ছবি: সংগৃহীত।
অটোয় চড়ে অফিসের ফোনে ব্যস্ত হয়েছিলেন তরুণী। ফোন রাখতেই চালকের আসন থেকে ভেসে এল প্রশ্ন, “ম্যাডাম আপনি কি কোনও সংস্থার এইচআর বিভাগে কর্মরত? আমার একটি চাকরির প্রয়োজন রয়েছে। আপনি কি আমাকে কোনও ভাবে সাহায্য করতে পারেন?’’ চালকের কথা শুনে অবাক হন তরুণী। তবে এখানেই শেষ নয়, চালকের পূর্বের চাকরির অভিজ্ঞতা শুনে হতবাক হয়ে যান বেঙ্গালুরুর ওই তরুণী। অটো চালানোর পেশা বেছে নেওয়ার আগে ওই যুবক নামী একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত ছিলেন। তাঁর কাজের অভিজ্ঞতাও যথেষ্ট ছিল। সংস্থায় তিনি মান বিশ্লেষক (কোয়ালিটি অ্যানালিস্ট) পদে কর্মরত ছিলেন।
গায়ত্রী গোপাকুমার নামের ওই তরুণী লিঙ্কডইনে তাঁর এই অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেছেন। অটোচালক যুবকের নাম সুরেন্দ্র। তাঁর কথা জেনে গায়ত্রী অবাক, সুরেন্দ্র তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরের এক কর্মচারী ছিলেন। যখন আমরা অটো বা রিকশায় ভ্রমণ করি, তখন আমরা ভাবি যে চালক হয়তো খুব বেশি শিক্ষিত নন। সুরেন্দ্রের গল্পটি এঁদের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। ভাগ্যের দোষে তাঁর চাকরিটি খোয়া যায়।
সুরেন্দ্রর জীবন মোটামুটি সুখেরই ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই তাঁর জীবনে এমন এক পরিস্থিতির উদ্ভব হয় যা সব কিছু বদলে দেয়। তাঁর স্ট্রোক হয়। ফলে তাঁকে চাকরি ছেড়ে দিতে হয়। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। চাকরি যাওয়ার কারণে খরচ মেটাতে অটোচালকের পেশা বেছে নিতে হয়েছে তাঁকে। এখন সুরেন্দ্র আবার তাঁর পুরনো পেশায় ফিরতে চান। তিনি মান বিশ্লেষক, অপারেশন সাপোর্ট বা ব্যাক অফিসের মতো যে কোনও পদের জন্য আবেদন করতে ইচ্ছুক। এমন কোনও পদ, যেখানে তাঁর অভিজ্ঞতা কাজে আসতে পারে। গায়ত্রী সুরেন্দ্রকে সাহায্য করার জন্য সমাজমাধ্যমে আবেদন করেছেন যাতে তিনি কর্পোরেট জগতে পুনরায় নিজের দক্ষতা প্রমাণ করতে পারেন। পোস্ট দেখে সকলেই সুরেন্দ্রর লড়াইকে কুর্নিশ জানিয়েছেন। এক সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারী বলেছেন, ‘‘আশা করি সুরেন্দ্র শীঘ্রই চাকরি পাবেন।’’ আর এক জন বলেছেন, ‘‘আমরা তাঁকে তাঁর চাকরিতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করব।’’