড়াটির স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকে ক্রমাগত।
এর পর কন্যার সম্মতিতে টাট্টু ঘোড়াটিকে অ্যালবর্গ চিড়িয়াখানায় দান করার সিদ্ধান্ত নেন অ্যাঞ্জেলিনার মা পার্নিল। প্রথমে তিনি ঠিক করেছিলেন গবেষণার জন্য দান করবেন কন্যার প্রিয় পোষ্যকে। তবে পরে তিনি সেটিকে চিড়িয়াখানায় দান করে দেন। তবে মা এবং মেয়ে দু’জনেই জানতেন যে প্রাকৃতিক খাদ্যশৃঙ্খলের অংশ হিসাবে টাট্টু ঘোড়াটিকে চিড়িয়াখানার অন্য মাংসাশী প্রাণীদের খাইয়ে দেওয়া হবে।
পার্নিল জানিয়েছেন, চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ টাট্টু ঘোড়াটিকে বিদায় দেওয়ার আগে তার গায়ে হাত বুলিয়ে দেন, খাবার খাওয়ান। এর পর তিনি এবং অ্যাঞ্জেলিনা চিড়িয়াখানা থেকে চলে আসার পর টাট্টু ঘোড়াটিকে মেরে তার মাংস চিড়িয়াখানার সিংহদের খেতে দেওয়া হয়।
বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়েছে সমাজমাধ্যমে। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন নেটাগরিকেরা। তৈরি হয়েছে বিতর্ক। হাজার হাজার মানুষ কিশোরীর পোষ্য টাট্টু ঘোড়াকে মেরে সিংহকে খাওয়ানোর বিষয়টি ‘অসংবেদনশীল’ বলে অভিহিত করেছেন। কেউ কেউ ওই মহিলার সমালোচনা করেও সরব হয়েছেন।
যদিও অ্যালবর্গ চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্তের সপক্ষে যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন, প্রাকৃতিক খাদ্যশৃঙ্খল বজায় রাখার জন্যই ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাঁরা। কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছেন, চিড়িয়াখানাটি নিয়মিত ভাবে খরগোশ, মুরগি এবং গিনিপিগের মতো ছোট, অবাঞ্ছিত প্রাণীদের দান গ্রহণ করে। পরে তাদের মেরে চিড়িয়াখানার সিংহ, মেরুভালুক এবং বাঘেদের খাদ্য হিসাবে দেওয়া হয়।