সিঁধ কেটে খুনের চেষ্টা

সূরজের বাড়ি নদিয়ার হাঁসখালি থানার বগুলায়। সিঁধ কেটে সে মহিলার ঘরে ঢুকেছিল বলে অভিযোগ। সিঁধ কেটে ঘরে ঢোকার ঘটনা বহু দিন পরে ঘটল বলে জানিয়েছেন এলাকার প্রবীণ মানুষজন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাগদা শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৫০
Share:

এই-পথেই: কৌতূহলী পড়শি। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

মহিলাকে কুপিয়ে খুনের চেষ্টার ঘটনা ঘটল বাগদার হাদিখালি এলাকায়। জখম প্রৌঢ়াকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতার নীলরতন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, বছর পঞ্চাশের জখম মহিলার নাম অর্চনা মণ্ডল। তাঁর মাথায়-মুখে-হাতে ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। অর্চনাদেবীর মেয়ে পুলিশের কাছে সূরজ সিকদার নামে এক যুবকের নামে অভিযোগ জানিয়েছেন। পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘সূরজ ওই মহিলার পূর্ব পরিচিত। কিন্তু কেন সে ঘরে ঢুকেছিল, তা স্পষ্ট নয়। খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে।’’

সূরজের বাড়ি নদিয়ার হাঁসখালি থানার বগুলায়। সিঁধ কেটে সে মহিলার ঘরে ঢুকেছিল বলে অভিযোগ। সিঁধ কেটে ঘরে ঢোকার ঘটনা বহু দিন পরে ঘটল বলে জানিয়েছেন এলাকার প্রবীণ মানুষজন।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অর্চনাদেবী বাড়িতে একাই থাকতেন। স্বামী মারা গিয়েছেন। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বিড়ি বেঁধে সংসার চালান অর্চনা। সোমবার রাত ২টো নাগাদ তাঁর চিৎকারে প্রতিবেশীরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। পাশেই থাকেন অর্চনাদেবীর আত্মীয় সুকান্ত মণ্ডল। তিনিই প্রথম পৌঁছন। সুকান্তর কথায়, ‘‘অন্ধকারের মধ্যে দেখি, এক যুবক পালিয়ে যাচ্ছে। দৌড়েও তাকে ধরতে পারিনি।’’ হাসপাতালে অর্চনা বলেন, ‘‘কেন আমার উপরে হামলা হল, জানি না।’’

প্রতিবেশীরা এসে কাঠের দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে অর্চনাদেবীকে উদ্ধার করেন। সুলতা রায় নামে এক পড়শি বলেন, ‘‘ওঁর পোশাক আগোছালো ছিল। সারা শরীরে কোপানোর দাগ। রক্তে ভেসে যাচ্ছিল বিছানা।’’

বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় অর্চনাকে। পরে পাঠানো হয় কলকাতায়।

মঙ্গলবার সকালে বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, ঘরের পিছনে মাটি কেটে সিঁধ বানানো হয়েছে। সেই সরু গর্ত দিয়েই ঘরে ঢুকেছিল দুষ্কৃতী।

সিঁধ কাটা কী?

এক কথায়, চুরির পদ্ধতি। ইদানীং সিঁধ কেটে চুরির খবর তেমন কানে আসে না। আগে মূলত মাটির বাড়িতে সিঁধ কেটে ঢুকত চোর। সিঁধ কাঠি দিয়ে মাটি খুঁড়ে সরু একফালি গর্ত বানিয়ে ঢুকত চোর। শোনা যায়, সরু গর্ত দিয়ে ঘরে ঢোকার আগে নাকি গায়ে তেল মেখে নিত চোর। সিঁধ কাঠি তৈরি নিয়েও নানা কাহিনী শোনা যায়। কামারের দোকানের সামনে একটি লোহার শিক আর টাকা রেখে যেত চোর। কামারও সেই লোহার শিক থেকে ‘সিঁধ কাঠি’ বানিয়ে আবার রেখে দিত একই জায়গায়। রাতের অন্ধকারে কাঠি নিয়ে যেত চোর। ক্রেতা-বিক্রেতা কেউ মুখোমুখি হত না। বাংলা সাহিত্যে নানা গল্প-উপন্যাসে এসেছে সিঁধকাঠির প্রসঙ্গ। তার মধ্যে মনোজ বসুর উপন্যাস ‘নিশিকুটুম্ব’, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘চোরের বৌ’ গল্পে সিঁধ কাটার নানা অনুষঙ্গ পাওয়া যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন