Malnutrition

অপুষ্টি রোধে অর্থদণ্ড ১০ লক্ষ

’এ দিন সাতটি মামলায় মোট ১৬ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৪৯
Share:

প্রতীকী চিত্র।

নির্দেশ না-মানায়ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে সেই অর্থদণ্ডই। তবু স্বাস্থ্য কমিশন বুধবার যে-পদক্ষেপ করল, তা অনেকটাই স্বতন্ত্র এবং দৃষ্টান্তমূলক বলে স্বাস্থ্য শিবিরের অনেকের অভিমত। সাধারণত কোনও নির্দেশ না-মানলে অভিযুক্ত বেসরকারি হাসপাতালকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ, জরিমানা বা টাকা ফেরতের নির্দেশ দিয়ে থাকে স্বাস্থ্য কমিশন। এ দিন সেই পদ্ধতির কিঞ্চিৎ বদল ঘটাল রাজ্যের বেসরকারি হাসপাতালগুলির নিয়ন্ত্রক সংস্থা। করোনা সংক্রান্ত অ্যাডভাইজ়রি বা পরামর্শ-নির্দেশিকা না-মানায় রাজ্যের প্রথম সারির কর্পোরেট হাসপাতালকে সামাজিক দায়বদ্ধতা স্মরণ করিয়ে দিল স্বাস্থ্য কমিশন। নির্দেশ দিল, শিশুদের অপুষ্টি দূরীকরণে ১০ লক্ষ টাকা দিতে হবে ওই হাসপাতালকে।

Advertisement

কোভিড চিকিৎসার খরচ নিয়ন্ত্রণে অগস্টে একটি পরামর্শ-নির্দেশিকা দিয়েছিল কমিশন। বেসরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগে সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা বাবদ রোগী এবং তাঁর পরিজনের কাছ থেকে সর্বাধিক কত টাকা নেওয়া যাবে, তা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল সেই পরামর্শ-নির্দেশিকায়। জীবাণুমুক্তি, পিপিই বা বর্মবস্ত্র, গ্লাভস বা দস্তানার খরচ বাবদ সর্বাধিক ১৫০ টাকা ধার্য করা হয়েছিল। কিন্তু পরামর্শ-নির্দেশিকা লঙ্ঘন করে গত অক্টোবরে ঢাকুরিয়ার এক দম্পতির কাছ থেকে ২৫০ টাকা করে ৫০০ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মেডিকা হাসপাতালের বিরুদ্ধে।

ওই দম্পতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ দিন শুনানির পরে অভিযুক্ত হাসপাতালকে ‘কর্পোরেট সোশ্যাল রেসপন্সিবিলিটি’র আওতায় এক মাসের মধ্যে শিশুদের অপুষ্টি দূরীকরণ সংক্রান্ত একটি সামাজিক প্রকল্পে ১০ লক্ষ টাকা দিতে বলা হয়েছে। ওই হাসপাতালের প্রতিনিধির বক্তব্য ছিল, প্রযুক্তিগত ত্রুটিতে এটা ঘটেছে। কিন্তু সেই বক্তব্য কমিশনকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। গত তিন মাসে এই ভাবে ক’জন রোগীর কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়েছে, সেই তথ্য দিতে না-পারায় স্বাস্থ্য কমিশন এ দিন ওই নির্দেশ জারি করেছে।

Advertisement

কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, প্রকল্পটি পরিচালনা করবেন লেডি ব্রেবোর্ন কলেজের অধ্যক্ষা শিউলি সরকার। সেই কাজে তাঁর সঙ্গে সহযোগিতা করবেন কমিশনের সদস্য-চিকিৎসক মৈত্রেয়ী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শিশু চিকিৎসক বর্ণালী ঘোষ। প্রকল্পের টাকায় লেডি ব্রেবোর্ন সংলগ্ন এলাকায় অপুষ্টিতে ভোগা ১০০-১৫০ শিশুকে প্রতিদিন একটি করে ডিম দেওয়া হবে। সেই ডিম যাতে সস্তায় পাওয়া যায়, সেটা দেখতে রাজ্য প্রাণিসম্পদ দফতরকে অনুরোধ করেছে কমিশন। প্রকল্পে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশেরও।

অসীমবাবু বলেন, ‘‘অ্যাডভাইজ়রি না-মানলে যে কড়া পদক্ষেপ করা হবে, সেই বার্তা দিতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’এ দিন সাতটি মামলায় মোট ১৬ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান। তার মধ্যে আনন্দপুর ফর্টিসের বিরুদ্ধে একটি মামলায় রোগীর পরিজনকে এক লক্ষ টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। রোগীকে দামি ওষুধ দিতে হলে কী কারণে তা দেওয়া হচ্ছে, রোগীর পরিজনকে সেটা জানাতে বলেছিল কমিশন। একই ওষুধ যে বিভিন্ন নামে বিক্রি হয়, সে-কথা এবং তার দামের বিষয়টিও জানাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ওই রোগীর ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। প্যাথলজি টেস্ট বাবদ অনেক বেশি টাকা নেওয়ায় হাওড়ার এক বয়স্ক করোনা রোগীর এক লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে বলে কমিশন নির্দেশ দিয়েছে হাসপাতালকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন