উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশের দিনে স্কুলে হরিদয়াল রায়। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক
এক দিন আগে প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডের জেরে প্রধান শিক্ষক হরিদয়াল রায়কে সাসপেন্ড করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দ্বিতীয় ধাক্কা। গত বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার মেধা তালিকায় থাকা ময়নাগুড়ি সুভাষনগর হাইস্কুল এ বারে পিছনে পড়ে গিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, পাশই করতে পারেনি স্কুলের ২২ জন ছাত্র।
এমন ফলের জন্য প্রায় সকলেই আঙুল তুলছেন প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডের দিকে। সেই তালিকায় যেমন রয়েছেন ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবকেরা, তেমনই আছেন বেশ কিছু স্থানীয় মানুষও। তাঁরা বলছেন, ‘‘গত বছর প্রথম দশে দু’জন ছিল। তাদের হুড খোলা জিপে চাপিয়ে বিশাল শোভাযাত্রা বার করা হয়। পড়ুয়া ও অভিভাবকদের মিষ্টি খাওয়ানো হয়। ফাটানো হয় বাজি-পটকা। আর এ বারে দেখুন, সব কেমন চুপচাপ। সকলেই যেন হতাশ।’’
সেই হতাশা চেপে রাখেনি স্কুলের প্রথম সারির পড়ুয়া বা তাদের অভিভাবকেরা। এ বার স্কুল থেকে সর্বোচ্চ ৪৭৪ নম্বর পেয়েছে সুরঞ্জনা দাম। তার মা সংযুক্তা বলেন, ‘‘ইংরেজিতে খুব কম নম্বর পেয়েছে ও। যা আমাদের কাছে স্বাভাবিক বলে মনে হচ্ছে না। তাই আমরা ইংরেজির নম্বর নিয়ে আরটিআই করব।’’ ওই স্কুলের ছাত্র কাশীনাথ বর্মন ২০১৬ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় জলপাইগুড়ি জেলায়
দশের মধ্যে ছিল। সে এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে পেয়েছে ৪৫০। কাশীনাথের কথায়, ‘‘প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ডের জন্যই এত খারাপ ফল হয়েছে আমাদের। ওই ঘটনার প্রভাব পড়েছে স্কুলের উপরে।’’
২০১১ সালে প্রথম প্রচারে আসে সুভাষনগর হাইস্কুল। সে বার হরিদয়ালবাবুর ছেলে দীপাঞ্জন উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যের মধ্যে তৃতীয় হয়। ২০১৬ সালে ওই স্কুলের ছাত্র সঞ্জয় সরকার উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে দ্বিতীয় স্থান পায়। গত বছর চিন্ময় অধিকারী ও সুজয় মল্লিক যথাক্রমে চতুর্থ ও সপ্তম স্থান অর্জন করে।
হরিদয়ালবাবু অবশ্য মনে করেন ফল ভালই হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘স্কুলের ফল খুব একটা খারাপ হয়নি। কুড়ি জন ছাত্রছাত্রী ৭৫ শতাংশের উপর নম্বর পেয়েছে। তবে এটা ঠিক যে, মেধা তালিকায় কেউ জায়গা পায়নি।’’