প্রেমিকার টানেই খুন!

পুলিশ জানায়, দিন কয়েক আগে বাদুড়িয়ার আটঘরা থেকে বাবু গাজি (২৫) নামে এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। বাবুকে খুনের অভিযোগে শুক্রবার সকালে চাতরা থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁর বন্ধু আদহামকে। ত্রিকোণ প্রেমের জন্যই খুন বলে পুলিশের অনুমান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:৩৫
Share:

ধৃত: আদহাম

বন্ধুর দেহ উদ্ধারের পরেও তাকে সন্দেহ করেনি কেউ। সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু হঠাৎ প্রেমিকাকে নিয়ে পালানোর স্বপ্নই তাকে ধরিয়ে দিল পুলিশের হাতে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, দিন কয়েক আগে বাদুড়িয়ার আটঘরা থেকে বাবু গাজি (২৫) নামে এক যুবকের দেহ উদ্ধার হয়। বাবুকে খুনের অভিযোগে শুক্রবার সকালে চাতরা থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁর বন্ধু আদহামকে। ত্রিকোণ প্রেমের জন্যই খুন বলে পুলিশের অনুমান। বসিরহাটের এসিজেএম আদালতে আদহামকে তোলা হলে বিচারক ৪ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

দশ বছর বয়সে আদহাম নিজের বাবাকেও খুন করেছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে। তখন সে থাকত বাংলাদেশে। গ্রেফতারি এড়াতে এ দেশে পালিয়ে এসেছিল।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে নিখোঁজ হন বাদুড়িয়ার চাঁদপুর গ্রামের বাবু। পর দিন সকালে পাশেই একটি আমবাগানের মধ্যে তাঁর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় মানুষ। ময়না-তদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, বাবুকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে।

তদন্তে নেমে জানা যায়, বাবুর স্ত্রী অন্তসঃত্ত্বা। স্থানীয় এক কিশোরীর সঙ্গে বাবুর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কও ছিল। ওই কিশোরীকেই আবার ভালবাসে আদহাম।

আটঘরার ওই আমবাগানে মদ-জুয়ার ঠেক বসত। ঘটনার দিন বাবুকে ডেকে নিয়ে আমবাগানে যায় আদহাম। সেখানে বন্ধুকে মদ খাওয়ায়। বাবুকে বলে, ওই কিশোরীর সঙ্গে সম্পর্কে দাঁড়ি টানতে হবে। রাজি হননি বাবু। তাই নিয়ে তর্কাতর্কি শুরু হয়। পুলিশের দাবি, জেরায় আদহাম জানিয়েছে, দড়ি নিয়ে বাবুর গলায় পেঁচিয়ে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করে আদহাম। বাড়ি ফিরে ভাত খেয়ে শুয়ে পড়ে। বাবুর দেহ উদ্ধারের পরে এলাকার লোকজনের সঙ্গে ঘটনাস্থলেও গিয়েছিল সে। সন্দেহের তালিকায় যাতে তাকে কেউ না রাখে, সে জন্য গ্রাম ছেড়েও পালায়নি।

এ পর্যন্ত সব ঠিকঠাক ছিল। কিন্তু প্রেমিকাকে নিয়ে পালানোর ছক কষেই ধরা পড়ে গেল পেশায় দর্জি আদহাম। পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে বান্ধবীর বাড়িতে গিয়ে পালানোর কথা বলে আদহাম। মেয়েটি তাতে সাড়া দেয়নি। তাতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে আদহাম। বলে, ‘‘একটাকে যখন মারতে পেরেছি, তখন তোমাকে পেতে যত দূর যেতে হয় যাব।’’

প্রতিবেশীদের মুখে সেই কথা জানতে পেরে সন্দেহ হয় পুলিশের। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধরা হয় তাকে। পুলিশের দাবি, জেরায় বাবুকে খুনের কথা কবুল করে আদহাম। এরপরেই গ্রেফতার করা হয় তাকে। সে আরও জানিয়েছে, ছেলেবেলায় দেখত, বাবা মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে মাকে মারধর করছে। সেই রাগে এক দিন কাঠের বাটাম দিয়ে ঘা মেরে বাবাকেও মেরেছে সে। কিশোরীকে নিয়ে বাংলাদেশে পালানোর ছক কষেছিল ছেলেটি। বছর উনিশের আদহামের কথায়, ‘‘একবার এলাকা ছেড়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়তে পারলে এ বারও পুলিশ আমার হদিস পেত না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন