প্রতিবন্ধী এক কিশোরীকে গণধর্ষণ করে ফেলে রাখা হয়েছিল মাঠে। সারা রাত সেখানে অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকার পরে সকালে জ্ঞান ফেরে। জানাজানি হয় ঘটনা।
২০১২ সালের সেই গণধর্ষণের মামলায় ঢোলাহাট থানার বাসিন্দা বাপি গায়েন এবং পরিমল খাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সোমবার কাকদ্বীপ এডিজে আদালতের বিচারক পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী দু’জনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন।
মামলার সরকারি আইনজীবী অমিতকুমার দাস এবং গুরুপদ দাস বলেন, ‘‘ঘটনার শিকার এমন এক কিশোরী, যে অনেক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে চলছে। তাই আদালতের কাছে দোষীদের কড়া সাজার দাবি জানিয়েছিলাম। সব পক্ষের বয়ান শুনে এই রায় দিয়েছেন এডিজে বিচারক পার্থপ্রতিম চক্রবর্তী।’’ আইনজীবীরা জানান, কারাদণ্ড ছাড়াও দু’জনের ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। ওই টাকা মেয়েটির পরিবারকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
পুলিশ জানায়, ঢোলাহাট থানা এলাকায় মায়ের সঙ্গে থাকত মেয়েটি। ২০১২ সালের ১৭ মে মাসে সন্ধ্যার দিকে পাশেই জ্যেঠুর বাড়িতে টিভি দেখতে যাচ্ছিল মেয়েটি। তাকে একলা পেয়ে পরিমল এবং বাপি মুখে রুমাল চাপা দিয়ে পাশের একটি নির্জন মাঠে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে।
কিছু দিন পরে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন মেয়ের মা। দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুরো মামলার বিচার চলেছে দোষীদের জেলবন্দি অবস্থায়। জানা গিয়েছে, দোষীরা স্থায়ী ভাবে কেউই সে রকম কাজকর্ম কিছু করত না। পরিমলের স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে।
দোষীদের এই সাজায় সন্তুষ্ট মেয়ের মা। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ দায়ের করার পর থেকে বেশ কয়েকবার আমাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। ওরা গ্রেফতার হওয়ার পরে পরিমলের মা মারধর করে আমার হাত ভেঙে দিয়েছিল। তারপর আর এলাকায় থাকতে পারিনি।’’
তবে থানায় এ সব নিয়ে পরে আর কোনও অভিযোগ করেনি মেয়েটির পরিবার। প্রায় তিন বছর তারা এলাকা ছাড়া। এ বিষয়ে ঢোলাহাট পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান কালীদাস কামার কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
দোষীদের পক্ষে আইনজীবী মানস দাস বলেন, ‘‘আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন জানাব।’’