তদন্ত: নিজস্ব চিত্র
বিষে ভরা ঝাঁকা। তার মধ্যেই রয়েছে তেল চকচকে উচ্ছে, করলা, পটল, ঢ্যাঁড়শ, বেগুন। টাটকা আনাজ সস্তাও বেশ। দরদাম করলে বিক্রেতার অনুরোধ, ‘‘মাঠ থেকে তুলে এনেছি টাটকা আনাজ। দাম কমাতে বলবেন না।’’ সেই টাটকা আনাজের রহস্য বেরিয়ে পড়ল রবিবার। ব্যারাকপুর তালপুকুর বাজারের কয়েক জন বিক্রেতার ঝাঁকা বোঝাই আনাজের ভিতরে লুকোনো স্প্রে করার যন্ত্র আর সবুজ, বেগুনি এবং মেটে রঙের রাসায়নিক ডিব্বার সন্ধান পেলেন ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ ও টিটাগড় থানার পুলিশ। এ দিনের যৌথ অভিযানে চার আনাজ বিক্রেতাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম সুবোধ সরকার, শান্ত মণ্ডল, চন্দ্রা সাউ ও দিব্যেন্দু কুণ্ডু। ধৃতদের থেকে রঙিন আনাজও আটক হয়েছে।
ব্যারাকপুরের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (১) কে কান্নান বলেন, ‘‘কিছু দিন ধরেই খবর ছিল, ব্যারাকপুরের কয়েকটি বাজারে রং করা আনাজ বিক্রি হচ্ছে। হানা দিয়ে ওই বিক্রেতাদের ধরা হয়েছে। বাজার কমিটিগুলিকে ডেকে সাবধান করে দেওয়া হয়েছে। ভেজাল খাবারের পাশাপাশি রাসায়নিক রং করা আনাজ ধরার অভিযান চলবে।’’ ধৃত বিক্রেতাদের দাবি, শিয়ালদহের কোলে মার্কেট থেকে পাইকারি দরে আনাজ কিনে ব্যারাকপুরে বিক্রি করতেন তাঁরা। গরম, বৃষ্টি আর আর্দ্রতার তারতম্যে আনাজ নষ্টের আশঙ্কায় কোলে মার্কেটের পাইকারি বিক্রেতাদের থেকে এই রং করা সবজি আনতেন। চন্দ্রা সাউ এর দাবি, ‘‘এত কিছু জানি না। রঙের মতো যেটা দেওয়া হতো সেটা আনাজ ঠিক রাখার ওষুধ বলেই জানতাম।’’ তদন্তকারীরা এ দিন সকাল থেকেই বাজার ঘুরে আনাজ বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। তদন্তকারীদের কথায়, রাঙা আলু আর আলুতে সব থেকে বেশি রং ব্যবহার করা হয়েছে। গরম জলে রং করা আনাজ কিছু ক্ষণ ডুবিয়ে রাখলেও রং উঠছে না।
প্রসঙ্গত, নদিয়ার চাকদহে এই আনাজ রং করার ঘাঁটির খোঁজ পায় পুলিশ। পুলিশ-কর্তারা জানান, ব্যারাকপুর বারাসত রোডের ধারে নীলগঞ্জ হাটেও এমনই এক আনাজ রং করার ঘাঁটির খোঁজ মিলেছে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে সেখানে তল্লাশি চালানোর কথাও জানানো হয়েছে।