৯০ বছরের মা’কে ভাড়া করা গুন্ডা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দিল ছেলে

দুপুর দেড়টা। একটি গাড়ি থেকে টেনে এক বৃদ্ধাকে নামানোর চেষ্টা চলছে। তা দেখে পথচলতি মানুষ দাঁড়িয়ে পড়েন রাস্তায়। গাড়ি থেকে জোর করে বছর নব্বইয়ের ওই বৃদ্ধাকে নামিয়ে দেওয়া হয়। ছুঁড়ে ফেলা হয় তিনটি জামাকাপড়ের পুটুলি। এরপরেই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যায় আগন্তুকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বসিরহাট শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৬ ০৩:০০
Share:

অবলাদেবীকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে হাসপাতালে। ছবি: নির্মল বসু।

দুপুর দেড়টা। একটি গাড়ি থেকে টেনে এক বৃদ্ধাকে নামানোর চেষ্টা চলছে। তা দেখে পথচলতি মানুষ দাঁড়িয়ে পড়েন রাস্তায়। গাড়ি থেকে জোর করে বছর নব্বইয়ের ওই বৃদ্ধাকে নামিয়ে দেওয়া হয়। ছুঁড়ে ফেলা হয় তিনটি জামাকাপড়ের পুটুলি। এরপরেই গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যায় আগন্তুকেরা।

Advertisement

মঙ্গলবার দুপুরে বসিরহাটের আবুদৈয়ান রোডে এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার মানুষ। পুলিশ জানিয়েছে, ওই বৃদ্ধার নাম অবলা আচার্য। তিনি বনগাঁর আরামডাঙা গ্রামে বড় ছেলে প্রভাত আচার্যের কাছে থাকতেন। বড় ছেলে ও বৌমা তাঁকে বাড়ি থেকে বার করে দেয় বলে অভিযোগ। এক মহিলা-সহ দু’জনের সঙ্গে তাঁকে একটি গাড়িতে তুলে বসিরহাটে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে ওই বৃদ্ধা পুলিশকে জানিয়েছেন। তাঁর ছেলের ভাড়া করা দুষ্কৃতীরা তাঁকে এ ভাবে রাস্তায় ফেলে দেয় বলে অভিযোগ। বসিরহাট থানার আইসি দেবাশিস চক্রবর্তীর নেতৃত্ব একটি দল ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে।

পুলিশ জানিয়েছে, কেন একজন বৃদ্ধাকে রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হল? এ বিষয়ে জানতে মহিলার ছেলে ও মেয়েদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। তারপরেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Advertisement

যাঁর বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যাওয়া হয় অবলাদেবীকে, সেই মুনমুন বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে ওই বৃদ্ধার আত্মীয়। মুনমুনদেবীর কথায়, ‘‘আমার বাড়িতে কেউ নেই। সকলেই বেঙ্গালুরুতে। সন্তানকে নিয়ে আছি। ওই বৃদ্ধাকে বাড়ির সামনের রাস্তায় ফেলে দিয়ে ওরা আমার কাছে ৩ হাজার টাকা চায়। তা দিতে অস্বীকার করায় আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে পালায়।’’

বৃদ্ধার সন্তানদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান জয়ন্ত কুণ্ডু, কল্পনা বিশ্বাস, সুবীর সরকারদের মতো স্থানীয় মানুষজন।

এ দিন হাসপাতালের পথে বৃদ্ধা বলেন, ‘‘সাত সন্তান থাকায় স্বামীর মৃত্যু পরে মনে হয়েছিল, আমার কখনও কোনও অসুবিধাই হবে না। কিন্তু এখন বুঝতে পারছি, কত ভুল ভেবেছিলাম।’’ বৃদ্ধার আফসোস, ছেলেদের বাবা বিপুল টাকা-পয়সা রেখে গিয়েছেন। তারপরেও ছেলেদের সংসারে থাকতে গিয়ে এই হাল হয়েছে তাঁর। অবলাদেবীর দুই ছেলের মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন