স্কুলগাড়ি দুর্ঘটনা এ বার ভাটপাড়ায়

ফের দুর্ঘটনায় স্কুলগাড়ি। এ বার ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের ঘোষপাড়া রোডের ভাটপাড়ায়। সোমবার সকালের এই ঘটনা আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল স্কুলে নিয়ে যাওয়ার ভাড়া গাড়িগুলির দুর্দশা এবং প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মৌরসিপাট্টা চালানোর ছবিটা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৬ ০১:৩১
Share:

দুর্ঘটনার পরে সেই স্কুলগাড়ি। — নিজস্ব চিত্র

ফের দুর্ঘটনায় স্কুলগাড়ি। এ বার ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের ঘোষপাড়া রোডের ভাটপাড়ায়। সোমবার সকালের এই ঘটনা আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল স্কুলে নিয়ে যাওয়ার ভাড়া গাড়িগুলির দুর্দশা এবং প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মৌরসিপাট্টা চালানোর ছবিটা।

Advertisement

কী হয়েছিল এ দিন সকালে?

পুলিশ জানিয়েছে, ব্যারাকপুরের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের পাঁচ ছাত্রকে নিয়ে সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ ঘোষপাড়া রোড দিয়ে ভাটপাড়া থেকে ব্যারাকপুরের দিকে যাচ্ছিল স্কুলগাড়িটি। বৃষ্টিতে এমনিতেই রাস্তা পিছল ছিল। স্কুলগাড়িটির চাকায় দেওয়া ছিল তাপ্পি। ফলে রাস্তা আঁকড়ে থাকার ক্ষমতা কম ছিল চাকার। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, ভাটপাড়ার রিলায়েন্স চটকলের কাছে উল্টো দিক থেকে আসা একটি ৮৫ নম্বর রুটের বাসের মুখোমুখি চলে আসে স্কুলগাড়িটি। বাস ও স্কুলগাড়ি, দু’টিরই গতি যথেষ্ট বেশি থাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে পারেনি কেউই। সংঘর্ষ হয় দু’টি গাড়ির।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, স্কুলগাড়ির সামনে বসা পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ইন্দ্রনীল সরকার, রক্তিম মান্না ও স্কুলগাড়িটির চালক তনয় দাস আহত হন। এর মধ্যে তনয়ের আঘাতই বেশি। মাথায় ও পায়ে চোট লেগেছে। তাঁকে প্রথমে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল ও পরে কল্যাণী জেএনএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।

এই ঘটনার পরে ওই এলাকার বাসিন্দারাই প্রশ্ন তুলেছেন ঘিঞ্জি ঘোষপাড়া রোডে প্রতিদিন পুরনো মারুতি ভ্যান বা টাটা সুমো-র মতো গাড়িগুলি পড়ুয়াদের স্কুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যবহার করা নিয়ে। ভাটপাড়ার বাসিন্দা স্কুল শিক্ষিকা নবনীতা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে ভাবে সন্তানের বেশি নম্বর পাওয়া নিয়ে চিন্তা করেন অভিভাবকেরা, বিপজ্জনক গাড়িতে তাদের স্কুলে পাঠানোর আগে যদি ভাবতেন, তবে হয়তো ছবিটা বদলাত।’’

লঝ্‌ঝড়ে গাড়ি, তাপ্পি দেওয়া টায়ার। ব্রেক ও অন্য যন্ত্রাংশ নিয়মমাফিক পরীক্ষা না করা, এটাই দস্তুর স্কুল বা অভিভাবকদের তরফ থেকে ভাড়া করা অধিকাংশ স্কুলগাড়ির। এ নিয়ে যতই নিয়ম-নীতি, হইচই হোক না কেন, তোয়াক্কার বালাই নেই। পুলিশ কমিশনার তন্ময় রায়চৌধুরী অবশ্য এ দিন সকালে ভাটপাড়ায় স্কুলগাড়ি দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘স্কুলগাড়িগুলির অবস্থা জানতে আমরা ইতিমধ্যেই স্কুলগুলিতে নোটিস পাঠিয়েছি। মঙ্গলবার থেকেই বিভিন্ন স্কুলগাড়ির অবস্থা খতিয়ে দেখতে বিশেষ অভিযান শুরু করার কথা। তা হবে। নিয়ম ভেঙে যদি স্কুলগাড়ি চলে, তবে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’

সোমবার সকালের ঘটনার পরে ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক পীযূষ গোস্বামীও মহকুমার পরিবহণ আধিকারিকদের চলতি সপ্তাহেই স্কুলগাড়িগুলির সিএফ খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন